বাংলাকে শুভেচ্ছা জানাতে বারাবাটি স্টেডিয়ামের বাইরে যে কাট আউট টাঙানো ছিল, সেটা আর নেই। বদলে ওড়িশা ক্রিকেট অ্যাকাডেমির একটা কাট আউট সেখানে ঝুলছে। লেখা আছে, ‘অনূর্ধ্ব-১৪ মেয়েদের ক্রিকেট শিবির হবে ১৯-২২ মে’। রবিবার সন্ধেয় বাংলার ম্যাচ চলাচালীন আবার কোনও কাট আউট লাগানো হবে কি না জানা নেই। তবে এটা নিশ্চিত, কেরলের কাছে হারলে কটকে মাত্র তিন দিনেই সন্তোষ ট্রফিতে ছুটি হয়ে যাবে বাংলার।
সন্তোষ ট্রফিতে বাংলার বর্তমান অবস্থা কী, সেই দিকে একবার চোখ বুলিয়ে নেওয়া যাক। পরিসংখ্যানের সূত্র ধরে হাঁটলে দেখা যাবে, মহারাষ্ট্রের কাছে হেরে অসম্ভব কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন তারিফ আমেদরা। শেষের দু’টো ম্যাচ জিততে তো হবেই, মহারাষ্ট্রকেও দু’টোর মধ্যে একটা ম্যাচ হারতে হবে। এ সবের মধ্যেই আবার বড় ধাক্কা বাংলা শিবিরে। হাঁটুতে চোট পাওয়ায় কেরল ম্যাচে খেলতে পারবেন না জামির আলি মণ্ডল। শুক্রবার বাংলার চূড়ান্ত ব্যর্থতার মধ্যেও যাঁর পারফরম্যান্স সবচেয়ে বেশি চোখে পড়েছিল। গোদের ওপর বিষফোঁড়া বোধহয় একেই বলে!
সন্তোষে বাংলার স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখতে রবিবার প্রথম দলে এক ঝাঁক পরিবর্তন করতে চাইছেন সাব্বির আলি। এমনকী কেরল ম্যাচের পুরো রক্ষণই বদলে ফেলতে চাইছেন তিনি। গৌর নস্করের জায়গায় দলে ঢুকছেন মোহন সরকার। গুরপ্রীত সিংহকেও মাঝমাঠ থেকে স্টপারে নামিয়ে আনা হচ্ছে সাগ্রামের পাশে। এবং মহারাষ্ট্র ম্যাচে যেই তপন মাইতিকে বিরতির পরে নামিয়ে অনেক প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছিল, সেই তপন কেরল ম্যাচে শুরু থেকেই খেলবেন। দলে ঢুকছেন সুরাবুদ্দিন মল্লিকও। ফরোয়ার্ডে তন্ময় কুণ্ডুর পরিবর্তে খেলবেন মিঠুন ওঁরাও। সাব্বির বলছিলেন, “সবার আগে আমাদের গোল নষ্টের বদভ্যাস থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। তা হলেই আর কেউ আটকাতে পারবে না।”
এ বারের সন্তোষে এমনিতেই কঠিন গ্রুপে বাংলা। বিশেষ করে যেখানে আঠারো বছর আগের মধুর প্রতিশোধ তুলতে দৃঢপ্রতিজ্ঞ কেরল কোচ এম এম জেকব। ৯৪-এ কটকে বাংলার কাছে হেরেই সন্তোষ হাতছাড়া করেছিলেন জেকব। সে বার প্রধান কোচ শ্রীধরনের সহকারী ছিলেন তিনি। পুরনো কথা স্মৃতিচারণ করতে করতে জেকব বলছিলেন, “টাই ব্রেকারের হারকে আমি হার মনে করি না। শ্রীধরণের হারের বদলা এ বার নিশ্চয়ই নেব।” মজার ব্যাপার হল, সে বার নির্ধারিত সময়ে কেরলের হয়ে জো পল আনচেরি এবং বাংলার হয়ে আই এম বিজয়ন গোল করেছিলেন। বাংলা টাই ব্রেকারে জিতেছিল ৭-৫ গোলে।
বর্তমান প্রেক্ষাপটে বাংলা দলে না আছেন বিজয়ন, কেরলে না আছেন আনচেরি। তবে গত চার বছর ধরে যে অফিস টিমের ফুটবলারদের আটকে রেখেছিল সংস্থা, কেরল মুখ্যমন্ত্রী ওমেন চণ্ডীর হস্তক্ষেপে সেটা আবার চালু হয়ে গিয়েছে। এ বছর কেরল পুলিশ এবং কাস্টমসের প্রচুর ফুটবলার আছেন জেকবের দলে। যাঁদের গড় বয়স ২৩। অফুরন্ত প্রাণ, অসম্ভব দৌড়তে পারেন। সাদার্ন সমিতির কোচ হিসেবে ই কে নয়নার ট্রফি খেলার সময়ই কেরল দলটাকে প্রথম দেখেছিলেন সাব্বির। তাঁর সাম্প্রতিক অভিজ্ঞতা হল, “আগের বছর যে কেরলকে দেখেছিলাম, এটা তার চেয়ে অনেক উন্নত। অথচ প্রায় একই দল খেলছে।” |