বাড়িতে রান্নার কাজে ব্যবহারের জন্য গ্যাসের সিলিন্ডার দিয়ে কোথাও হোটেলের রান্না চলছে। কোথাও কালোবাজারে কেনা বড় সিলিন্ডার খুলে ছোট সিলিন্ডারে ভরে বিক্রি করা হচ্ছে। লাইনে দাঁড়িয়ে কাজ হচ্ছে না। কিন্তু দ্বিগুণ দাম দিলে একটি মাত্র ফোনে বাড়িতে পৌছে যাচ্ছে গ্যাস। কোচবিহার জেলা জুড়ে রান্নার গ্যাস নিয়ে বেআইনি কারবারের ওই অভিযোগ পেয়ে বুধবার অভিযানে নামলেন প্রশাসনের কর্তারা। এ দিন কোচবিহারের অতিরিক্ত জেলাশাসক সি মরুগণের নেতৃত্বে শহরের বিভিন্ন হোটেল, রেঁস্তোরায় তল্লাশি অভিযান চলে। উদ্ধার হয় ৪টি গ্যাস সিলিন্ডার। অতিরিক্ত জেলাশাসক বলেন, “বাড়িতে ব্যবহারের জন্য নির্দিষ্ট রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডার বেআইনি ভাবে হোটেল ও রেঁস্তোরায় ব্যবহার করা হচ্ছে। এ দিন চারটি সিলিন্ডার আটক করা হয়েছে। জেলা জুড়ে অভিযান চলবে।’’ কোচবিহার সদরের মহকুমাশাসক সুপর্ণকুমার রায়চৌধুরী বলেন, “যে দু’টি খাবারের দোকান থেকে সিলিন্ডার উদ্ধার হয়েছে সেই ব্যাবসায়ীদের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানানো হয়েছে।” প্রশাসনের কর্তারা এ দিন অভিযান চালানোর সময় বড় সিলিন্ডার থেকে ছোট সিলিন্ডারে গ্যাস ভরে বিক্রির তথ্য পেয়েছেন। |
কোচবিহারের হোটেল-রেস্তোরাঁয় হানা অতিরিক্ত জেলাশাসকের। বুধবার। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব। |
ওই বেআইনি কার বান্ধের জন্য আরও কয়েকটি এলাকায় তল্লাশি চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বুধবার শহরের সিলভার জুবিলি রোড, বিশ্বসিংহ রোড, ভবানীগঞ্জ এলাকায় অভিযান চলে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, রান্নার গ্যাস সরবরাহের জন্য কোচবিহার শহরে তিনটি সংস্থা রয়েছে। সব মিলিয়ে গ্রাহকের সংখ্যা প্রায় ৪০ হাজার। দিনহাটা শহরের গ্রাহকদের অবস্থা আরও খারাপ। গ্যাস নিয়ে ভোগান্তির জেরে মাঝেমধ্যে সেখানে গ্রাহক ও সরবরাহকারি সংস্থার কর্তাদের মধ্যে গোলমাল হচ্ছে। তুফানগঞ্জ, মাথাভাঙা, মেখলিগঞ্জের গ্রাহকদের প্রতি মাসে সিলিন্ডার পেতে একই দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। রান্নার গ্যাসের ওই সমস্যা নিয়ে প্রশাসনের দফতরে প্রচুর অভিযোগ জমা পড়ে। ওই সমস্ত অভিযোগ খতিয়ে দেখার পরে বেআইনি কারবারের পদ্ধতি নিয়ে স্পষ্ট তথ্য সংগ্রহ করেন প্রশাসনের কর্তারা। এর পরে আজ তাঁরা আচমকা অভিযানে নামেন। এ দিন কোচবিহার শহরের খাবারের দোকানে হানা দিয়ে বাড়িতে রান্নার কাজের জন্য বরাদ্দ সিলিন্ডার ধরার পরে বাসিন্দাদের অভিযোগ যে কতটা অকাট্য তা স্পষ্ট হয়। কোচবিহারের বাসিন্দা তথা বিজেপির জেলা সম্পাদক নিখিল দে বলেন, “কমার্শিয়াল সিলিন্ডারের দাম বেশি তাই অনেক হোটেল, রেঁস্তোরায় ডোমেস্টিক সিলিন্ডার ব্যাবহার হচ্ছে। ওই ঘটনার জন্য সাধারণ গ্রাহকরা বুকিং করার এক মাস পরেও সিলিন্ডার পাচ্ছে না। অথচ ৪১৬ টাকার সিলিন্ডারের দ্বিগুণ দাম দিলে সহজে বাড়িতে পৌছে যাচ্ছে।” কোচবিহার নাগরিক অধিকার সুরক্ষা মঞ্চের সভাপতি রাজু রায় বলেন, “এমন অভিযান আগেও কয়েকবার হয়েছে। অভিযানের পরে কিছুদিন রান্নার গ্যাসের বেআইনি কারবার বন্ধ হলেও পরে তা ফের শুরু হয়েছে। এ বার প্রশাসনের কর্তারা লাগাতর অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়ায় কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে।” |