|
|
|
|
পুকুর সংস্কার করতে গিয়ে বিপত্তি গ্রামে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • পুড়শুড়া |
একশো দিনের প্রকল্পে পুকুর সংস্কারের কারিগরী অনুমোদন ছিল ৩ লক্ষ টাকার কিছু বেশি। কিন্তু সেই ‘সংস্কার’ এমনই হল, পুকুর পাড়ে নির্মিত দু’টি পাকা বাড়ির বিপজ্জনক দশা হয়। সেই বাড়ি দু’টি বাঁচাতে খরচ হচ্ছে প্রায় ১৪ লক্ষ টাকা! পঞ্চায়েতের কার্যত ‘ঢাকের দায়ে মনসা বিক্রি’র দশা এমনটাই বলছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
ঘটনাটি পুড়শুড়ার শ্রীরামপুর পঞ্চায়েতের ধাপধাড়া গ্রামের। পঞ্চায়েতটি সিপিএম পরিচালিত। যদিও পুকুর সংস্কারের কাজে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের ‘খবরদারি’র জন্যই এই পরিস্থিতি বলে অভিযোগ উঠেছে। সে কথা অবশ্য মানতে চাননি পঞ্চায়েতের প্রধান দীনবন্ধু পাকিরা। অভিযোগ অস্বীকার করে ‘দায়’ পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষের ঘাড়েই চাপিয়েছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। যে দু’টি বাড়ি বিপজ্জনক অবস্থায় পৌঁছেছিল, তার মালিক কেনারাম সামন্ত ও সুকুমার সামন্তেরা ব্লক প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানান।
পুড়শুড়ার বিডিও সম্রাট মণ্ডল বলেন, “কাজ করিয়েছেন পঞ্চায়েত প্রধান। ওই পঞ্চায়েতের নির্মাণ সহায়কেরই প্রকল্প রচনা করার কথা। কেন এমন পরিকল্পনাহীন ভাবে কাজ হল, তা নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। কেউ দোষী প্রমাণিত হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে আগে জরুরি ভিত্তিতে বাড়িগুলি রক্ষা করা দরকার। প্রধানকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।”
এ দিকে, ‘জরুরি ভিত্তিতে’ বাড়ি সংস্কারের কাজে পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে স্বজনপোষণের অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন গ্রামের মানুষ। পঞ্চায়েত প্রধান তাঁর ‘পছন্দের’ ঠিকাদারকে কাজ পাইয়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগ। টেন্ডারের পদ্ধতি নিয়ে তদন্ত হচ্ছে বলে জানান বিডিও।
ধাপধাড়া গ্রামে দেড়শো ফুট লম্বা, ১৩০ ফুট চওড়া পুকুরটি সংস্কারের কাজ শুরু হয় গত বছরের শেষের দিকে। অভিযোগ, স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের ‘চাপে’ প্রয়োজনীয় সংখ্যক শ্রমিকের পরিবর্তে গ্রামের সমস্ত জবকার্ড হোল্ডারকে কাজে লাগানো হয়। সেই ‘হঠকারিতার’ ফলেই এই বিপত্তি বলে প্রশাসনের একাংশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর। যদিও স্থানীয় তৃণমূল নেতা বলরাম হাজরা সে কথা মানতে চাননি। তাঁর বক্তব্য, “ওই কাজে আমাদের কোনও খবরদারি ছিল না।” তাঁর পাল্টা যুক্তি, “পঞ্চায়েতের নির্মাণ সহায়ক বা প্রধান বিষয়টি দেখেননি কেন?”
নির্মাণ সহায়ক সুবীর মজুমদারের দাবি, “কোথাও কোনও পরিকল্পনার অভাব ছিল না। বেআইনিও কিছু হয়নি। পুকুরটির উত্তর পাড়ে মাটির নীচে ছাই দিয়ে ভরাট করা ছিল। সে কারণেই পাড় ধসে গিয়েছে।” অন্য দিকে, দীনবন্ধুবাবু বলেন, “অবৈধ কিছু করা হয়নি। পুকুর পাড়ের নীচে ছাই ছিল। সেটি পরিকল্পনার সময়ে জানা ছিল না।” কিন্তু যখন মাটির খুঁড়ে ছাই বের হতে শুরু করল, তখনও কেন কাটার কাজ চালিয়ে যাওয়া হল? প্রধান বলেন, “সে জন্য সুপারভাইজারকে শো-কজ করা হয়েছে।” জরুরি ভিত্তিতে টেন্ডার ডেকে কাজ করানোর মধ্যেও কোথাও ‘অনিয়ম’ নেই বলে তাঁর দাবি। |
|
|
|
|
|