দক্ষিণ কলকাতা: গড়িয়া, সোনারপুর
আশ্বাস
বিপজ্জনক যাত্রা
রাসরি বাস নেই। ফলে চম্পাহাটি, সীতাকুণ্ড, বেগমপুর কাটাখাল এবং সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দাদের ঘটকপুকুর যেতে অটো, ট্রেকার এবং মোটরভ্যানই ভরসা। অভিযোগ, অনেক সময়ে বিপজ্জনক ভাবে যাতায়াত করতে হয়। এই যানগুলি অধিকাংশ সময়ে নিয়ম মেনে যাত্রী তোলে। ফলে ছোটোখাটো দুর্ঘটনা লেগেই থাকে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ‘এসডি ২৯’ নম্বর রুটের বাস ঘটকপুকুর থেকে তেমাথা হয়ে সোনারপুর চলে যায়। কিন্তু ঘটকপুকুর থেকে চম্পাহাটি বা বারুইপুর যাওয়ার কোনও বাস নেই। তা ছাড়া বাসিন্দাদের অভিযোগ, ওই বাসটি খুব কম চলে। আবার তেমাথা হয়ে ঘটকপুকুর পর্যন্ত রাস্তাটির হালও খুব খারাপ। দীর্ঘ দিন রাস্তাটি সারনো হয়নি। রাস্তার কারণেও দুর্ঘটনা ঘটেছে।
এলাকার বাসিন্দা সুমিত মণ্ডল বলেন, “কোনও বাস না থাকায় স্থানীয় অটোচালকেরা সামনে পিছনে চার জন করে মোট আট জন যাত্রী তোলেন। মোটরভ্যান এবং ট্রেকারগুলিও কোনও নিয়মের তোয়াক্কা না করে যাত্রী তোলে।” বারুইপুরের সিটু নিয়ন্ত্রিত অটো ইউনিয়নের নেতা বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী বলেন, “স্ট্যান্ড থেকে অটো বেরিয়ে গেলে কেউ আর নিয়ম মানতে চায় না।
এই অবস্থা আগেও ছিল, এখনও আছে।” তৃণমূল নিয়ন্ত্রিত অটো ইউনিয়নের নেতা গৌতম দাসের একই বক্তব্য।
তাঁর কথায়: “অটো চালকদের একাংশের নিয়ম না মানা অভ্যাস হয়ে গিয়েছে। সবে এক বছর হল ইউনিয়নগুলি আমাদের দখলে এসেছে। চালকেরা যাতে নিয়ম মেনে চলেন, আমরা সেই চেষ্টা করছি।”
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, চম্পাহাটি, বারুইপুর সংলগ্ন এলাকা থেকে প্রতি দিন কয়েক লক্ষ লোক ঘটকপুকুর যান। কিন্তু প্রশাসন এই এলাকায় যান সমস্যা সামধানে উদ্যোগী হয়নি বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। প্রশাসনের কাছে বার বার আবেদন করেও কোনও লাভ হয়নি।
ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা জানিয়েছেন, দিনে যাতায়াত করা গেলেও সন্ধ্যা সাতটার পরে যাতায়াত করা আরও কষ্টকর। সন্ধ্যার পরে হাতে গোনা কয়েকটি অটো ছাড়া কোনও যান পাওয়া দুষ্কর। অনেক সময় গন্তব্যে পৌঁছনোর জন্য পায়ে হাঁটা ছাড়া অন্য কোনও উপায় থাকে না। চাকবেড়য়িা থেকে ভোজেরহাট, তাড়দহ যাওয়া জন্য ট্রেকার ছাড়া অন্য কোনও যান মেলে না বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। তাঁরা জানান, ট্রেকারগুলি অতিরিক্ত যাত্রী তোলে। ফলে এই রাস্তায় রোজই প্রাণ হাতে নিয়ে যাতায়াত করতে হয়।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার পরিবহণ দফতরের এক কর্তা বলেন, “চম্পাহাটি থেকে ঘটকপুকুর পর্যন্ত বিস্তৃত রাস্তাটির এই সমস্যা আমাদের নজরে এসেছে। নতুন করে রুট তৈরির কথা ভাবছি। খুব শীঘ্রই ওই রুটে বাস চলাচলের অনুমতি দেওয়া হবে।” বাসিন্দাদের অভিযোগ, বোদরা, চন্দনেশ্বর, ভাঙর থেকে ঘটকপুকুর যাওয়ার রাস্তায়ও যানের অভাব রয়েছে। এই সব এলাকার বাসিন্দারাও ট্রেকার, অটো এবং মোটরভ্যানে বিপজ্জনক ভাবে যাতায়াত করেন। পাশাপাশি, রাস্তার হালও দীর্ঘ দিন ধরে খারাপ। প্রশাসনের কাছে বার বার আবেদন জানিয়ে কোনও লাভ হয়নি বলে অভিযোগ।
বারুইপুরের এসডিও আরশাদ হাসান ওয়ার্সি বলেন, “ওই এলাকায় নতুন বাসরুট চালুর জন্য উচ্চতর কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছি। খারাপ রাস্তার সমস্যাও আমাদের নজরে এসেছে। সংশ্লিষ্ট বিভাগ আমাদের জানিয়েছে খুব শীঘ্রই রাস্তা সারাইয়ের কাজ শুরু হবে।”

ছবি: পিন্টু মণ্ডল




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.