সমস্যা হবে না জমি, দাবি রাজ্যের
অযোধ্যা পাহাড়ে এ বার দ্বিতীয় জলবিদ্যুৎ প্রকল্প
বিষ্যতে পশ্চিমবঙ্গে শিল্প আসতে পারে, এমনটা ধরে নিয়ে পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড়ে আরও একটা জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ার সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার। হাজার মেগাওয়াটের ওই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের প্রস্তাবটি সম্প্রতি রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার পরিচালন পর্ষদের বৈঠকে অনুমোদিত হয়েছে। এর জন্য সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা খরচ হবে বলে বণ্টন সংস্থা-সূত্রের খবর।
কিন্তু যেখানে জমি-জটের ফাঁসে কাটোয়ায় এনটিপিসি-র তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাজ আটকে রয়েছে, একলপ্তে জমি না-পাওয়ায় এলঅ্যান্ডটি’র প্রস্তাবিত বিদ্যুৎ প্রকল্পও আপাতত হিমঘরে, সেখানে নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্র গড়তে গিয়ে জমি কোনও সমস্যা হবে না?
রাজ্য সরকারের অবশ্য দাবি: পুরুলিয়ার ওই প্রকল্প রূপায়ণে জমি কোনও বাধা হয়ে দাঁড়াবে না। সরকারি সূত্রের বক্তব্য, বিদ্যুৎকেন্দ্রটি গড়ে তুলতে যে ৪০-৪৫ একর জমি লাগবে, তা বন দফতরের হাতেই রয়েছে। আইন মোতাবেক তা বণ্টন সংস্থার নামে হস্তান্তর করে দেওয়া হবে। তার পরেও প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে, জঙ্গল কেটে প্রকল্প তৈরিতে কেন্দ্রীয় বন ও পরিবেশ মন্ত্রকের ছাড়পত্র কী ভাবে মিলবে?
রাজ্যের বিদ্যুৎ-কর্তাদের দাবি, সেই ছাড়পত্র পেতেও তাঁদের কোনও সমস্যা হবে না। কিন্তু যে রাজ্যে আশা অনুযায়ী শিল্প গড়ে না-ওঠায় আগামী বছর থেকে বিদ্যুৎ উদ্বৃত্ত থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে, সেখানে এত খরচ করে হাজার মেগাওয়াটের আর একটা বিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরির যৌক্তিকতা কোথায়?
বিদ্যুৎ দফতরের এক কর্তার জবাব, “চাহিদা কম থাক বা উদ্বৃত্ত হোক, বিদ্যুৎক্ষেত্রে অন্তত নিশ্চিন্তে বসে থাকার যো নেই।” ওঁদের বক্তব্য: বিদ্যুৎ শিল্পের নিয়মই হল, আগামী দশ বছরের পরিস্থিতি অনুমান করে আগাম পরিকল্পনা ছকে রাখতে হবে। তা-ই করা হচ্ছে। দফতরের আর এক কর্তার মতে, পুরুলিয়ার নতুন জলবিদ্যুৎ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হতে আট-ন’বছর লেগে যাবে। তার মধ্যে রাজ্যে বিদ্যুতের চাহিদা হঠাৎ বেড়েও যেতে পারে। “আর হঠাৎ চাহিদা বাড়লে তো রাতারাতি উৎপাদনকেন্দ্র বানিয়ে ফেলা যাবে না! তাই প্রস্তুত থাকা দরকার।” বলেন তিনি।
বিদ্যুৎ দফতরের খবর: ২০১৯-২০ সালের মধ্যে পুরুলিয়ার এই দ্বিতীয় জলবিদ্যুৎ প্রকল্পে যাতে বাণিজ্যিক ভাবে উৎপাদন শুরু করা যায়, আপাতত সেই লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছে সরকার। আন্তর্জাতিক দরপত্র (গ্লোবাল টেন্ডার) মারফত নির্মাণসংস্থা বাছাই করে ২০১৪-র মধ্যে নির্মাণকাজের বরাত দিয়ে দেওয়া হবে। বণ্টন সংস্থার এক কর্তা জানিয়েছেন, প্রকল্প-ব্যয়ের ৭০% বাজার থেকে ঋণ নেওয়া হবে। বাকি ৩০% বণ্টন সংস্থা জোগাবে, নিজেদের উপার্জন থেকে।
পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড়ে এখন বণ্টন সংস্থার ৯০০ মেগাওয়াটের একটি জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র চালু রয়েছে। পূর্বতন বামফ্রন্ট জমানায় জাপানি ঋণ নিয়ে সেটি গড়ে তোলা হয়। তখন খরচ পড়েছিল প্রায় ২,৯০০ কোটি টাকা। দ্বিতীয় কেন্দ্রটির জন্য জায়গা চিহ্নিত হয়েছে এর দু’কিলোমিটার দূরে, যেখানে আছে সেচ দফতরের একটা বড় জলাধার। সেটিকে আরও গভীর করে খুঁড়ে সেখানে আরও বেশি জল ধরে রাখার ব্যবস্থা হবে। এবং সেই জল বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহারের পাশাপাশি সেচের কাজেও লাগানো হবে।
বিদ্যুৎ দফতর সূত্রের খবর: কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ মন্ত্রকের অধীনস্থ নজরদারি সংস্থা ‘সেন্ট্রাল ইলেকট্রিসিটি অথরিটি (সিইএ)’ ইদানীং এই ধরনের জলাধার-ভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে বেশি জোর দিচ্ছে। তাদের রিপোর্ট অনুযায়ী, এর মাধ্যমে সারা দেশে মোট ৯৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। যার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ-সহ পূর্বাঞ্চলে মিলতে পারে কমপক্ষে ন’হাজার মেগাওয়াট।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.