আইপিএল নাট্যের সর্বশেষ সংযোজন শ্লীলতাহানি পর্বেও এ বার এক নতুন মোড়।
আজ নগদ ৩০ হাজার টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে নয়াদিল্লির পাটিয়ালা হাউস কোর্ট থেকে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন শ্লীলতাহানির অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর ক্রিকেটার লিউক পোমার্সব্যাচ। মর্র্যাদাহানিকর টুইট করার অভিযোগে আজই আরসিবি মালিক বিজয় মাল্যের পুত্র সিদ্ধার্থ মাল্যকে আইনি নোটিস ধরিয়েছেন নিউ ইয়র্কবাসী ওই মহিলা। কিন্তু এর মধ্যেই উঠে এসেছে আইপিএল কর্তৃপক্ষের অস্বস্তি বাড়ানোর মতো আরও একটি প্রসঙ্গ। যেখানে শ্লীলতাহানি-কাণ্ডের পিছনে ফ্র্যাঞ্চাইজি বনাম ফ্র্যাঞ্চাইজির বিবাদজনিত চক্রান্তও সন্দেহ করছে দিল্লি পুলিশ।
সব মিলিয়ে নানাবিধ জট পুরোমাত্রায় বহাল। পোমার্সব্যাচের পাসপোর্ট আদালতের হেফাজতে রয়েছে। আদালতের নির্দেশ ছাড়া আপাতত ভারত ছাড়তেও পারবেন না অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার। সিদ্ধার্থের টুইট ঘিরে বিতর্কও মোটামুটি প্রত্যাশিত ছিল। আইনজীবী মারফত সিদ্ধার্থকে নোটিস পাঠানো হয়েছে যে, তিনি আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ক্ষমা না চাইলে তাঁর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একই সঙ্গে ওই মহিলা দিল্লির মহিলা কমিশনেও সিদ্ধার্থের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। মহিলা কমিশন জানিয়েছে, সোমবার নোটিস দিয়ে তারা সিদ্ধার্থের জবাব চাইবে। |
জামিন পেয়ে আদালত থেকে বেরিয়ে আসছেন লিউক পোমার্সব্যাচ। ছবি: এ পি |
এ হেন ঘটনাপ্রবাহের মধ্যেই হঠাৎ সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিত এক নতুন বিতর্কের গন্ধ, যার নাম ফ্র্যাঞ্চাইজিদের মধ্যে নোংরা শত্রুতা। পুলিশ আজ আদালতের নির্দেশেই সিসিটিভি ফুটেজ ও অন্যান্য সাক্ষ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করতে ‘ঘটনাস্থল’ ওই পাঁচতারা হোটেলে যায়। সেখানে গিয়ে পুলিশ জানতে পারে, হোটেলের যে স্যুইট-এ জোহল হামিদ নামে ওই মহিলা এবং তাঁর ভাবী স্বামী শাহিল পিরজাদা এত দিন ছিলেন, সেই স্যুইটটি ডেকান চার্জার্সের নামে ‘বুক’ করা রয়েছে ১৪ মে থেকে। এতেই দিল্লি পুলিশের সন্দেহ, তা হলে জোহল-শাহিলের সঙ্গে ডেকান চার্জার্স মালিকের কী ধরনের সম্পর্ক? আরসিবি এবং ডেকান মালিকদের মধ্যেই বা কেমন সম্পর্ক? যদি ভাল না হয়, ডেকান চার্জার্স ফ্র্যাঞ্চাইজি কি ইচ্ছে করে ওই মহিলা এবং পুরুষটিকে ওই ঘরে রেখে দিয়েছিলেন আরসিবি শিবিরের কাউকে প্ররোচিত করে তাঁকে গভীর বিতর্কের মধ্যে জড়িয়ে দিতে? পোমার্সব্যাচ-জোহলের ঘটনা ডেকান এবং আরসিবি মালিকদের মধ্যে রেষারেষির পরিণতি নয় তো?
কোর্টে পোমার্সব্যাচ জানান, তিনি নির্দোষ। তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হয়েছে। কোর্টে সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করে দেখা যায়, যে সময়ে শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটে বলে জোহল অভিযোগ করেছেন, সেই সময়ে তাঁর শোওয়ার ঘরে তিন জন নয়, চার জন ব্যক্তিকে ঢুকতে দেখা গিয়েছে। এবং তখন তাঁদের চেহারায় কোনও উদ্বেগের চিহ্ন দেখতে পাননি বিচারক। কিছু ক্ষণ পরে আবার সেই ঘর থেকেই জোহলকে একা বেরোতে দেখা যায়।
এমনই নানা রহস্যের উত্তর খুঁজছে পুলিশ। তা ছাড়া সিসিটিভি ফুটেজে অভিযুক্ত ও অভিযোগকারিণী ছাড়া অন্য যাঁদের দেখা গিয়েছে, তাঁদের পরিচয় সম্পর্কেও নিশ্চিত হতে চাইছে তারা। আবার জানা গিয়েছে, মারামারিতে আহত লিউককে পরের দিন সকালে রামমনোহর লোহিয়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও তাঁর রক্তপরীক্ষা হয়নি। তবে হাসপাতালের ডাক্তার তাঁর রিপোর্টে লিখেছেন, হাসপাতালে আনার সময়ে লিউকের মুখ থেকে মদের গন্ধ পাওয়া গিয়েছিল। ঘটনায় জড়িত শাহিল চোট নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি। সোমবারের আগে পুলিশের কাছে তাঁর বয়ান দেওয়ার মতো শারীরিক অবস্থা নেই বলেও চিকিৎসকেরা জানান। |