সিদ্ধেশ্বরী পুজোয় উৎসব মছলন্দপুরে
বাঁশের মইয়ের উপর রাখা ছোট্ট সরা। তার ভিতরে পুজোর উপচার। সামনে ডগর বাজিয়ে গ্রামের মেয়ে- বৌরা সার বেঁধে সেই সরা নিয়ে প্রবেশ করেন মন্দিরে। বিকেলের দিকে মই মাথায় নিয়ে মন্দির প্রদক্ষিণ করেন তাঁরা। কালনার মছলন্দপুরে সিদ্ধেশ্বরী পুজোকে কেন্দ্র করে এমনই রেওয়াজ বহুদিনের। দু’দিন ধরে চলা এই গ্রামীণ পুজো বর্তমানে কালনায় একটি উৎসবের চেহারা নিয়েছে। পুজোকে কেন্দ্র করে বসে মেলা, জমে ওঠে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আসর। তাতে সামিল হন আশপাশের গ্রামের বাসিন্দারাও।
গ্রামে ঢোকার মুখেই চোখে পড়ে সিদ্ধেশ্বরীদেবীর ঝকঝকে মন্দিরটি। গ্রামবাসীরা জানান,সরকারি নথি থেকে তাঁরা জানতে পেরেছেন এই পুজো প্রায় ১৯৯ বছরের পুরনো। তবে তাঁদের একাংশের বিশ্বাস, আরও প্রাচীন এই পুজো। জনশ্রুতি, একসময়ে মন্দির সংলগ্ন এলাকা ছিল জঙ্গলে ঢাকা। ডাকাতি করার আগে নাকি দেবীর কাছে পুজো দিয়ে যেতেন ডাকাত দলের সদস্যেরা।” তবে, এখন অবশ্য গ্রামের বাস্তুদেবী হিসেবেই পূজিত হন দেবী। গ্রামবাসীরা জানান, রসময় গোস্বামী নামে এক ব্যক্তি তালপাতার মন্দিরে প্রথম পুজোর সূচনা করেছিলেন। পরে মন্দির স্থানান্তরিত করা হয় ইটের একটি ঘরে। বছর দুয়েক আগে শ্বেতপাথরের মন্দিরটি গড়তে উদ্যোগী হন গ্রামের বাসিন্দা তথা কালনা মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসক অমিয়কান্তি তা। বর্তমানে কলকাতায় থাকলেও পুজোর আগেই গ্রামে ফিরে এসেছেন তিনি। তাঁর কথায়, “প্রতি বছর জ্যৈষ্ঠ মাসের অমাবস্যায় দেবীর পুজো হয়। সারা বছর পরিবারের সদস্যেরা যেখানেই থাকুন না কেন, পুজোর সময়ে গ্রামে ফিরতেই হবে সবাইকে।” গ্রামবাসীরাও জানান, পুজো উপলক্ষে আগের রাতেই পরিবারের আত্মীয়-পরিজনরা চলে আসেন গ্রামে। কর্মসূত্রে যারা বাড়ির বাইরে থাকেন তাঁরাও ফিরে আসেন গ্রামে।
নিজস্ব চিত্র।
মন্দিরের পাশ দিয়ে চলে গিয়েছে কালনা-বর্ধমান রোডের পাকা রাস্তা। পুজো উপলক্ষে রাস্তার দু’ধারে বসেছে মেলা। এবারের উৎসবে শনিবার থেকেই গ্রাম সেজে উঠেছে রঙবাহারি আলোয়। পাড়ার অলি-গলিতে বাজছে সাউন্ড-বক্স। পাড়ার ছোট ছেলেরাও মাতোয়ারা বিভিন্ন বাজনার তালে তালে। অমিয়বাবুর পরিবারেরই একজন প্রবীণ সদস্য গোপেশ্বর তা বলেন, ‘পুরনো রেওয়াজ মেনে এখনও গ্রামে আসে ডগর। তবে তিন দশক আগেও ডগরের তালে তালে যেভাবে গোটা গ্রাম পা মেলাত, তেমনটা আর দেখা যায় না।”
রবিবার পুজো উপলক্ষে মন্দিরে ছিল বেশ ভিড়। বিকেলের দিকে মই মাথায় নিয়ে মন্দির প্রদক্ষিণ করেন গ্রামের মহিলারা। আশপাশের সিমলন, গুপ্তিপাড়া, মধুপুর, আটঘোড়িয়া, কাঁকুড়িয়া-সহ বিভিন্ন গ্রাম থেকে বাসিন্দারা এসে যোগ দেন উৎসবে। তাঁদের যাতে কোনও অসুবিধায় পড়তে না হয়, তার জন্য মন্দির সংলগ্ন আমবাগানে ব্যবস্থা করা হয়েছে বিশেষ তাঁবুর।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.