দুর্ভোগ আন্দুলে: ফাঁক তিন রেলের সমন্বয়ে আড়াই ঘণ্টা রোদে দাঁড়িয়ে
দুরন্ত, মিলল না খাবারও
কস্মিক যান্ত্রিক গোলযোগ নয়। দুর্ঘটনাও নয়। স্রেফ তিন রেলের সমন্বয়ের অভাবে আড়াই ঘণ্টার জন্য থমকে গেল দুরন্ত এক্সপ্রেসের মতো ‘নন-স্টপ’ ট্রেনও। জ্যৈষ্ঠের দুঃসহ গরমে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকা পুরী দুরন্ত এক্সপ্রেসে ভুগলেন যাত্রীরা। ওই ট্রেনের যাত্রীদের অভিযোগ, রবিবার আন্দুল স্টেশনে প্রায় আড়াই ঘণ্টা আটকে থাকার যন্ত্রণা তো ছিলই। তার উপরে সকালের খাবারটুকুও দেওয়া হয়নি।
এই ভোগান্তি কেন?
রেল সূত্রের খবর, এর মূলে আছে একটি ‘মেগা ব্লক’ বা বড় ধরনের মেরামতি। পুরী দুরন্তের সফরের সঙ্গে পূর্ব, পূর্ব উপকূল এবং দক্ষিণ-পূর্ব রেল যুক্ত এবং তিন রেলই ওই মেগা-মেরামতির কথা জানত বলে জানিয়েছেন রেল-কর্তৃপক্ষ। তা হলে যাত্রীদের ভুগতে হল কেন?
মেরামতি বা অন্য জরুরি কারণে কোনও লাইনে দীর্ঘ ক্ষণ ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখা হলে সেটাকেই বলা হয় ‘মেগা ব্লক’। রেল জানাচ্ছে, আন্দুল-ডানকুনি লাইনে ‘মেগা ব্লক’ নেওয়া ছিল শনিবার রাত থেকে রবিবার সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত। তাই পুরী থেকে দুরন্ত এক্সপ্রেস ছাড়ার নির্ধারিত সময় শনিবার রাত ৮টা থেকে পাল্টে রাত সাড়ে ১০টা করা হয়েছিল। তা সত্ত্বেও ট্রেনটি এ দিনের নির্দিষ্ট সময়ের আগেই আন্দুলে পৌঁছে যায়। আর তখন থেকেই শুরু হয় ভোগান্তি। আন্দুল থেকে ট্রেনটির ভট্টনগর-ডানকুনি হয়ে শিয়ালদহে পৌঁছনোর কথা। কিন্তু তখনও লাইনে কাজ চলায় দুরন্তকে আন্দুলেই দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। ওই ট্রেনের সব কামরা বাতানুকূল নয়। ফলে দুঃসহ দহনে ট্রেনের মধ্যে প্রায় আড়াই ঘণ্টা আটকে থাকায় যাত্রীদের নাভিশ্বাস ওঠার জোগাড় হয়। তার উপর খাবারও মেলেনি।
খাবারের ব্যবস্থা হয়নি কেন?
রেল সূত্রের খবর, ওই ট্রেন পূর্ব উপকূল রেল হয়ে খড়্গপুরে পৌঁছে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের আওতায় আসে। সেখান থেকে মেন লাইন দিয়ে আন্দুল। তার পরে পূর্ব রেলের হাওড়া ডিভিশনের ভট্টনগর থেকে ডানকুনি হয়ে শিয়ালদহে পৌঁছয়। এমনিতে ট্রেনটির শিয়ালদহে পৌঁছনোর কথা সকাল ৮টা নাগাদ। তাই সকালের খাবার দেওয়ার কথা নয়। কিন্তু এ দিন ট্রেনটি দেরিতে শিয়ালদহে পৌঁছবে জানা সত্ত্বেও খাবারের ব্যবস্থা করা হল না কেন, সেই প্রশ্ন তুলেছেন যাত্রীরা। তাঁদের আরও প্রশ্ন, ট্রেনটিকে শুধু এ দিনের জন্য হাওড়ায় নিয়ে যাওয়া হল না কেন? রেলের তরফে সন্তোষজনক জবাব দেননি কেউ। যাত্রীদের অভিযোগ, বিভিন্ন রেলের নিজেদের মধ্যে সমন্বয় না-থাকার জন্যই এই অবস্থা। রেলকর্তাদের একাংশও যাত্রীদের বক্তব্যে সায় দিয়ে বলেছেন, ট্রেনটিকে অনায়াসে হাওড়ায় নিয়ে যাওয়া যেত। তাতে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই যাত্রীরা পৌঁছে যেতেন।
পূর্ব রেলের কর্তাদের বক্তব্য, হাওড়া ডিভিশনের পক্ষ থেকে ‘মেগা ব্লক’ নিয়ে ওই লাইনে কাজ চলছিল। ওই কাজের জন্য ট্রেনের দেরির হওয়ার কথা আগে থেকে বিজ্ঞাপন দিয়ে জানানোও হয়েছিল। ওই কাজের জন্যই পুরী থেকে ওই ট্রেন ছাড়ার সময় পরিবর্তন করা হয়। কিন্তু ছাড়ার সময় পরিবর্তনের পরেও যাত্রীদের কেন মাঝপথে আড়াই ঘণ্টা ঠায় দাঁড়িয়ে দুর্ভোগ পোয়াতে হল, কেনই বা যাত্রীরা খাবার পেলেন না, সেই ব্যাপারে ওই রেলের কর্তারা নিরুত্তর। শিয়ালদহ-পুরী দুরন্ত মূলত পূর্ব রেলের ট্রেন বলে এই ঘটনা নিয়ে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের কর্তারা বিশেষ কিছু বলতে চাননি। তাঁদের বক্তব্য, পূর্ব রেল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত ওই লাইনে ট্রেন চালাতে চায়নি। তাই দুরন্তকে আন্দুলেই দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছিল। আর পূর্ব উপকূল রেল শুধু অভিযোগ শুনে গিয়েছে। মন্তব্য করেনি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.