মমতাকে নিয়েই চলতে চায় কেন্দ্র, মত খুরশিদের
রাজ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের এক বছর পূর্ণ হওয়ার দু’দিন পরেই তিন বছরে পা রাখতে চলেছে ইউপিএ-সরকার। আগামিদিনেও ইউপিএ তথা কংগ্রেস নেতৃত্ব যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সঙ্গে নিয়েই চলতে চায়, তৃতীয় বর্ষপূর্তির প্রাক্কালে আজ তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন সলমন খুরশিদ। কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রীর কথায়, “আমরা তাঁকে সহকর্মী ও সহযোগী হিসেবে নিয়ে চলারই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”
গত এক বছরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আপত্তিতেই কেন্দ্রীয় সরকারকে বহু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত স্থগিত রাখতে হয়েছে। বাংলাদেশের সঙ্গে তিস্তা চুক্তি যেমন রয়েছে, তেমনই রয়েছে বহু ব্র্যান্ডের খুচরো ব্যবসায় বিদেশি বিনিয়োগের ছাড়পত্র। কলকাতায় বসে মমতাই কেন্দ্রীয় সরকারকে নিয়ন্ত্রণ করছেন কি না, সেই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। ইউপিএ-র প্রধান শরিক হিসেবে মমতার হাতেই যে কার্যত কেন্দ্রের চাবিকাঠি রয়েছে, তা নিয়েও বিরোধীদের সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারকে। বিরোধীদের যুক্তি, ইউপিএ-র ভরকেন্দ্র যে এখন দিল্লি থেকে কলকাতায় সরে গিয়েছে, মার্কিন বিদেশসচিব হিলারি ক্লিনটনের প্রথমে মমতার সঙ্গে দেখা করতে যাওয়াতেই তার প্রমাণ।
কিন্তু খুরশিদের দাবি, ইউপিএ-র সিদ্ধান্তে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মোটেই ‘ভেটো’ প্রয়োগ করেন না। তাঁর বক্তব্য, “আমরা তাঁর মতামতকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিই।....আপনাদের জানা নেই, আমাদের সম্পর্ক কতটা ভাল।” রাজ্য সরকারের প্রধান হিসেবেও মমতার ভূমিকাকে মনমোহন সিংহের সরকার যে যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছে, তা-ও স্পষ্ট করে দিয়েছেন খুরশিদ। তিনি বলেন, “গোটা দেশের জন্য পশ্চিমবঙ্গে মমতার ভূমিকা খুব গুরুত্বপূর্ণ। বাম শাসনের পরে মমতা পশ্চিমবঙ্গকে নতুন করে গড়ে তুলছেন। তিনি যে ভাবে চান, সেই ভাবে পশ্চিমবঙ্গের পুনর্গঠনের অধিকার তাঁর রয়েছে। আমাদেরও সেই অধিকারকে সম্মান জানাতে হবে।” হিলারির প্রথমে মমতার সঙ্গে বৈঠক করতে যাওয়ার মধ্যেও অস্বাভাবিক কিছু আছে বলে মানতে নারাজ খুরশিদ। তাঁর যুক্তি, “হিলারি যদি মনে করেন মমতার মতামত নেওয়ারও প্রয়োজন রয়েছে, তাতে দোষের কী রয়েছে!”
রাজনৈতিক বাস্তবতা মেনেই রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কংগ্রেসের প্রয়োজন। কংগ্রেস নেতাদের ব্যাখ্যা, অঙ্কের হিসেবে হয়তো তৃণমূলকে বাদ দিয়ে অন্যান্য সহযোগী দল ও বামেদের সমর্থন নিয়ে রাষ্ট্রপতি পদে কংগ্রেস প্রার্থীকে জিতিয়ে আনা সম্ভব। কিন্তু তা হলে ইউপিএ ভেঙে যাবে। ২০১৪ সালের এমনিতেই সমস্যাসঙ্কুল পরিস্থিতিতে সেই ঝুঁকি নিতে চায় না কংগ্রেস। তাই মমতার মতামতকে গুরুত্ব দিয়েই যে মনমোহন-সরকার খুচরো ব্যবসায় বিদেশি বিনিয়োগের মতো বিষয়ে ঐকমত্য গড়ে তোলার চেষ্টা করছেন, তা-ও জানিয়েছেন সলমন খুরশিদ। আইনমন্ত্রীর বক্তব্য, খুচরো ব্যবসায় বিদেশি বিনিয়োগ দেশের জন্যই ভাল। কিন্তু এই ধরনের সিদ্ধান্ত দ্রুত রূপায়ণের চেষ্টা হলেও তাতে দেরি হচ্ছে। সেটাই বাস্তব।
কিন্তু এ জন্য মনমোহন সিংহকে ‘দুর্বল প্রধানমন্ত্রী’ হিসেবে চিহ্নিত করার কোনও যুক্তি নেই বলে খুরশিদের দাবি। সরকার যখন চাপের মধ্যে রয়েছে, তখন মনমোহন সিংহই যোগ্যতমব্যক্তি। ১৯৯১ সালে অর্থনৈতিক সঙ্কটকালেও তিনিই পথ দেখিয়েছিলেন। তাঁর যুক্তি, “মনমোহন সিংহ চিন্তাশীল ও দার্শনিক ভাবে নেতৃত্ব দেন। মন্ত্রিসভার বৈঠকেও তিনিই নেতৃত্ব দেন। কিছু ব্যক্তি নিজের কাজকর্মের কৃতিত্ব নিতে চান না।” খুরশিদের ব্যাখ্যা, যদি কোনও কর্মসূচি নিয়ে কোনও শরিকের আপত্তি থাকে, তা শুধু প্রধানমন্ত্রীর জন্য নয়, গোটা সরকারের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.