|
|
|
|
নৈহাটিতে ভাগচাষির অস্বাভাবিক মৃত্যু |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ব্যারাকপুর |
এক কৃষকের অস্বাভাবিক মৃত্যুকে কেন্দ্র করে চাপান-উতোর তৈরি হয়েছে নৈহাটিতে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম সত্যরঞ্জন বারুই (৬৫)। বুধবার সকালে বাড়ির কাছে একটি আমগাছে তাঁর ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান স্থানীয় বাসিন্দারা। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, আত্মহত্যা করেছেন ওই ব্যক্তি। দেহটি ময়না তদন্তে পাঠানো হয়েছে। |
|
সত্যরঞ্জন বারুই।
—নিজস্ব চিত্র। |
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ভাগ চাষি সত্যরঞ্জনবাবু ধার-দেনা করে তিন মেয়ের বিয়ে দিয়েছিলেন। চার মাস আগে ছোট মেয়ে কল্পনা হালদারের বিয়ের সময় বাজারে দেনার পরিমাণ অনেকটাই বেড়ে গিয়েছিল। এ বার সত্যরঞ্জনবাবু সাড়ে সাত বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছিলেন। চুক্তি অনুযায়ী ফসল ফলার পরে জমির মালিককে ১৪ বস্তা ধান দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ফলন ভাল না হওয়ায় সাত-আট বস্তার বেশি ধান ঘরে তুলতে পারেননি তিনি। মেয়েদের বিয়ে, চাষ সবমিলিয়ে বাজারে পঞ্চাশ-ষাট হাজার টাকা দেনা হয়ে যাওয়ায় বেশ কিছুদিন ধরে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন সত্যরঞ্জনবাবু। স্ত্রী সুশীলাদেবী বলেন, ‘‘বুধবার সকালে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পাড়ার মোড়ে চায়ের দোকানে কিছুক্ষণ বসেছিলেন। সেখানে চা খেয়ে আর বাড়ি ফেরেননি। পাড়ারই একটি ছেলে বাড়ির কাছে আম গাছে ওঁকে ঝুলতে দেখে।’’ প্রতিবেশী আর এক ভাগচাষি রামচন্দ্র ঘোষ বলেন, ‘‘পরনের ধুতি দিয়েই গলায় ফাঁস দেন সত্যরঞ্জন। আমাদের এখানে হ্যাচারির জল চাষের জমিতে ঢুকে অনেক ফসল নষ্ট হয়েছে। ধান বেচে মেয়ের বিয়ের দেনা শোধ করবেন ভেবেছিলেন সত্যরঞ্জন। কিন্তু ফসল নষ্ট হওয়ায় প্রচণ্ড ভেঙে পড়েন।’’
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, অভাবের সংসার হলেও সত্যরঞ্জনবাবু কাউকে নিজের সমস্যার কথা বলতেন না। তিন মেয়ের বিয়ের পরে সংসারে আর্থিক অনটনের জন্য একমাত্র ছেলেকে একটি দোকানে কাজে ঢুকিয়েছিলেন। নিজের বলতে ছোটো একটা বেড়ার ঘর। প্রতি বছরই অন্যের জমিতে ভাগ চাষ করতেন। এ বার ফসল খারাপ হওয়ায় মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছিলেন। নৈহাটির বিধায়ক তৃণমূলের পার্থ ভৌমিক বলেন, ‘‘ঘটনাটি দুর্ভাগ্যজনক। মেয়েদের বিয়েতে দেনার কারণে পাওনাদারদের চাপ সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করেছেন ওই ভাগচাষি।’’ |
|
|
|
|
|