|
|
|
|
আমরণ অনশনে ছয় |
পথ অবরোধে পাশে পরিবার |
নিজস্ব সংবাদদাতা • বালুরঘাট |
দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটে উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহনের ঠিকাদার নিযুক্ত ছাঁটাই শ্রমিকদের অনশন আন্দোলনের সমর্থনে রাস্তায় নামলেন তাঁদের পরিবারের লোকেরা। শুক্রবার বেলা ১২ টা নাগাদ শহরের পাওয়ার হাউসপাড়া এলাকায় তাঁরা রাস্তা অবরোধ করেন। ছাঁটাই হওয়া কর্মীদের পুনর্বহালের দাবিতে তাঁদের বিক্ষোভ আন্দোলনে এলাকার একাংশ বাসিন্দা সামিল হন। এর পরে কংগ্রেস এবং এসইউসি আন্দোলনকারীদের পাশে দাঁড়িয়ে পুনর্বহালের দাবিতে সোচ্চার হলে উত্তেজনা তৈরি হয়। পুলিশ দিয়ে বোঝানোর পর দেড় ঘন্টা বাদে অবরোধ ওঠে। ইউটিইউসির ব্যানারে এসইউসির কর্মীরা শহরে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। জেলাশাসকের অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখানোর পর স্মারকলিপি পেশ করা হয়। দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলাশাসক দুর্গাদাস গোস্বামী বলেন, “আন্দোলনকারীদের দাবির বিষয়টি উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ কর্তৃপক্ষ এবং রাজ্য সরকারকে জানানো হয়েছে। এ ব্যাপারে তাঁরাই যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার নেবেন।” তবে বিষয়টির উপর প্রশাসন নজর রেখেছে বলে জেলাশাসক জানিয়েছেন। |
|
ছবি: অমিত মোহান্ত। |
এসইউসির জেলা সম্পাদক সাগর মোদকের অভিযোগ, গত ২০ বছর ধরে বালুরঘাট ডিপোয় কর্মরত ২৯ জন ঠিকা শ্রমিককে কর্তৃপক্ষ ছাঁটাই করে পরিবারগুলিকে অর্ধাহার অনাহারের মধ্যে ফেলে দিয়েছেন। তাদের পুনর্বহাল করা না হলে এই বয়সে পরিবার নিয়ে ওই কর্মীরা কোথায় যাবেন?” এদিন অনশন মঞ্চে যোগ দিয়ে জেলা কংগ্রেস সভাপতি নীলাঞ্জন রায় বলেন, “ঠিকা শ্রমিকদের দায় রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের নেই বলে তাঁরা রাতারাতি ছাঁটাই পর্ব সেরে সমস্যার বিষয়টি এড়াতে পারেন না। মানবিকতার খাতিরে কংগ্রেস পুনর্বহালের দাবিকে সমর্থন করছে। নিগম কর্তৃপক্ষের উচিত ছাঁটাই কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি বিবেচনা করা।” দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট ডিপোর ৩৭ জন ঠিকা শ্রমিকের মধ্যে ৮ জনকে রেখে বাকি ২৯ জনকে গত ৩১ জানুয়ারি কর্তৃপক্ষ ছাঁটাই করেন। এর পরে ২ ফ্রেব্রুয়ারি সকলকে পুনর্বহালের দাবিতে বালুরঘাট ডিপোর সামনে ২৪ ঘন্টা ব্যাপী অবস্থান আন্দোলনে নামেন ওই কর্মীরা। একটানা ৮৬ দিন ধরে বালুরঘাট ডিপোর সামনে অবস্থান আন্দোলনের পর তাঁরা ২৮ এপ্রিল থেকে রিলে অনশন শুরু করেন। তাতেও নিগম কর্তৃপক্ষের তরফে সাড়া না পেয়ে গত বুধবার থেকে আন্দোলনকারীদের মধ্যে ৬ জন আমরণ অনশন আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। নির্জলা ওই আন্দোলনের ফলে কয়েকজনের শারীরিক অবস্থা ক্রমশ খারাপ হচ্ছে জেনে উদ্বিগ্ন পরিবারের বউ ছেলেমেয়েরা ঘর ছেড়ে রাস্তা অবরোধে নামেন। এদিন এলাকার বাসিন্দাদের তরফে পূর্ণিমা দাস, ভারতী রায়েরা বলেন, “রাজ্যের সব ডিপো থেকে ঠিকা শ্রমিক ছাঁটাই হয়েছে। বালুরঘাটে কেন এতদিন ধরে কর্মীরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন তা কর্তৃপক্ষ বুঝতে চাইছেন না। দুঃস্থ ওই পরিবারগুলি চরম দুর্দশার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। মানবিকতার খাতিরে আমরা পাড়া প্রতিবেশিরা ওদের আন্দোলনে সামিল হয়েছি।” জেলা প্রশাসনের তরফে একটি মেডিক্যাল টিম অনশনরত কর্মীদের স্বাস্থ্যের দিকে নজর রেখেছে। |
|
|
|
|
|