|
|
|
|
|
|
পূর্ব কলকাতা
সমাধান সুদূর
|
তৃষ্ণা প্রখর |
দীক্ষা ভুঁইয়া |
রাসমণি বাজারের ভিতরে ১২২ নম্বর বস্তির সরু গলি। গলির দু’ধারে সারি সারি বালতি, জার, ড্রাম ভর্তি জল। অভিযোগ, পুরসভার জল ঠিকমতো আসে না। এলেও চাপ খুবই কম। তাই সারা দিনের চাহিদা মেটাতে এ ভাবে জল ধরে রাখা। যে যখন পারেন রাস্তার পাশের নলকূপ থেকেও জল ভরে রাখেন। ছবিটি কলকাতা পুরসভার ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের।
সকালে পুরসভার গাড়ি এসে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যেই জলের জন্য দীর্ঘ লাইন পড়ে গিয়েছে। শুরু হয়ে গেল কাড়াকাড়ি। গত কয়েক মাস ধরেই এই দৃশ্য দেখা যাচ্ছে কলকাতা পুরসভার ৩০, ৩৩ এবং ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডে। অভিযোগ, গরম বাড়ার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে জলকষ্ট বেড়েছে। কিছু এলাকায় খুব কম জল যাচ্ছে। |
|
কোনও এলাকায় একদমই জল পৌঁছয় না। শুধু বাসিন্দারাই নন এই অভিযোগ করছেন স্থানীয় কাউন্সিলররাও। বস্তি অঞ্চলে সমস্যা আরও তীব্র।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের বেলেঘাটা, সুরেন সরকার রোড, লেবু গোলা বস্তি বা চাল পট্টিতে জল পৌঁছয় না। অন্য জায়গায় চাপ খুব কম। পলতা, টালা, বাগমারি হয়ে এই এলাকায় দিনে দু’বার জল আসত। জলের চাপ কমার পাশাপাশি জল থাকার সময়ও কমে গিয়েছে। ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সিপিএমের রাজীব বিশ্বাস জানালেন, তাঁর এলাকায় মোট আটটি গভীর নলকূপ রয়েছে। তা ছাড়া পুরসভা জলের গাড়ি পাঠায়। কিন্তু চাহিদার তুলনায় যোগান খুবই কম।
একই অবস্থা ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডেরও। কালিতারা বসু লেন, রাসমণি বাজার রোড, অবিনাশ ব্যানার্জি লেন, লাতাফাত হোসেন লেন, ১৩২ এবং ৯এ বেলেঘাটা মেন রোডে কার্যত জল যায় না বলে অভিযোগ। ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ফরওয়ার্ড ব্লকের ঝুমা দাস বললেন, “পুরসভার কাছে জলের গাড়ি চেয়েও পাওয়া যায় না। প্রতি দিন অভিযোগপত্র জমা পড়ছে। কিন্তু কোনও ব্যবস্থাই করতে পারছি না।”
সমস্যার কথা স্বীকার করে ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর স্বপন সমাদ্দার বললেন, “আমার ওয়ার্ডের দু’-তিন জায়গায় জলের সমস্যা রয়েছে। এ সব অঞ্চলের পাইপ লাইনগুলি পুরনো। অধিকাংশ লাইনে আস্তরণ পড়ে চাপ কমে গিয়েছে। আমি বরো চেয়ারম্যান থাকাকালীন এই ওয়ার্ডগুলিতে জলসমস্যা মেটাতে বেলেঘাটায় একটি বুস্টার পাম্পিং স্টেশন তৈরির কথা বলেছিলাম। কিন্তু জায়গার অভাবে তৈরি করা যায়নি। সেটি তৈরি হলে সমস্যা মিটবে।” আরও খবর, সরবরাহে কিছু গলদ থাকায় জল সরবরাহে সমস্যা হচ্ছে।
যদিও সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে পুরসভার এক আধিকারিক বলেন, “গরমে জলের চাহিদা বাড়ে। গ্রীষ্মে জলস্তর নেমে যাওয়ায় নলকূপে সমস্যা হয়। তা ছাড়া খুব বেশি সমস্যা আছে বলে জানা নেই।”
অন্য ওয়ার্ডে তেমন না হলেও ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডে যে জল সমস্যা রয়েছে তা স্বীকার করে মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “ওখানে একটি বুস্টার পাম্পিং স্টেশনের জন্য আমরা চেষ্টা করছি। জায়গা খোঁজা হচ্ছে।” |
ছবি: শুভাশিস ভট্টাচার্য |
|
|
|
|
|