নষ্ট হচ্ছে চাল, তবু রান্না চড়ে না স্কুলে
কোন স্বনির্ভর গোষ্ঠী রান্না করবে-- এই ঝামেলায় টানা এক বছরেরও বেশি বন্ধ হয়ে রয়েছে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মিড-ডে মিলের রান্না। হুড়া ব্লকের চাটুমাদার পঞ্চায়েতের আমড়াকোচা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঘটনা। স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, ঝামেলা মিটিয়ে রান্নার কাজ শুরু করার জন্য তাঁরা প্রশাসন ও পঞ্চায়েতেকে একাধিকবার জানালেও সমস্যা মেটেনি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গ্রামের একমাত্র প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন ধরেই রান্নার কাজ করেন স্থানীয় দুই আদিবাসী মহিলা। গত বছরের মার্চে গ্রামেরই দু’টি মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠী বিদ্যালয়ে রান্না করার দাবি তোলে। এ নিয়েই ঝামেলার সূত্রপাত। বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শিবপ্রসাদ সিংহ সর্দার বলেন, “আমরা যে দু’জনকে রান্নার দায়িত্ব দিয়েছি, পঞ্চায়েত তাঁদের অনুমোদন দিয়েছে। কিন্তু অন্য দু’টি গোষ্ঠী রান্নার কাজের দাবি তোলায় ঝামেলা বাধে। ওই দুই গোষ্ঠীর প্রতিনিধি ও গ্রাম শিক্ষা সমিতি-র (ভিইসি) সদস্যদের নিয়ে বৈঠকেও রফাসূত্র মেলেনি।” তিনি জানান, ওই দুই মহিলাকে নিয়ে রান্নার কাজ ফের শুরু করার চেষ্টা করা হলে বাধা দেওয়ায় মিড-ডে মিল বন্ধ করে দিতে বাধ্য হন। সমস্যার কথা জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক ও প্রশাসনকেও তিনি জানিয়েছেন।
ওই দুই মহিলার এক জন আশালতা সিংহ সর্দার বলেন, “আমরা ৭-৮ বছর রান্নার কাজ করছি। গত বছর ঝামেলার পর থেকেই রান্না বন্ধ।”আর যে দুই গোষ্ঠী রান্না করার দাবিদার তাঁদের অন্যতম উছা সিংহ সর্দার বলেন, “আমরা স্বনির্ভর গোষ্ঠী তৈরি করেছি। তাই আমরাই মিড-ডে মিল রান্না করার দাবি জানাচ্ছি।” স্থানীয় পঞ্চায়েতের প্রধান সুভাষ মাহাতো বলেন, “রান্না করা নিয়ে ঝামেলার জেরে ওই বিদ্যালয়ে মিড-ডে মিল অনেকদিন বন্ধ রয়েছে। যাঁদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, তাঁরা রান্না করতে পারছেন না। সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।” হুড়া ২ চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক বিদ্যাপতি পতি বলেন, “আমি নিজে ওই স্কুলে গিয়েও রান্নার কাজ শুরু করাতে পারিনি। সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।” হুড়ার বিডিও বিশ্বনাথ রক্ষিত বলেন, “বিধি মোতাবেক পঞ্চায়েত যাঁদের দায়িত্ব দেবে, তাঁরাই রান্নার কাজ করবে। অচলাবস্থা কাটাতে শীঘ্রই বৈঠকে বসব।”.
আদিবাসী প্রধান এই গ্রামের বেশিরভাগ মানুষই দিনমজুর। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জানান, ২০১১-এর ২১ মার্চ থেকে রান্নার কাজ বন্ধ। তখন থেকে স্কুলে প্রায় এক কুইন্ট্যাল ২১ কিলোগ্রাম চাল পড়ে রয়েছে। সেই চাল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তবু তাঁরা খুদে পড়ুয়াদের খাবার দিতে পারছেন না। প্রথম শ্রেণীর বিধান সিংহ সর্দার, তৃতীয় শ্রেণীর ইন্দ্রজিৎ সিংহ সর্দাররা বলেন, “অন্য স্কুলে রান্না করা খাবার দেওয়া হয়। কিন্তু বড়দের গোলমালে আমারা স্কুলে খাবার পাচ্ছি না।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.