|
|
|
|
অস্ত্র মজুতের খবরে সেনা দলের অভিযান |
রাতভর পুকুর পাড়ে পুলিশ |
নমিতেশ ঘোষ • বিধাননগর |
অস্ত্রের খোঁজে রাতভর পুকুর আগলে বসে রইল পুলিশ বাহিনী। ভোর হতেই পুকুরে জাল ফেলে চলল তল্লাশি। সাত জন ডুবুরি নামিয়েও খোঁজ করা হল অস্ত্রের। দিনশেষে শুন্য হাতে ফিরতে হল পুলিশকে। শুক্রবার সকালে ওই ঘটনাকে ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়ায় শিলিগুড়ি সংলগ্ন বিধাননগর পুলিশ ফাঁড়ির জগন্নাথপুরে। দার্জিলিংয়ের পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবাল বলেন, “জগন্নাথপুরের তিনটি পুকুরের একটিতে অস্ত্র রয়েছে বলে আমাদের কাছে খবর আসে। সে সূত্রেই সেখানে তিনটি পুকুরে ডুবুরি নামিয়ে তল্লাশি চালানো হয়। কিছু পাওয়া যায়নি। অস্ত্র অন্য কোথায় সরিয়ে দেওয়া হয়েছে কি না তা জানতে ২ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।” পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাত ৯টা নাগাদ সেনাবাহিনীর একটি দল অস্ত্রের ক্রেতা সেজে জগন্নাথপুরে যায়। তাঁদের সঙ্গে বিধাননগর ফাঁড়ির পুলিশও ছিল। পুকুর পাহারার কাজে নিযুক্ত হেমন্ত দাস এবং পুকুরের মালিক বিশু সরকারের ছেলে রাকেশকে সেখান থেকে আটক করা হয়। সেনা গোয়েন্দাদের দাবি, ওই দুই যুবকের মধ্যে একজন নিজেকে অস্ত্র কারবারি বলে দাবি করেছে। তাঁর সঙ্গে তাঁদের তিন লক্ষ টাকার অস্ত্র কেনার ব্যপারে চুক্তি হয়। ওই দিন রাতেই অস্ত্র সরবরাহের সময় ঠিক করা হয়। |
|
বিধাননগরে পুকুরে জাল ফেলে চলছে আগ্নেয়াস্ত্রের খোঁজ। নিজস্ব চিত্র। |
অভিযানের আগে বিষয়টি তাঁরা জেনে যাওয়ায় অস্ত্র অন্য কোথায় সরিয়ে ফেলেছে বলে সন্দেহ করছে তাঁরা। পুকুরের কাছ থেকে একটি টিনের বাক্স উদ্ধার হওয়ায় গোয়েন্দাদের ধারণা দৃঢ় হয়। পুকুরেই অস্ত্র রাখা হয়েছে সন্দেহ করে ওই রাতেই তিনটি পুকুর ঘিরে ফেলে পুলিশ কর্মীরা। রাতেই স্নিফার ডগ নিয়ে গোটা এলাকায় তল্লাশি চালানো হয়। রাকেশের কাকা অতিন সরকার বলেন, “আমরা বিধাননগরে বহুদিন ধরে ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত রয়েছি। এলাকার মানুষ আমাদের জানেন। আমার ভাইপো ব্যবসা করেন। কোনও খারাপ কাজে সে যুক্ত থাকতে পারে না। পুকুরের পাহারার কাজে কয়েক মাস ধরে ওই যুবককে নিযুক্ত করা হয়। তার বিষয়টি আমরা বলতে পারব না।” হেমন্তবাবুর স্ত্রী আশা দেবী তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ ঠিক নয় বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘আমার স্বামী অস্ত্র কারবারের সঙ্গে যুক্ত থাকলে আমি বুঝতে পারতাম। আমি চার বছর ধরে তাঁর সঙ্গে রয়েছি। আমরা খুব গরিব মানুষ। ওই অভিযোগ ঠিক নয়।” পুলিশ সূত্রের খবর, হেমন্তবাবুর বাড়ি কুমারগ্রামের হলদিবাড়িতে। বাড়িতে তাঁর আত্মীয়রা থাকলেও চার বছর থেকে তিনি বাইরে থাকেন। মাঝে মধ্যে বাড়িতে যান। মাস ছয়েক আগে তিনি ওই পুকুর পাহারার কাজে যুক্ত হন। পুকুরের ধারে একটি ঘরে স্ত্রীকে নিয়ে থাকেন তিনি। তার আগে শিলিগুড়ি সংলগ্ন একটি চা বাগানে কাজ করতেন তিনি। পুলিশ ওই ঘটনায় কয়েকটি জিনিস নিয়ে ধন্দে পড়েছে, একো তো পুকুরে বা ওই সংলগ্ন কোথাও অস্ত্র লুকিয়ে রাখা হলে তল্লাশিতে সেগুলি বেরিয়ে আসত। আদেও সেরকম হয়নি। পাশাপাশি অস্ত্রের কারবারের সঙ্গে যুক্ত থাকলে তাঁরা নিজেদের বাড়িতেই কেন তা সরবরাহ করা হবে বলে জানালেন। পুলিশের এক কর্তা বলেন, “অপরাধমূলক কাজের ক্ষেত্রে দেখা যায় নিজের বাড়ির আশেপাশে তা করা হয় না। তাই তাদের অন্য কোনও পরিকল্পনা ছিল কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” এদিন ঘটনার তদন্তে সেখানে যান শিলিগুড়ির ডিএসপি প্রদীপ পাল। ঘটনাস্থলে যান ফাঁসিদেওয়া পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি প্রণবেশ মণ্ডল। তিনি বলেন, “পুকুরের মালিকের পরিবারের সদস্যদের আমি চিনি। তাঁদের সম্বন্ধে কখনও কোনও খারাপ কথা শুনিনি। বিষয়টি বুঝতে পারছি না।” |
|
|
|
|
|