|
|
|
|
পচা গম সরবরাহে অভিযুক্ত এফসিআই |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
পচা গম সরবরাহের অভিযোগ উঠল এফসিআইয়ের বিরুদ্ধে। রেশনে সেই পচা গম বিলি করা হল বিপিএল তালিকায় থাকা গরিব মানুষদের। পচা গম পেয়ে গ্রাহকদের একাংশই খাদ্য দফতরে অভিযোগ জানিয়েছেন। তার ভিত্তিতে শুরু হয়েছে তদন্ত।
জানা গিয়েছে, এফসিআইয়ের মেদিনীপুরের গুদামে ৩৩ হাজার ২৩৭টি বস্তায় পচা গম ছিল। সেই গম খাবার অযোগ্য বলে খাদ্য দফতরের আধিকারিকেরা জানিয়েও দিয়েছিলেন। তার পরেও সেই বস্তার গম সরবরাহ করা হয়েছে বলে অভিযোগ। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা খাদ্য-নিয়ামক পার্থপ্রতিম রায় বলেন, “এই ধরনের অভিযোগ পাওয়ার পরে ফের তদন্ত শুরু হয়েছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।”
জেলা খাদ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় ৫ বছরের বেশি এফসিআইয়ের আদ্রার গুদামে কয়েক হাজার বস্তা গম পড়েছিল। অবহেলায় পড়ে থাকতে থাকতে সেই গম নষ্ট হয়ে যায়। সম্প্রতি আদ্রা থেকে সেই গমই পাঠানো হয় মেদিনীপুর, ডানকুনি ও মুর্শিদাবাদে। এফসিআই গুদাম থেকেই গম নেয় রাজ্যের খাদ্য দফতর। সেই গম পৌঁছয় বিভিন্ন রেশন দোকানে। রেশনে গম বিলির পর দেখা যায় তা সম্পূর্ণ পচে গিয়েছে। ডিস্ট্রিবিউটাররাও ওই গম নিতে অস্বীকার করেছিলেন।
অল-বেঙ্গল রেশন ডিস্ট্রিবিউটার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক তাপস রায় বলেন, “পচা গমের কথা প্রশাসনকে আগেই জানিয়েছিলাম। তারপ র তদন্ত শুরু করে আধিকারিকেরা জানিয়ে দেন, কোন কোন লট নম্বরের গম বণ্টন করা যাবে না। প্রশাসনিক আধিকারিকেরা গমের লট নম্বর চিহ্নিত করার পরেও এফসিআই তা দিয়ে দিচ্ছে। এ নিয়ে হইচই করায় বার বার তদন্ত হয়েছে। কিন্তু এখনও উপযুক্ত কাজ হয়নি।”
অভিযোগ পাওয়ার পর প্রথম তদন্ত হয় ৫/ এ/১০ ও ৭/ বি/১০ লট নম্বরে। যে লট নম্বরের প্রায় সাড়ে ৫ হাজার বস্তা (প্রতি বস্তায় ৫০ কেজি গম থাকে) গম খাবারের অনুপযুক্ত বলে চিহ্নিত করা হয়। গত ২ এপ্রিল তদন্ত করে এ কথা জানান খাদ্য দফতরের আধিকারিকেরা। পরবর্তীকালে ফের খারাপ গম দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ ওঠায় আবার তদন্ত হয়। তখন ২/ সি/ ৭, ১২, ১০, ৩ /বি/ ৯, ১২-সহ আরও ১০টি লটের গম খারাপ বলে চিহ্নিত করেন আধিকারিকেরা। সব মিলিয়ে ৩৩ হাজার ২৩৭ বস্তা গম খাওয়ার অনুপযুক্ত এবং তা যেন সরবরাহ করা না হয় সে কথা লিখিত ভাবে জানানো হয়। তা সত্ত্বেও ওই গমই ফের সরবরাহের অভিযোগ উঠেছে।
চলতি মাসের ১৭ তারিখে ফের তদন্ত হয়। তখন দেখা যায়, যে লট নম্বরের গম খারাপ বলে চিহ্নিত করা হয়েছিল, সেই লটের বস্তার পরিমাণ কমেছে। সব মিলিয়ে ১২টি লট নম্বর থেকে ৫ হাজার ৯৫৬২ বস্তা গম সরবরাহ করা হয়েছে। জেলা খাদ্য নিয়ামক বলেন, “সব রিপোর্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। এ বার উপর থেকে যা নির্দেশ আসবে সেই মতোই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।” |
|
|
|
|
|