নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
ব্যস্ততম মন্ত্রী থেকে আমজনতা। ব্যাঙ্কের আধিকারিক থেকে প্রশাসনের কর্তাব্যক্তি। পুলিশ থেকে সাংবাদিক। মোটামুটি এ ধরনের পেশায় যুক্তদের মধ্যে উচ্চ রক্তচাপ জনিত রোগের প্রকোপ বেড়ে চলেছে জানালেন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক শেখর চক্রবর্তী। আজ, বৃহস্পতিবার ‘ওয়ার্ল্ড হাইপার টেনশন ডে’ পালিত হবে। প্রসঙ্গত, ১৭ মে তার প্রাক্কালে বুধবার শিলিগুড়ি জার্নালিস্টস ক্লাবে একটি ওষুধ প্রস্তুত কারক সংস্থার উদ্যোগে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে রীতিমতো তথ্য-পরিসংখ্যান দিয়ে বিশেষজ্ঞ শেখরবাবু বলেন, “এ দেশে এক তৃতীয়াংশ মানুষ উচ্চ রক্ত চাপের শিকার। যা থেকে হৃদরোগ, কিডনির অসুখের মতো অন্যান্য জটিল রোগেও বাসিন্দারা আক্রান্ত হন। উচ্চ রক্ত চাপে অসুস্থ হওয়ার প্রবণতা মহিলাদের তুলনায় পুরুষদের মধ্যে বেশি। তা থেকে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ, দৃষ্টিশক্তি নষ্ট হওয়া, কিডনির অসুখ, পায়ের রক্ত নালিগুলি মোটা হয়ে পা অসাড় করে ফেলার মতো বিভিন্ন রোগ হতে পারে। উচ্চ রক্তচাপের সঙ্গে ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরল, হৃদরোগে আক্রান্ত হলে সমস্যা বাড়ে। মৃত্যুর হার সে ক্ষেত্রে বেশি। তাই উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ জরুরি। চিকিৎসকের পরামর্শে নিয়মিত ওষুধ খাওয়া দরকার।” কোন পরিস্থিতিতে এমন হতে পারে তার কিছু দৃষ্টান্তও দিয়েছেন তিনি। |
তাঁর কথায়, “বাড়িতে কোনও আত্মীয় মারা গেলে তা নিয়ে টেনশন বাড়ে। তাতে উচ্চ রক্তচাপ হতে পারে। কিছু দিন পর শোকের আবহ কাটলে তা ঠিক হয়ে যায়। আবার মাতৃত্বকালীন অবস্থায়, বা থাইরয়েডের সমস্যার মতো বিশেষ কিছু কারণে অনেকে উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত হন। সে সব কারণ দূর হলে উচ্চ রক্তচাপ সাধারণত সেরে যায়। উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে কী করণীয় বাসিন্দাদের? চিকিৎসকরা জানান, যাঁদের ওই রোগ নেই তাঁদেরও বছরে অন্তত ১ বার রক্তচাপ পরীক্ষা করা দরকার। পরিবারের সদস্যরা উচ্চ রক্তচাপে ভুগলে তাদের ৩ মাস অন্তর রক্তচাপ পরীক্ষা করা উচিত। ৪০/৪৫ বছরের পর রক্ত নালিগুলির প্রাচীরের নমনীয়তা বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে ক্রমশ কমতে থাকে। সে কারণে রক্তচাপ সাধারণত বাড়তে থাকে। শেখরবাবু জানান, তাই এই রোগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া দরকার। পরামর্শ মেনে রোজ অন্তত আধ ঘণ্টা ব্যায়াম ও শরীরের ওজন কমানো ভীষণ জরুরি। নুন খাওয়া নিয়েও বিধি মেনে চলা জরুরি। ফাস্ট ফুডে চর্বি এবং নুনের পরিমাণ সাধারণত বেশি থাকে বলে তা খাওয়ার ক্ষেত্রে অতি মাত্রায় সতর্ক থাকা প্রয়োজন। কাঁচা বা সেদ্ধ শাক-সব্জি, ফল নিয়মিত খাওয়া উপকারী। অ্যালকোহল খাওয়া কখনও মাত্রাতিরিক্ত হওয়া বাঞ্ছনীয় নয় বলে তাঁর অভিমত। ধূমপান পুরোপুরি বন্ধ করা বাধ্যতামূলক বলে শেখরবাবুর অভিমত। তবে নিয়মিত ওষুধ খাওয়া যেমন জরুরি তেমনই তা থেকে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া যাতে না-হয়, সে জন্য চিকিৎসকদের সঙ্গে সব সময় পরামর্শ করা দরকার বলে তিনি মনে করেন। |