|
|
|
|
লালু-মায়ার আপত্তি হাতিয়ার, লোকপাল হয়তো ঠান্ডা ঘরেই |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
লোকায়ুক্ত প্রশ্নে বিতর্ক দূরের কথা, লোকপাল বিলই আপাতত চাইছেন না মুলায়ম সিংহ, মায়াবতী, লালু প্রসাদেরা। কংগ্রেস নেতৃত্বকে তাঁরা এ কথাও জানিয়ে দিয়েছেন যে, সংসদে ফের লোকপাল বিল পেশ করার চেষ্টা হলে, মহিলা সংরক্ষণ বিল পর্বের মতোই গোলমাল করে তা ভেস্তে দেবেন তাঁরা। আর এই তিন শরিক-সমর্থক দলকে সামনে রেখে লোকপাল বিলকেই এখন ঠান্ডা ঘরে পাঠানোর কৌশল নিয়েছে সরকার। যদিও সংসদে লোকপাল বিল পাশ করানোর জন্য সরকারের ‘আন্তরিক প্রয়াস’ তুলে ধরার কোনও ত্রুটি রাখছে না সরকার।
সকলকে জানান দিয়েই লোকপাল বিল নিয়ে বিরোধী ও শরিকদের সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছেন সলমন খুরশিদ-নারায়ণস্বামীরা। কিন্তু তলে তলে অন্য রাজনীতিও চলছে। লোকপাল বিল পাশ হলে সব থেকে ফাঁপরে পড়বেন মুলায়ম-মায়াবতী-লালু প্রসাদ-এইচ ডি কুমারস্বামীর মতো নেতারা। কারণ, তাঁদের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। অণ্ণা হজারের আন্দোলন মধ্যগগনে থাকার সময় মানুষের ভাবাবেগ আঁচ করে মায়া-মুলায়মরা লোকপাল বিলে সায় দিয়েছিলেন। তা ছাড়া তখন সামনেই ছিল উত্তরপ্রদেশ-সহ ৫ রাজ্যের ভোট। কিন্তু অণ্ণাদের আন্দোলন ঝিমিয়ে পড়ায় লোকপাল বিল নিয়েও বেঁকে বসেছেন তাঁরা। কেন্দ্রে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে এঁদের মতকে গুরুত্ব দিতে বাধ্য কংগ্রেসও।
সরকার যে লোকপাল নিয়ে গড়িমসি করছে, তা বুঝতে পারছেন বিজেপি নেতৃত্বও। তাঁরা বলছেন, গত অধিবেশনের মতো সংসদের শেষ দিনে বিল আনা হলে বরদাস্ত করা হবে না। বিজেপির মুখপাত্র শাহনওয়াজ হুসেন বলেন, “সরকার ও কংগ্রেস দুর্নীতি রুখতে চায় না। সে জন্যই লোকপাল বিল নিয়ে ক্রমশ পিছু হটছে। এখন রাস্তায় নেমে কেউ আন্দোলন করছে না দেখে কংগ্রেস সুযোগ নিতে চাইছে। কিন্তু সংসদের অধিবেশন শেষ হলেই বিজেপি লোকপাল নিয়ে রাস্তায় নামবে।” গত অধিবেশনের শেষ দিনে সরকার যখন লোকপাল বিলটি আনে, তখন শুধু ঐক্যবদ্ধ বিরোধীরাই নয়, শরিক তৃণমূলও কড়া আপত্তি জানিয়েছিল। রাজ্যে লোকায়ুক্ত গঠনের বিষয়টি বিল থেকে বাদ দেওয়ার দাবি জানায় তারা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় রাজ্যের অধিকারে হস্তক্ষেপ করছে কেন্দ্র।” শরিক ও বিরোধীদের মন পেতে কয়েক দিন ধরে সরকারের চার মাথা সলমন খুরশিদ, কপিল সিব্বল, পবন বনশল ও নারায়ণস্বামী দফায় দফায় তাঁদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বিরোধী ও শরিকদের তাঁরা জানিয়েছেন, বিল থেকে লোকায়ুক্ত প্রসঙ্গ বাদ দিতে সরকার প্রস্তুত। তবে সিবিআই-কে পরিচালনার অধিকার লোকপালের হাতে দেওয়া হবে না। তবে লোকপালকে অপসারণের এক্তিয়ার সংসদের হাতে তুলে দিতে সরকার রাজি।
বিরোধী ও শরিকদের সঙ্গে এ ভাবে আলোচনা চালিয়ে লোকপাল প্রশ্নে একটা তৎপরতার ছবি এরই মধ্যে তুলে ধরেছে সরকার। কিন্তু প্রশ্ন হল, বিলটি কি আদৌ এ বারের অধিবেশনে পেশ হবে? বাজেট অধিবেশনের আর মাত্র দু’দিন বাকি। কিন্তু এখনও বিল সংশোধনে অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিসভার বৈঠকই ডাকা হয়নি। সপা-বসপা-আরজেডি-র আপত্তির কথাই বড় করে তুলে ধরা হচ্ছে। তবে সরকারের একটি সূত্র থেকে বলা হচ্ছে, চলতি অধিবেশনের শেষ দিনে বিলটি সংসদে পেশ করাও হতে পারে। কিন্তু তা-ও যে স্রেফ লোক দেখানো হবে, তা নিয়েও সংশয় নেই। কারণ লালু-মুলায়মরা তো বাধা দেবেনই, আলোচনা ছাড়া এ ভাবে বিল পাশ করাতে গেলে বাধা দেবে বিজেপি-ও। |
|
|
|
|
|