বিপর্যস্ত ‘প্রগতি উৎসব’
সন্ধ্যার ঝড়ে লন্ডভন্ড মহানগর
বিবার সন্ধ্যার বৃষ্টি যেমন স্বস্তি দিল, তেমনই কালবৈশাখী এসে লন্ডভন্ড করে দিল শহরের একাংশ। গাছ পড়ে ছিঁড়ল ট্রেনের ওভারহেড তার। শহরের বিভিন্ন এলাকায় অন্তত ১৪টি গাছ পড়ে রাস্তা আটকে গেল। মিলন মেলার ‘প্রগতি উৎসবে’ বিভিন্ন স্টল বাঁচাতে হিমশিম খেলেন কর্মীরা। নামতে না-পেরে আকাশেই চক্কর কাটল একাধিক বিমান। আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন হাওয়ার বেগ ছিল ঘণ্টায় ৬৮ কিমি।
রবিবার সন্ধ্যায় সবে ভিড় জমতে শুরু করেছিল মিলন মেলার মাঠে। হঠাৎ আকাশ কালো করে ঝড় উঠল। হাওয়ার দাপটে লন্ডভন্ড হয়ে গেল প্রগতি উৎসবের স্টল, ব্যানার। ঝড় থামার পরে দেখা গেল, বেশির ভাগ স্টলের বিধ্বস্ত অবস্থা। মাঠে পড়ে রয়েছে ছিঁড়ে যাওয়া ব্যানার, ফ্লেক্স। ঝোড়ো হাওয়ায় বেঁকে গিয়েছে মাঠে সৌরবিদ্যুতের খুঁটি। গত শুক্রবারও রাতের ঝড়ে ভেঙে গিয়েছিল সংখ্যালঘু দফতর, শিল্পোন্নয়ন নিগমের নির্মীয়মাণ স্টল। তার পরে তড়িঘড়ি সে সব সারিয়ে শনিবার উদ্বোধন হয় মেলার।
ভাঙল মিলনমেলা...
উড়ে যায়: ওলটপালট ‘প্রগতি উৎসব’-এর স্টল। রবিবার সন্ধ্যায়। ছবি: রণজিৎ নন্দী
এ দিনের ঝড়ে সব চেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সংখ্যালঘু দফতর, মাদ্রাসা শিক্ষা, ভূমি ও ভূমি সংস্কার এবং উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের স্টল। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মী বলেন, “ঝড়ে স্টলগুলি কাঁপছিল। দোকানের জিনিসপত্র মাটিতে পড়ে যায়।” মেলা কমিটি সূত্রে খবর, ঝড়ের সময়ে নিরাপত্তার কারণে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছিল।
বিভিন্ন স্টলের কর্মীরা জানান, এ দিন দুপুরে চড়া রোদ থাকায় লোকজন বিশেষ আসেননি। বিকেলের পরে ভিড় হচ্ছিল। ঝড় থেকে বাঁচতে মেলা-প্রাঙ্গণে স্থায়ী কাঠামোর নীচে আশ্রয় নেন দর্শনার্থীরা। ঝড় থামলে তার মধ্যে অধিকাংশই বাড়ির পথ ধরেন। অন্ধকার মাঠে তখন অবশ্য দেখার মতো কিছু ছিল না। তাঁদেরই এক জন, ফুলবাগানের বিমল গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “স্ত্রী-মেয়েকে নিয়ে এসেছিলাম। ঝড়ের পরে অধিকাংশ দোকানই বন্ধ। আর আসা হবে কি না, জানি না।” মেলা বন্ধ হওয়ার কথা রাত আটটায়। কিন্তু ঝড়ের জেরে সন্ধ্যা সাতটাতেই ভাঙা হাটের চেহারা।
এ দিনের ঝড়ে শহরের বিভিন্ন জায়গায় অন্তত ১৪টি গাছ পড়ে গিয়েছে বলে পুরসভা সূত্রের খবর। পুরসভার পার্ক ও উদ্যান বিভাগের অফিসার দেবাশিস চক্রবর্তী জানান, ৯বি এলিয়ট রোডে একটি পুরনো বাড়ির বারান্দা ভেঙে আহত হয়েছেন এক জন। জাজেস কোর্ট রোড, আলিপুর রোড ও লাউডন স্ট্রিটে গাছ পড়েছে। উত্তরে ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডের একটি বস্তিতে তালগাছ পড়েছে।
বিমানবন্দর সূত্রের খবর, ঝড় শুরু হওয়ার মুখেই দিল্লি থেকে আসা একটি বিমান শহরে নামছিল। আবহাওয়ার কারণে তার মুখ ঘুরিয়ে দেওয়া হয়। আধ ঘণ্টা আকাশেই চক্কর দেয় সেটি। আরও তিন-চারটি বিমানকে ঝড়ের দাপটে আকাশে চক্কর দিতে হয়েছে। আবহাওয়া স্বাভাবিক হলে বিমানগুলি একে একে অবতরণ করে।
ঝড়ে ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়েছে হাওড়া এবং শিয়ালদহ শাখায়। রেল সূত্রের খবর, শিয়ালদহ মেন লাইনে ওভারহেডে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যাহত হয়। ফলে এই শাখায় বেশি রাত পর্যন্ত ট্রেন বিঘ্নিত হয়েছে। লিলুয়ায় গাছ পড়ে ওভারহেড তার ছিঁড়ে আপ-ডাউন ও রিভার্স, তিনটি লাইনেই বন্ধ হয়ে যায় পরিষেবা। অল্প সময়ের মধ্যেই গাছ কেটে ডাউন লাইন চালু হলেও আপ লাইন অনেক রাত পর্যন্ত বন্ধ থাকে।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.