|
|
|
|
মিউনিখে যেন জার্মানি বনাম ইংল্যান্ড
|
নিজস্ব প্রতিবেদন |
চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে খেলতে নামার আগে বায়ার্ন মিউনিখের অভিজ্ঞ কোচ জাপ হেইঙ্কেস সুকৌশলে দুটো যুদ্ধ ছড়িয়ে দিলেন চেলসি শিবিরে।
প্রথমে প্রতিপক্ষ কোচ রবের্তো দি মাতিওর প্রশংসা করে বলে দিলেন, “আমি আব্রামোভিচ হলে ওকেই কোচ রেখে দিতাম। দারুণ বুদ্ধিমান কোচ।” পরে চেলসির ভয়ঙ্করতম অস্ত্র দ্রোগবার প্রশংসা করেও বলে দিলেন, “ও মাঠে দারুণ নাটক করে।” দ্রোগবা কি আসলে ডাইভার? প্রশ্ন করলে বায়ার্ন কোচের ওই মন্তব্য। দ্রোগবা ও রেফারিকে চাপে রাখতে।
ঘরের মাঠে খেলতে নামাই বায়ার্নের সবচেয়ে বড় সুবিধে, মনে করছেন অনেক বিশেষজ্ঞ। আর্সেন ওয়েঙ্গার কিন্তু উল্টো পথে হাঁটছেন। তাঁর মতে, ঘরের মাঠে নিজেদের দর্শকদের সামনে খেলাই বড় চাপ। দুই কোচেরই বড় চাপ, কী ভাবে ফাইনালে কার্ড দেখা ফুটবলারদের জায়গাগুলো ভরাট করবেন। চেলসির কোচ দি’মাতিওর বাড়তি চিন্তা, তোরেসকে কি প্রথম থেকে ব্যবহার করবেন? কালু, মালুদা, এসিয়েনকে কি এক সঙ্গে খেলাবেন? চেলসির রিজার্ভ বেঞ্চ অনেক শক্তিশালী। টেরির অভাব ঢাকতে চেলসির ফুটবলার রয়েছে। বায়ার্নে ব্যাডস্টুবেরের অভাব ঢাকার মতো স্টপার নেই। ফাইনালে অ্যাসলে কোল, ফিলিপ লামের মতো দুই সাইডব্যাককে বড় ভূমিকা নিতে হবে।
বায়ার্নের দুই তারকা লাম এবং সোয়াইস্টাইগারকে সাংবাদিক সম্মেলনে পাওয়া গেল বেশ ফুরফুরে মেজাজে। সাত দিন আগে জার্মান কাপ ফাইনালে পাঁচ গোলে হারের ব্যাপারটা মোটেই গুরুত্ব দিলেন না। সোয়াইনস্টাইগারের মন্তব্য, “আমরা ফাইনালে উঠেছিলাম। হেরে যাই চ্যাম্পিয়নদের কাছে। এটা খুব খারাপ নয়।” সোয়াইনস্টাইগারকে প্রশ্ন করা হয়, দু’বছর আগে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে ইন্টার মিলানের কাছে হারের ঘটনা কি আপনাদের চাপে ফেলবে? তিনি বলেন, “সে বারের ভুল এ বার করব না। সে বার রিবেরি খেলেনি। এ বার ও খেলবে। আমার মনে হয়, চেলসি বার্সেলোনার বিরুদ্ধে যেমন রক্ষণাত্মক খেলেছিল, এ বার তেমন খেলবে না। অনেক আক্রমণাত্মক খেলবে।” |
|
আজ ফাইনালের
দুই প্রতিপক্ষ |
|
|
এক নজরে |
বায়ার্ন মিউনিখ |
চেলসি |
সেরা পাঁচ |
রবেন, রিবেরি, গোমেজ, সোয়াইনস্টাইগার, নুয়ের। |
দ্রোগবা, ল্যাম্পার্ড, এসিয়েন, কোল, মাতা। |
কারা নেই |
ব্যাডস্টুবের, আলাবা, গুস্তাভো। |
টেরি, ইভানোভিচ, র্যামিরেজ, মেইরিলেজ। |
শক্তি ও দুর্বলতা |
বায়ার্নের সুবিধে ঘরের মাঠ। অসুবিধে নড়বড়ে রক্ষণ। |
চেলসির সুবিধে রিজার্ভ বেঞ্চ। অসুবিধে অধিনায়ক জন টেরির অভাব। |
সম্ভাব্য দল |
নুয়ের, লাম, রাফিনা, বোয়াতেং, তিমোসচুক, ক্রুস, সোয়াইনস্টাইগার, রবেন, রিবেরি, মুলার, গোমেস। |
চেক, বোসিঙ্গা, লুই, কাহিল, কোল, আসিয়েন, মিকেল, ল্যাম্পার্ড, কালু, মাতা, দ্রোগবা। |
|
বায়ার্ন কোচ চেলসির তিন ফুটবলারকে আলাদা করে চিহ্নিত করেছেন। দ্রোগবা, ল্যাম্পার্ড এবং পের চেক। তাঁর ফুটবলারদের উদ্দেশে বায়ার্ন কোচের বার্তা, ইতিহাসের সাক্ষী হওয়ার সুযোগ নষ্ট করলে চলবে না। “ঘরের মাঠে ফাইনালে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ কেউই জেতেনি। এই সুযোগ হয়তো আর আসবে না। এটা কাজে লাগাতে হবে।” চেলসি কোচ দি’মাতিও সাংবাদিক সম্মেলনে এসেছিলেন দ্রোগবা, ল্যাম্পার্ডকে নিয়েই। ল্যাম্পার্ডের কথায়, “নাপোলির কাছে ইতালিতে হারের পরে ভাবিনি, আমরা ফাইনালে খেলব। পরে নিজেদের মাঠে জেতাটা আমাদের টার্নিং পয়েন্ট। আমাদের মনোবল অনেক বেড়ে গিয়েছে।”
ইউরো কাপের আগে ইংল্যান্ড বনাম জার্মানির মহড়াএই ম্যাচটাকে এ ভাবে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। ল্যাম্পার্ড বললেন, “আমরা ছোট থেকেই জার্মানিকে প্রচণ্ড সমীহ করেছি। ওদের কাছে অনেক বার হেনস্থা হতে হয়েছে। কিছু কিছু পরিস্থিতিতে ওদের মনোবল দারুণ জায়গায়।” বায়ার্ন কোচ হেইঙ্কেস এই প্রসঙ্গে মন্তব্য করেন, “পেনাল্টিতে আমরা সফল, কেননা জার্মানরা মানসিক ভাবে দারুণ শক্তিশালী।”
হোসে মোরিনহো থেকে অনেক তারকাই চেলসির জয়ের পক্ষে গলা ফাটাচ্ছেন। তবে ইংল্যান্ডের অনেকেই আবার চেলসির জয় চাইছেন না। এঁদের এক জন ল্যাম্পার্ডের মেসো মশাই। টটেনহ্যামের কোচ হ্যারি রেডন্যাপ। চেলসি জিতলে পরের বার আর চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলা হবে না টটেনহ্যামের। তাই তিনি প্রকাশ্যেই বলছেন, বায়ার্নের জয় চাই।
ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো কী ভবিষ্যদ্বানী করছেন ফাইনাল নিয়ে? রোনাল্ডো কিন্তু সতর্ক। “অধিকাংশ লোকে বলছে, বায়ার্ন সহজে জিতবে। আমি কিন্তু মনে করি না। ভুলে যাবেন না, চেলসি বার্সেলোনাকে হারিয়েছে। কারা জিতবে জানি না। তবে চেলসি মারাত্মক শক্তিশালী বলে আমি বেটিংয়ের ঝুঁকি নেব না।” |
|
|
|
|
|