|
|
|
|
|
|
দক্ষিণ কলকাতা
অপেক্ষা
|
বেহাল বাজার |
কৌশিক ঘোষ |
টিনের চালের ফুটো দিয়ে বৃষ্টিতে জল পড়ে। আটকায় না রোদও। নিকাশির অবস্থাও খারাপ। টিনের চালের বাইরে সব্জিবাজার যেখানে বসে সেখানেও কোনও পরিকাঠামোও নেই। স্থানীয় বিক্রেতারা বাঁশ দিয়ে প্লাস্টিক টাঙিয়ে কোনও রকমে ব্যবসা করেন। এই ছবি ঢাকুরিয়ায় এ টি চ্যাটার্জি রোডে পুর-বাজারের।
গত পুরবোর্ডের শেষ দিকে তৎকালীন মেয়র বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য নতুন বাজারের শিলান্যাসও করেন। কিন্তু পুর-নির্বাচনের পরে পুর-বোর্ড বদলে যাওয়ায় প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হয়নি। বর্তমান পুরবোর্ড বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে বাজারটির সংস্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
|
|
কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (বাজার) দেবাশিস কুমার বলেন, “সংস্কারের ব্যাপারে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে পুরসভা যৌথ ভাবে প্রকল্পটি করবে। বাজারটির অবস্থা খুবই খারাপ। কিন্তু নতুন বাজার নির্মাণের সময়ে ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসনের জায়গা দরকার। তা নিয়েও আলোচনা চলছে।” পুরসভাসূত্রে খবর, ১৯৯৪-এ তৎকালীন মেয়র প্রশান্ত চট্টোপাধ্যায় ঢাকুরিয়ার এই বাজারের উদ্বোধন করেন। তার বহু দিন আগে স্থানীয় কিছু ব্যবসায়ী সমবায় করে জমিটি কেনেন। পরে, তাঁদের কাছ থেকেই পুরসভা জমিটি কিনে নেয়। সেখানে পুরসভা দোতলা বাড়ি এবং তার ঠিক পিছনের জমিতে প্রায় দশ কাঠা জমির ওপর একটি মাছের বাজারও নির্মাণ করে। পরে বাড়ির দোতলাটি পুরসভা একটি ব্যাঙ্ককে ভাড়া দেয়। নীচের অংশটি পুরো খালি পড়ে রয়েছে। সেই সময়ে পুরসভাই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, বাজারটি নির্মাণ করার পরে একতলার ফাঁকা বড় ঘরে ব্যবসায়ীদের স্টল দেওয়া হবে।
পুরসভার এক আধিকারিক জানান, মাছের বাজারের পাশে ফাঁকা জমিতেও বহু দিন ধরেই সব্জি বিক্রেতারা ব্যবসা করেন। তাঁরাও পুরসভার কাছে দাবি করেন যে তাঁদেরও পুরসভার বাজারে অন্তর্ভুক্ত করা হোক। এমনকী, স্থানীয় বাসিন্দারাও ঢাকুরিয়ার এই বাজারের উন্নতির জন্য পুরসভার কাছে আবেদন করেন। পুরসভার এক আধিকারিক জানান, পুরসভা এই ব্যাঙ্ক থেকে ভাড়া পায়। তবে বাজারের রক্ষণাবেক্ষণে কিছু ঘাটতি থেকে গিয়েছে। |
|
এর পরেই পুর কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেন, পুরসভার নিজস্ব জায়গায় মাছের বাজার ছাড়াও সব্জি বাজারের জমি নিয়ে একটি বড় বাজার নির্মাণ করা যেতে পারে। এই বাজার পুরসভা এবং বেসরকারি উদ্যোগে যৌথ ভাবে হবে। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পুর কর্তৃপক্ষ স্থানীয় এক ডেভেলপারের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন।
গত পুরবোর্ডের আমলে বিল্ডিং দফতরের মেয়র পারিষদ এবং বর্তমানে ৯১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর দীপঙ্কর দে বলেন, “এই বাজারের উন্নয়নের জন্য সেই সময়ে আমি নিজেও তৎকালীন মেয়রের কাছে আবেদন জানাই এবং যৌথ উদ্যোগে এই প্রকল্প নির্মাণের কথা বলি। মেয়র পারিষদের বৈঠকেও এই বাজারের সংস্কারের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়। নির্বাচন এসে পড়ায় কাজ আর এগোয়নি। সম্প্রতি পুরসভার অধিবেশনেও এই বাজারের উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা হয়েছে।”
ওই ডেভেলপার আবিদার রহমান বলেন, “আমি পুরসভার কথামতো জমির মালিকের কাছ থেকে জমি কেনার ব্যাপারে উদ্যোগী হই। পুর কর্তৃপক্ষকেও চিঠি দিয়ে জমি কেনার বিষয়টি জানাই। জমির মালিককে অগ্রিমও দিই, শিলান্যাসও হয়। কিন্তু তার পরে বোর্ড পাল্টে যাওয়ায় কোনও কাজই এগোয়নি। আমি শুনেছি এই বোর্ড বাজার নির্মাণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং দরপত্র দিয়েই এই কাজ করা হবে। সে ক্ষেত্রে আমি পুরসভাকে সব রকম সাহায্য করব।” স্থানীয় কাউন্সিলর মধুছন্দা দেব বলেন, “এই বাজারের উন্নয়নের সঙ্গে এলাকার উন্নয়ন জড়িত। ইতিমধ্যেই পুরসভা বাজারটির সম্বন্ধে কিছু তথ্য জানতে চেয়েছে। সেগুলিও পুরসভায় জমা দেওয়া হয়েছে বলে শুনেছি।” |
ছবি: পিন্টু মণ্ডল |
|
|
|
|
|