নিউ গড়িয়া সমবায় আবাসনের নির্বাচনে জিতে গেল রঙ্গচিত্র-কাণ্ড খ্যাত অম্বিকেশ মহাপাত্রের প্যানেল।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অম্বিকেশবাবু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রাক্তন ও বর্তমান রেলমন্ত্রী যথাক্রমে দীনেশ ত্রিবেদী এবং মুকুল রায়কে কেন্দ্র করে বানানো একটি রঙ্গচিত্র ওই সমবায় আবাসনেরই মেল অ্যাড্রেস থেকে ফরওয়ার্ড করার ‘অপরাধে’ তৃণমূল কর্মীদের হাতে প্রহৃত হন। ওই ‘অপরাধে’ পুলিশ তাঁকে গ্রেফতারও করে। পরে অবশ্য তিনি ছাড়া পান। ঘটনার পর থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলে আসছেন, অম্বিকেশবাবু কোনও ‘কার্টুন’ ফরওয়ার্ড করেননি। তিনি মুখ্যমন্ত্রী এবং প্রাক্তন ও বর্তমান রেলমন্ত্রীর পক্ষে অবমাননাকর ‘ডিকম্পোজড’ ছবি পাঠিয়েছেন। এটা ‘সাইবার অপরাধ’। অম্বিকেশ সিপিএম কর্মী বলেই এই কাণ্ড করেছেন। এই ঘটনার জেরে বিতর্ক এখনও অব্যাহত। তার মধ্যেই অম্বিকেশবাবুর প্যানেলের জয় ‘তাৎপর্যপূর্ণ’।
রবিবার ওই আবাসনে ভোট হয়। মোট আসন ছিল ন’টি। তার মধ্যে আটটি আসনেই জিতে যান অম্বিকেশবাবুর প্যানেলের প্রার্থীরা। অম্বিকেশবাবু নিজে পঞ্চম স্থান পান। একটি আসনে জেতেন প্রতিদ্বন্দ্বী শান্তনু বসুর প্যানেলের প্রার্থী। ওই আবাসনে মোট ভোটার ৫৫৮। তার মধ্যে ৪১৬ জন ভোট দিয়েছেন। আটটি ভোট বাতিল হয়েছে। |
আগের বার ওই আবাসনের ভোটে ছ’টি আসন ছিল।
চারটি আসনে জিতেছিল অম্বিকেশবাবুর প্যানেল। প্রসঙ্গত, শান্তনুবাবু আগে ওই সমবায়ের চেয়ারম্যান ছিলেন।
পরে তাঁকে সরিয়ে প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। তারও পরে ভোটে জিতে অম্বিকেশবাবুদের প্যানেল ক্ষমতাসীন হয়। এ বারও অম্বিকেশবাবুর পছন্দের প্যানেলই জিতল। ভোটের পরে অম্বিকেশবাবু বলেন, “আমরা আবাসনে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলাম। তাই মানুষ আমাদের ভোট দিয়েছেন।” তবে রঙ্গচিত্র-কাণ্ডের প্রভাব ভোটে পড়েছে বলে অম্বিকেশবাবু মনে করেন না। পক্ষান্তরে, শান্তনুবাবু বলেন, “ওরা কোনও কাজ করেনি। তবুও সদস্যরা কেন ওদের ভোট দিলেন বুঝতে পারছি না। আমরা এলে কাজ করতাম। এখন ওরা কী করে দেখা যাক!”
অম্বিকেশবাবুর প্রহৃত এবং গ্রেফতার হওয়ার ঘটনার পিছনে ওই সমবায় আবাসনে ‘সিন্ডিকেট রাজ’ তৈরির স্বার্থ ছিল বলেও অভিযোগ উঠেছিল। অনেকে অভিযোগ করেছিলেন, সমবায় আবাসনের ভোট আসন্ন ছিল বলেই রঙ্গচিত্র-কাণ্ডকে অজুহাত করে অম্বিকেশবাবুকে ফাঁসানো হয়। এই দিক থেকেও ওই আবাসনের ভোটে অম্বিকেশবাবুদের জয় অন্য মাত্রা পেয়েছে। |