এক কিশোরের অপমৃত্যুতে দেনার দায় ও চাষে ক্ষতিকে দায়ী করল পরিবার। রবিবার বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যু হয় মঙ্গলকোটের মাজিগ্রামের ওই কিশোরের। মঙ্গলকোটের বিডিও প্রদীপ মজুমদার অবশ্য বলেন, “মৃতের বাড়ি থেকে একটি ‘সুইসাইড নোট’ উদ্ধার হয়েছে। তাতে লেখা রয়েছে, ‘আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়’। তাই কেন ওই কিশোর আত্মঘাতী হয়েছে, তা তদন্ত না করে বলা সম্ভব নয়।”
পুলিশ ও মৃতের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার বিকেলে বাড়িতে রাখা কীটনাশক পান করে শুভ মাজি (১৭)। তাকে প্রথমে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতাল, পরে বর্ধমান মেডিক্যালে ভর্তি করানো হয়। রবিবার ভোরে মৃত্যু হয় তার।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শনিবার শুভ ভেড়া চরাতে গিয়েছিল। একটি ভেড়ার পা ভেঙে যাওয়ায় ফিরে আসার পরে বাড়ির লোকজন তাকে বকাবকি করেন। তার পরেই কীটনাশক খায় ওই কিশোর। তার পরিবারের তরফে অবশ্য দেনা ও চাষে ক্ষতিকেই দায়ী করা হয়েছে। মৃতের আত্মীয় বাণেশ্বর মাজির দাবি, “শুভর বাবা রাখহরি দু’বছর ধরে অসুস্থ। তাই নিজেদের চাষের দায়িত্ব বর্তায় শুভর উপরেই। তারা দু’ভাই চাষবাস দেখাশোনো করত। শুভর ভাই দীপঙ্কর মাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়ায় এ বার পুরো দায়িত্ব শুভর উপরেই ছিল।” প্রতিবেশী অরুণ মাজির দাবি, “শুভদের পাঁচ বিঘা জমি আছে। প্রতি বার বিঘা পিছু ৩০ মন করে ধান হত। কিন্তু এ বার বিঘা প্রতি ১২ মনের বেশি ধান মেলেনি। ফলে বোরো চাষে যে খরচ হয়েছিল, তা তুলতে পারেনি শুভরা।”
শুভর ভাই দীপঙ্কর বলে, “দু’বছর আগে দিদির বিয়ের সময়ে প্রায় পঞ্চাশ হাজার টাকা দেনা হয়। তার তিরিশ হাজার টাকা এখনও শোধ হয়নি। তার উপরে বোরো চাষ করতে মহাজনদের থেকে কুড়ি হাজার টাকা ধার করতে হয়েছিল। বাবার চিকিৎসার জন্যও হাজার দশেক টাকা দেনা হয়।” তার দাবি, “দেনা শোধ করতে না পারায় দাদা আতঙ্কে ভুগত। তার জেরেই আত্মহত্যা করেছে।” |