আইনজীবী ধর্মঘটে থমকে শ্রমিকদের দুর্ঘটনা-ক্ষতিপূরণ
শ্রমিক স্বার্থ ‘রক্ষা’ নিয়ে রাজ্য সরকার এবং আইনজীবীদের ‘প্রতিযোগিতা’য় বিপন্ন হচ্ছে শ্রমিক স্বার্থই!
দেশের আইন অনুযায়ী, কর্মরত অবস্থায় কোনও শ্রমিক-কর্মচারী দুর্ঘটনায় মারা গেলে বা জখম হলে সংশ্লিষ্ট নিয়োগকারীর কাছ থেকে তাঁর পরিবারের ক্ষতিপূরণ পাওয়ার কথা। কিন্তু সব ক্ষেত্রে নিয়োগকারীরা (সরকারি বা বেসরকারি সংস্থা) ওই আইন মানে না। তখন মৃত বা আহত শ্রমিক-কর্মচারীর পরিবারকে ‘ওয়ার্কমেন্স কমপেনসেশন ট্রাইব্যুনাল অ্যান্ড লেবার কোর্ট’-এ মামলা করে ক্ষতিপূরণ আদায় করতে হয়। এত দিন নিয়োগকারীরা ওই ক্ষতিপূরণ দিত টাকায়। কিন্তু রাজ্য সরকারের নতুন নিয়ম অনুযায়ী, এ বার থেকে তাদের ওই ক্ষতিপূরণ দিতে হবে চেকে বা ড্রাফ্টে। এতেই আপত্তি ‘ওয়ার্কমেন্স কমপেনসেশন ট্রাইব্যুনাল অ্যান্ড লেবার কোর্ট’-এর আইনজীবীদের। তাঁরা চান পুরনো ব্যবস্থাই থাকুক। ওই দাবিতে ওই আদালতের বার অ্যাসোসিয়েশন গত ১৬ মে থেকে ধর্মঘট করছে। ধর্মঘট চলবে ৮ জুন পর্যন্ত। যার ফলে এখন দুর্ঘটনাগ্রস্ত শ্রমিক-কর্মচারীদের পরিবারগুলি ক্ষতিপূরণের মামলা করতে পারছে না। ক্ষতিপূরণের রায় হয়ে গেলেও চেক তুলতে পারছে না।
রাজ্য সরকারের দাবি, শ্রমিক-স্বার্থেই নতুন ব্যবস্থা। পক্ষান্তরে আইনজীবীদের দাবি, শ্রমিক-স্বার্থেই তাঁরা পুরনো ব্যবস্থা চান। সরকারের যুক্তি, ক্ষতিপূরণের টাকা নেওয়ার পরে অনেকেরই টাকা বাড়ি ফেরার পথে খোয়া যেত। আবার আদালতেরই কিছু দালাল ‘ভুল’ বুঝিয়ে অনেকের টাকা ‘আত্মসাৎ’ করত। এ সব ঠেকাতেই টাকার বদলে চেক বা ড্রাফ্টে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নিয়ম করা হয়েছে। পক্ষান্তরে, ওই বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহেন্দ্রকুমার গুপ্তের দাবি, “দুর্ঘটনাগ্রস্ত শ্রমিক-কর্মচারীদের অনেকেই গরিব এবং স্বল্প শিক্ষিত। তাই তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থাকে না। অ্যাকাউন্ট খুলতে গেলে তাঁদের হয়রান হতে হয়। তাই টাকাতেই তাঁদের ক্ষতিপূরণ নেওয়া সুবিধাজনক।” মহেন্দ্রবাবু আরও বলেন, “ওই ক্ষতিপূরণের আইন কেন্দ্রীয় সরকারের তৈরি। রাজ্য তাতে বদল আনতে পারে না।”
দু’পক্ষের এই তরজায় বিপন্ন হচ্ছে শ্রমিক-কর্মচারীদের স্বার্থই। ‘ওয়ার্কমেন্স কমপেনসেশন’ দফতরের আধিকারিক চঞ্চল মুন্সির বক্তব্য, “দুর্ঘটনাগ্রস্ত শ্রমিক-কর্মচারীদের পরিবারগুলি গরিব এবং স্বল্প শিক্ষিত বলেই দাবি আদায়ে তাদের নির্ভর করতে হয় আইনজীবীদের উপরে। ধর্মঘটের জেরে তারা বিপন্ন।” শ্রমমন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু বলেন, “ওই ধর্মঘট অন্যায়। তবে ধর্মঘটীরা আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেননি।” মন্ত্রীর আরও যুক্তি, “গরিব বা স্বল্প শিক্ষিত হওয়ার সঙ্গে অ্যাকাউন্ট না-থাকার সম্পর্ক নেই। আজকাল জিরো ব্যালান্সেও অ্যাকাউন্ট হয়। কেন্দ্রীয় আইনে কোথাও বলা নেই ক্ষতিপূরণ টাকায় দিতে হবে। তাই রাজ্য এক্তিয়ারের বাইরে কিছু করেনি।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.