কমিশনারেট তৈরি হয়েছে বেশ কয়েক মাস হল। কিন্তু থানার পরিকাঠামোর যে কার্যত কিছুই উন্নতি হয়নি, তা ফের প্রমাণ হল দমদমে একই রাতে তিনটি চুরির ঘটনায়। বুধবার রাতে পূর্ব সিঁথির একটি আবাসনের তিনটি ফাঁকা ফ্ল্যাটে তালা ভেঙে লক্ষাধিক টাকা ও বেশ কয়েক ভরি সোনার গয়না চুরি গিয়েছে বলে অভিযোগ। ওই তিনটি ফ্ল্যাটের একটি এক পুলিশকর্মীর। এলাকাবাসীর অভিযোগ, গত কয়েক মাসে দমদমে বেশ কয়েকটি চুরির ঘটনা ঘটলেও রাতে পুলিশের টহলদারি জিপের দেখা মেলে না বললেই চলে। পুলিশের অবশ্য দাবি, আগের থেকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কিছুটা ভাল হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, দমদম এলাকা ব্যারাকপুর কমিশনারেটের আওতাধীন হওয়ার পরেও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির সে রকম কোনও উন্নতি চোখে পড়েনি। গত দু’মাসে সিঁথি এলাকায় বাড়ি থেকে ল্যাপটপ, ক্যামেরা, মোটরবাইক, ব্যাগ ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। দমদম থানা টহলদারি জিপের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে বলে দাবি করলেও কার্যত তারাও স্বীকার করেছে যে, থানাগুলির পরিকাঠামো এখনও আগের মতোই রয়েছে। যদিও কমিশনারেট হওয়ার পরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতির জন্য বেশ কিছু নতুন অফিসারকে নিয়োগ করা হয়েছে বলে পুলিশের দাবি। ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার সঞ্জয় মুখোপাধ্যায় বলেন, “পরিকাঠামো অনুযায়ী আইনশৃঙ্খলার উন্নয়নের চেষ্টা হচ্ছে। গত কয়েক মাসে গড়ে অপরাধ অনেকটাই কমেছে। আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করছি।”
দমদমে পূর্ব সিঁথির ক্রস রোডের যে আবাসনে তিনটি ফ্ল্যাটে চুরি হয়, সেটি জনবহুল এলাকায়। প্রতিটি তলে দু’টি করে ফ্ল্যাট। বুধবার রাতে দোতলার একটি ফ্ল্যাট, তিনতলার একটি ফ্ল্যাট এবং চারতলার একটি ফ্ল্যাটে চুরি হয়। দোতলার ফ্ল্যাটে থাকেন অমল দাস নামে কলকাতা পুলিশের এক কনস্টেবল, তিনতলায় শ্যামল বিশ্বাস নামে এক আইনজীবী এবং চারতলায় থাকেন সন্দীপ ঘোষাল নামে এক ব্যবসায়ী। তিনটি ফ্ল্যাটেই কোল্যাপ্সিবল গেটের তালা ভেঙে চুরি হয়। অমলবাবু বলেন, “অফিসের ডিউটি ছিল, তাই রাতে বাড়িতে ছিলাম না। পাড়ার লোকেদের কাছে খবর পেয়ে ফিরে দেখি, বাড়ির কোল্যাপ্সিবল গেট ও মূল দরজার তালা ভাঙা। নগদ প্রায় পাঁচ হাজার টাকা এবং সোনার আংটি চুরি গিয়েছে।” প্রায় একই কায়দায় তালা ভেঙে চুরি হয়েছে বাকি দু’টি ফ্ল্যাটেও। শ্যামলবাবু বর্তমানে সপরিবার মধ্যমগ্রামে থাকেন। সিঁথির ফ্ল্যাটটি তালাবন্ধই থাকে। ওই আইনজীবী জানিয়েছেন, তাঁর পেশার সূত্রে বাড়িতে রাখা এক লক্ষ টাকা ও কয়েক ভরি সোনার গয়না চুরি গিয়েছে। সন্দীপবাবুরা বৃহস্পতিবার বিকেলে বাড়িতে ছিলেন না। তাঁর বাড়িরও তালা ভাঙা এবং ঘর লণ্ডভণ্ড বলে জানিয়েছে পুলিশ। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, ওই আবাসনে কোনও নিরাপত্তারক্ষী ছিলেন না। পুলিশের অনুমান, সেই কারণেই দুষ্কৃতীরা আবাসনের কোল্যাপ্সিবল গেটের তালা ভেঙে সহজেই সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠে ওই তিনটি ফ্ল্যাটে পৌঁছয়। |