মহারাষ্ট্র- ২ (কৈলাস, লিনেকর)
বাংলা ১ (তারিফ)
|
শুরুর আগেই বিদায়ের ঘণ্টা বেজে গেল বাংলার। সন্তোষ ট্রফিতে হ্যাটট্রিক করা তো দূরের কথা, এখন বাংলার সেমিফাইনাল ভবিষ্যতেও অন্ধকারের কালো ছায়া ঢুকে পড়ল।
শুক্রবার সবাইকে চমকে দিয়ে কুড়ি মিনিটের ধুলো ঝড়, সঙ্গে এক পশলা বৃষ্টি কটকের তাপমাত্রা এক ধাক্কায় কমিয়ে দিয়েছে। মেঘ না চাইতেই বৃষ্টি পেয়ে অবাক কটকবাসীরা। ঠিক যেমন মহারাষ্ট্রের কাছে প্রথম ম্যাচে বাংলার অপ্রত্যাশিত হারে তাঁরা অবাক।
কটকে সন্তোষ ট্রফি নিয়ে তেমন কোনও উন্মাদনা নেই। তবে বাংলা দল নিয়ে উৎসাহ আছে। স্টেডিয়ামের বাইরে একটা কাট আউটও ঝোলানো হয়েছে। যাতে লেখা, ‘থ্রি চিয়ার্স ফর বেঙ্গল।’ ৩১ বারের চ্যাম্পিয়নকে দেখার জন্যই বারাবাটি স্টেডিয়ামে এসেছিলেন কিছু ফুটবলপ্রেমী। কিন্তু শুক্রবার যে জঘন্য ফুটবল খেলল সাব্বির আলি-র দল, তাতে পরের ম্যাচে লোক হওয়ার সম্ভাবনা কম। প্রথম দিনেই হাততালির বদলে বাংলার কপালে জুটল টিটকিরি। ম্যাচ শেষ হওয়ার পরেই গ্যালারি থেকে যা অনবরত ভেসে এল।
বাংলার হারের কারণ অবশ্য একটা নয়, অনেক। যাঁদের নিয়ে সন্তোষের দল গড়েছেন সাব্বির, তাঁদের মধ্যে জেতার তাগিদটাই নেই। কোনও সঠিক পরিকল্পনা নেই। আর থাকলেও সেটাকে ফুটবলাররা কাজে লাগাতে পারলেন না। সবচেয়ে করুণ অবস্থা বাংলার দুই স্ট্রাইকার তারিফ আমেদ ও তন্ময় কুণ্ডুর। দু’জনের গড় বয়স ২৩। কিন্তু মাঠে যে গতিতে দৌড়লেন, দেখে মনে হবে চল্লিশের উপর বয়স। ওঁদের বদলে দীপেন্দু বিশ্বাসকে নিলে বোধহয় ভাল করতেন সাব্বির। আর রক্ষণ? চোখে দেখা যাচ্ছে না। সাগ্রাম মাণ্ডি এবং গৌর নস্কররা কেন বড় দলে সুযোগ পান না, সেটা তাঁদের খেলা দেখেই বোঝা গেল। মহারাষ্ট্রের দু’টো গোলে সমান দোষী বাংলার দুই স্টপারও।
সাব্বির আলির স্ট্র্যাটেজি নিয়েও প্রশ্ন উঠতে বাধ্য। তপন মাইতির মতো অভিজ্ঞ ফুটবলার থাকতে দীপঙ্কর দাস কিংবা সন্তোষ ওঁরাওকে প্রথম দলে রাখার কারণ কী, সেটা এখনও পরিষ্কার নয়। বিরতির পরে তপন নামতেই জ্বলে উঠে বাংলা। যদিও সেই চাপ দিয়ে বেশিক্ষণ ঠেকিয়ে রাখা যায়নি ইরেনীয়র দলকে। ম্যাচ শেষ হওয়ার মিনিট কুড়ি আগে ২-০ করে জয়ের পতাকা তুলে দেয় মহারাষ্ট্র। তবে মিনিট দু’য়েকের মধ্যে আবার প্রতি আক্রমণে ব্যবধান কমান তারিফ। তাতে অবশ্য শেষ রক্ষা হয়নি।
ম্যাচের স্কোরলাইন ২-১’এর বদলে আরও বেশি হতে পারত, যদি মহারাষ্ট্র কোচ ইরেনীয় ভাজের হাতে কৈলাস পাটিলের পাশে আরও একটা ভাল মানের স্ট্রাইকার থাকত। ম্যাচ শুরুর কুড়ি মিনিটের মধ্যেই গোল করে দলকে এগিয়ে দেন কৈলাস। একটি গোল করলেন, একটি করালেন। বাংলার গ্রুপের অন্য ম্যাচে পঞ্জাবকে ২-১ হারাল কেরল। অর্থাৎ এখন যা পরিস্থিতি, শেষ দু’টো ম্যাচ জিতলেও শেষ চারের রাস্তা মসৃণ হচ্ছে না বাংলার।
আই লিগে ইউনাইটেড সিকিমের জন্য ফুটবলার বাঁছতে মাঠে খেলা দেখতে এসেছিলেন ফিলিপ ডি’রাইডার। কাকে পছন্দ হল? সেটা বলতে না চাইলেও, এটা নিশ্চিত তাঁর নোট বুকে বাংলার কোনও ফুটবলারের নাম থাকছে না। |