পরিষেবা নিয়ে যাত্রীদের বিস্তর নালিশ। তার উপরে অভিযোগ, প্রত্যন্ত এলাকায় বিমান চালানোর জন্য ভর্তুকি নিয়ে লাভজনক রুটে বিমান চালানোর দিকেই তাদের নজর। এই সব কারণে গত ডিসেম্বরে এয়ার ইন্ডিয়া-র সহযোগী অ্যালায়েন্স এয়ারের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করে দিয়েছে নর্থ-ইস্ট কাউন্সিল। এ বার কাউন্সিলকে খুশি করে ফের চুক্তি করে ভর্তুকির টাকা ফিরে পেতে গুয়াহাটিতে ঘাঁটি তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে অ্যালায়েন্স। পরিষেবার মান বাড়াতেও নেওয়া হচ্ছে নানা পদক্ষেপ।
যাত্রী পিছু ধার্য করা ১৩ টাকায় একটি কেক, একটি স্যান্ডুইচ ও দু’টি বিস্কুট দিতে গিয়ে খাবারের মান ঠেকেছে তলানিতে। তার উপরে হামেশাই বসে যায় মান্ধাতা আমলের বিমান। রোজই প্রায় বাতিল করতে হচ্ছে কোনও না কোনও রুটের উড়ান। সমস্যায় পড়ছেন যাত্রীরা। নর্থ-ইস্ট কাউন্সিলের বক্তব্য, তাদের কাছ থেকে অনুদান নিয়ে অলাভজনক রুটে উড়ান চালানোর কথা অ্যালায়েন্সের। অথচ সেই টাকায় কলকাতা-গুয়াহাটির মতো রুটেও তারা উড়ান চালাচ্ছিল। নর্থ-ইস্ট কাউন্সিলের সচিব ইউ কে সাংমা দিল্লি থেকে ফোনে বলেন, “অত্যন্ত খারাপ পরিষেবার জন্য ওই অনুদান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তা ছাড়া, অনুদানের টাকা নিয়ে ওরা কলকাতা-গুয়াহাটির মতো লাভজনক রুটেও উড়ান চালাচ্ছিল। দশ বছর ধরে আমরা বারণ করে এলেও শোনেনি।” ২০১১-র ডিসেম্বর থেকে তাই চুক্তি বাতিল করা হয়েছে।
এই চুক্তি বাতিলের জন্য বছরে ৬০ কোটি টাকা হারাতে চলেছে অ্যালায়েন্স বিমানসংস্থা। এয়ার ইন্ডিয়ার আর্থিক অবস্থা বেশ খারাপ। অ্যালায়েন্স-ও লোকসানে চলছে। এই অবস্থায় বছরে ৬০ কোটি টাকার অনুদান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মাথায় হাত কর্তাদের। নর্থ-ইস্ট কাউন্সিল-কে খুশি করে অনুদান ফিরে পেতে তাই তড়িঘড়ি গুয়াহাটিতে ঘাঁটি (হাব) বানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে অ্যালায়েন্স এয়ার। সংস্থা সূত্রের খবর, জুন মাসের মাঝামাঝি নাগাদ গুয়াহাটি থেকে চালু হবে সেই ঘাঁটি।
কলকাতা-সহ বেশ কিছু শহর থেকে ছোট ছোট রুটে ছোট বিমান চালায় অ্যালায়েন্স। ঠিক হয়েছে, এ বার গুয়াহাটি থেকে আগরতলা, আইজল, ইম্ফল, জোরহাট, ডিমাপুর, লীলাবাড়িতে উড়ান চালানো হবে। আর অ্যালায়েন্সের বদলে কলকাতা ও গুয়াহাটি রুটে বিমান চালাবে এয়ার ইন্ডিয়া। তবে কলকাতা থেকে উত্তর-পূর্ব ভারতের অন্য শহরে অ্যালায়েন্সের উড়ান নিয়মিত চলবে।
সংস্থা সূত্রের খবর, ঘাঁটি বানানোর জন্য ইতিমধ্যেই গুয়াহাটিতে সাত জন বিমানসেবিকা নিয়োগ করা হয়েছে। কলকাতা থেকে পাঠানো হচ্ছে পাইলটদের। ঠিক হয়েছে, কলকাতায় থাকা চারটি এটিআর বিমানের মধ্যে দু’টি পাঠিয়ে দেওয়া হবে গুয়াহাটিতে। এ বার থেকে রাতে সেই বিমান দু’টি গুয়াহাটিতেই থাকবে। দিল্লি থেকে একটি আধুনিক ছোট সিআরজে বিমানও নিয়ে যাওয়া হবে সেখানে। এই ধরনের বিমান সারানোর জন্য সেখানে একটি ওয়ার্কশপ তৈরির পরিকল্পনাও করা হচ্ছে। |