পূর্ব কলকাতা: লেকটাউন, বারাসাত
জট কাটাতে
সরছে পার্কিং
শোহর রোড, টাকি রোড এবং ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের বারাসত এবং মধ্যমগ্রামের গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলির ১০০ মিটারের মধ্যে পার্কিং বন্ধ করে যানজট কমাতে উদ্যোগী হল প্রশাসন। নিয়ম ভাঙলে রয়েছে শাস্তির বিধানও।
যশোহর রোড, টাকি রোড এবং ৩৪ জাতীয় সড়ক তিনটিই গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা। অভিযোগ, তিনটি রাস্তার ব্যস্ত মোড়ে ম্যাটাডর, মিনিডর, অটোরিকশা ও ট্যাক্সি অবৈধ ভাবে পার্ক করা থাকে। ফলে যাতায়াতে অসুবিধা হয়। হয় দীর্ঘ যানজটও।
বাসিন্দারা জানান, মধ্যমগ্রাম চৌমাথার মোড়ে বাদু রোড ও যশোহর রোডের সংযোগস্থলে সার দিয়ে ট্যাক্সি, মালবাহী গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকে। অটোরিকশার স্ট্যান্ড রাস্তা ছাড়িয়ে ফুটপাথে উঠে এসেছে। জায়গার অভাবে রাস্তার মাঝেই বাস থেকে নামতে হয়। হামেশাই যানজট লেগে থাকে।
বারাসতের চাঁপাডালি মোড়েও একই ছবি। অভিযোগ, ব্যস্ত এই মোড়ের চার দিকে বেআইনি পার্কিং রয়েছে।
সেখানে ট্যাক্সি ও অটোরিকশার পাশাপাশি ম্যাটাডর ও মিনিডরও পার্ক করা থাকে। কাছেই সিনেমা হলের দিকে একাধিক বাস দাঁড়িয়ে থাকে। যাত্রী ওঠাতে-নামাতে মোটরভ্যানগুলিও রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকে। ফলে যানজট হয়। কাটতে অনেক সময় লাগে।
এই মোড়ের কাছেই তিতুমির বাস টার্মিনাস। বাসগুলি টার্মিনাস থেকে বেরিয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে যাত্রী তোলে। আর ফুটপাথ জুড়ে অটোরিকশা, ম্যাটাডর, মিনিডর স্ট্যান্ড। পথচারীরা জানান, ডাকবাংলো মোড়ে ভ্যানের জন্য যাতায়াতের পাশাপাশি যানজটও হয়। ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের কলোনি মোড় ও হেলাবটতলা মোড়েও অটোরিকশা, ট্যাক্সি, ম্যাটাডর এবং ভ্যানের পার্কিংয়ের জন্য নানা সমস্যা হয়।
প্রশাসন সূত্রে খবর, উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসক ইতিমধ্যেই বেআইনি পার্কিং তোলার নির্দেশিকা বারাসত এবং মধ্যমগ্রাম পুরসভার চেয়ারম্যানদের কাছে পাঠিয়েছেন। পাশাপাশি পুলিশ সুপার, বারাসতের মহকুমা শাসক, এসডিপিও এবং বিভাগীয় পরিবহণ দফতরকেও নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে। নির্দেশিকা অনুসারে কোনও জনবহুল রাস্তার মোড়ের ১০০ মিটারের মধ্যে কোনও পার্কিং করা যাবে না। এমনকী কোনও যান যাত্রী ওঠাতে-নামাতে পারবে না। ট্রাফিক সিগন্যাল, বাতিস্তম্ভ, পথ নির্দেশিকার সাইন বোর্ডের পাশেও গাড়ি রাখা যাবে না। নিয়ম ভাঙলে শাস্তির ব্যবস্থাও রয়েছে।
পথচারী অগ্নিবেশ দত্তের কথায়: “বেআইনি পার্কিং তুলে দিলে যাতায়াতে খুব সুবিধা হবে।” কলেজ ছাত্রী অনুরাধা বিশ্বাস বলেন, “পার্কিংয়ের জন্য বাসে উঠতে-নামতে অসুবিধা হয়।” বাসচালক স্বপন মণ্ডল বলেন, “অবৈধ পার্কিংয়ের জন্য রাস্তার মাঝেই বাস থামিয়ে দিতে হয়। পার্কিং সরলে যানজট কমবে। গতি বাড়বে।”
উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসক সঞ্জয় বনসল বলেন, “মোড়গুলি দুর্ঘটনাপ্রবণ। পুরসভার সঙ্গে আলোচনা করে মোড়গুলির ১০০ মিটারের মধ্যে গাড়ি পার্ক না করার নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। নির্দেশিকা অমান্য করলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পুলিশ ও পুরসভাকে বেআইনি পার্কিং তুলে দেওয়ার জন্য লিখিত নির্দেশও দিয়েছি।”
উত্তর ২৪ পরগনার পুলিশ সুপার চম্পক ভট্টাচার্য বলেন, “শীঘ্রই অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে বারাসত ও মধ্যমগ্রামের গুরুত্বপূর্ণ পাঁচটি মোড় ও সংলগ্ন এলাকা থেকে অবৈধ পার্কিং তোলার কাজ শুরু হবে।”
বারাসত পুরসভার চেয়ারম্যান তৃণমূলের সুনীল মুখোপাধ্যায় বলেন, “পার্কিং থেকে নানা সমস্যা হয়। যে কোনও মুহূর্তে বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। রাস্তার পাশে বা মাঠের ধারে দীর্ঘ ক্ষণ গাড়ি পার্ক করা থাকলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।”
মধ্যমগ্রাম পুরসভার চেয়ারম্যান ও স্থানীয় বিধায়ক তৃণমূলের রথীন ঘোষ বলেন, “জেলাশাসকের নির্দেশিকা পেয়েছি। পুলিশ খুব শীঘ্রই ব্যবস্থা নেবে বলে জানিয়েছে।”

ছবি: সুদীপ ঘোষ




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.