দারিদ্রের সঙ্গে লড়াই করেই কৃতী মনোতোষ
দারিদ্রের সঙ্গে লড়েই জয়েন্ট-এন্ট্রাসে সফল হলেন মেদিনীপুরের মনোতোষ দাস। মেডিক্যালে ১৫৮ র্যাঙ্ক করেছেন। ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ৫৭। জয়েন্টে তাঁর এই ফল দেখে পরিজন-পড়শিরা যতই খুশি হোন, মনোতোষের মনে আশঙ্কা, ‘মেডিক্যালে পড়ার সুযোগ পাব তো?’ চরম দারিদ্রের মধ্যেই বড় হওয়া। বাবা আলোক দাস গমকলের শ্রমিক। মা মায়াদেবী গৃহবধূ। আলোকবাবুর দুই ছেলে। মনোতোষ ছোট। বাড়ি মেদিনীপুর শহরের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের তেলিপাড়ায়। যৌথ পরিবার। পুরনো দিনের বাড়ি। সামান্য বৃষ্টি হলেই ছাদ চুঁইয়ে জল পড়ে। একটিই ঘর। সেই ঘরেই থাকা। পড়াশোনা। রান্না। ছেলে জয়েন্টে ভাল রেজাল্ট করেছে জেনে তাই চোখের জল চাপতে পারেননি মায়াদেবী।
— নিজস্ব চিত্র।
তাঁর কথায়, “সংসার চালাতেই হিমসিম খেতে হয়। পড়ার খরচ আসবে কোথা থেকে? শিক্ষকেরা পাশে ছিলেন বলেই ও এতদূর এগোতে পেরেছে।” ছোট থেকেই পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ মনোতোষের। প্রাথমিকের পড়াশোনা অলিগঞ্জ স্কুলে। তারপর পঞ্চম শ্রেণিতে কলেজিয়েট স্কুলে ভর্তি হন। এই স্কুলের শিক্ষক দীপঙ্কর সন্নিগ্রাহী মনোতোষকে নিজের ছেলের মতো দেখেন। পাশে থেকে সব সময় তাঁকে উৎসাহ দেন। মায়াদেবীর কথায়, “দীপঙ্করবাবু প্রায়ই বাড়িতে এসে পড়াশোনার খোঁজ নিতেন। নানা ভাবে সহযোগিতা করতেন।” পরিবারের এই অবস্থার কথা জেনে গৃহশিক্ষকেরা কোনও ফি না-নিয়েই পড়িয়েছেন। মাধ্যমিকে প্রাপ্ত নম্বর ছিল ৭১৫। এ বার উচ্চমাধ্যমিকেও ভাল ফল হবে বলে আশা করছেন মেদিনীপুর শহরের এই কৃতী ছাত্র। কিন্তু অজানা এক আশঙ্কা তাঁকে যেন তাড়া করে বেড়াচ্ছে। মনোতোষ তাই বলছিলেন, “মেডিক্যালে পড়ার ইচ্ছে রয়েছে। কিন্তু পড়াশোনার খরচ চালানোর মতো সামর্থ্য নেই পরিবারের। তাই জানি না, এর পর কী হবে!” কলেজিয়েট স্কুলের শিক্ষক দীপঙ্করবাবু বলেন, “মনোতোষের এই রেজাল্ট আমাদের সকলকেই খুশি করেছে। আমরা জানতাম ও পারবে। ভবিষ্যতে ও যাতে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারে, সে দিকেও আমাদের নজর থাকবে।” আলোকবাবুদের আশা, নিশ্চয়ই সহৃদয় কেউ ছেলের পাশে দাঁড়াবেন। মনোতোষ মেডিক্যালে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাবে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.