নিজস্ব সংবাদদাতা • জলপাইগুড়ি |
জীবাণু সংক্রমণ ঘটেছে জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ থেকে পাঠানো জীবাণু সংক্রমণের রিপোর্ট পেয়েই বুধবার থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে হাসপাতালের ওটি। হঠাৎ করে ওটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন রোগীরা। হাসপাতাল সূত্রেই জানা গিয়েছে, এদিন ওটি বন্ধ থাকায় ১৫ জন রোগীর অস্ত্রোপচার করা যায়নি। ওই রোগীদের অধিকাংশেরই চোখে অস্ত্রোপচার হওয়ার কথা ছিল। চোখ ছাড়াও হাড় এবং স্ত্রী রোগ সংক্রান্ত অস্ত্রোপচারের রোগীরাও ছিলেন। কবে তাঁদের অস্ত্রোপচার কবে হবে তাও এদিন জানানো যায়নি। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ওটি জীবাণুমুক্ত করতে অন্তত তিন দিন সময় লাগবে বলে জানা গিয়েছে। সে কারণে সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নির্দেশ জারি করে আগামী শুক্রবার পর্যন্ত ওটি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছেন। আগামী শনিবার থেকে ফের ওটিতে কাজ শুরু হতে পারে। জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালের সুপার ব্রজেশ্বর মজুমদার বলেন, “ওটিতে জীবাণু সংক্রমণের খবর পেয়েই ওটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। তিন দিন ধরে জীবাণুমুক্ত করার কাজ চলবে। তার পরে ফের ওটি স্বাভাবিক হবে। এই ধরনের ঘটনা সব হাসপাতালেই ঘটে থাকে।” জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালে তিনটি ওটি রয়েছে। একটিতে প্রসব করানো হয়। সেটিতে অবশ্য জীবাণু সংক্রমণের কোনও খবর নেই। সার্জিকাল বিভাগের জরুরি ওটি স্বাভাবিক। হাসপাতালের প্রধান ওটি যেখানে চোখ, কান থেকে শুরু করে যাবতীয় অস্ত্রোপচার করা হয়, সেটিতে জীবাণু সংক্রমণ হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এদিন বুধবার সকালে প্রধান ওটিতে অস্ত্রোপচারের প্রস্তুতিও শুরু হয়। অস্ত্রোপচার শুরু হওয়ার আগেই কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ওটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী বেরুবাড়ির বাসিন্দা বুধা রায় চোখের অস্ত্রোপচারের জন্য হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। এদিন সকালে অস্ত্রোপচারের জন্য তাকে ওটিতেও নিয়ে যাওয়া হয়। দুপুরে হাসপাতালে শুয়ে বুধা দেবী বলেন, “হাসপাতালে ভর্তির পরে আজ অস্ত্রোপচার হবে বলে জানানো হয়েছিল। বিশেষ পোশাক পরিয়ে ওটিতেও নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু অস্ত্রোপচার হয়নি। বলা হয়েছে, কোনও যন্ত্র না কি খারাপ হয়ে গিয়েছে। কবে অস্ত্রোপচার হবে, তাও জানানো হয়নি।” পাহাড়পুরের বাসিন্দা আব্দুল জাখর বলেন, “ওটিতে নিয়ে গিয়েও আমায় ফিরিয়ে আনা হয়েছে। কতদিন হাসপাতালে থাকতে হবে জানি না। খরচও তো বেশি হবে।” নিয়ম অনুযায়ী প্রতি সপ্তাহে ওটির বিভিন্ন নমুনা সংগ্রহ করে মেডিক্যাল কলেজে পাঠানো হয়। গত সপ্তাহে যে নমুনা পাঠানো হয়েছিল, তা পরীক্ষা করে ওটিতে জীবাণু সংক্রমণের বিষয়টি ধরা পড়েছে। হাসপাতালের চিকিৎসকেরই একাংশের অভিযোগ, প্রতিদিন কাজের শেষে যদি ওটিকে জীবাণুমুক্ত করার কাজ করা হয় তবে এই ধরনের সংক্রমণ আটকানো যায়। অভিযোগ, কর্তৃপক্ষের গাফিলতিতেই এই ঘটনা ঘটেছে। |