|
|
|
|
সেই ছাত্রের বাড়িতে ফের ফরেন্সিক দল |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
সপ্তাহ ঘুরতে চলল। কিন্তু, এখনও মেদিনীপুর সদর-শহরের বরিশাল কলোনিতে ছাত্র-খুনের ঘটনার কিনারা হল না। তদন্তের জন্য গত সোমবার ঘটনাস্থলে এসেছিল ফরেন্সিক দল। দুই সদস্যের ওই দল বাড়ির মধ্যে থেকে প্রয়োজনীয় নমুনাও সংগ্রহ করেছিল। ফিঙ্গার-প্রিন্টও নিয়েছিল। বুধবার ফরেন্সিকের অন্য একটি দল ঘটনাস্থলে আসে। দুই সদস্যের এই দলটিও এ দিন বাড়ির মধ্যে ঢুকে প্রয়োজনীয় নমুনা সংগ্রহ করে। বাড়ির আশপাশও ঘুরে দেখে। পুলিশের বক্তব্য, তদন্ত চলছে। ঘটনার কিনারা করতে আরও কিছু সময় লাগবে। পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার সুনীল চৌধুরি বলেন, “ফরেন্সিক দল এ দিনও ঘটনাস্থলে গিয়েছে। তদন্ত এগোচ্ছে। সব দিকই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” যে ঘরের মধ্যে অস্বাভাবিক এই মৃত্যুর ঘটনাটি ঘটেছিল, শুরুতে সেই ঘরটি ‘সিল’ করে দিয়েছিল পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তের পর অবশ্য ওই ঘরের চাবি ফের পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। মৃত অভিষেকের বাবা প্রবীর নাগ বলেন, “ঘরের চাবি পেয়েছি। তবে পরিবারের কেউ ওই ঘরে ঢুকছে না।” তাঁর কথায়, “কোথা থেকে কী হয়ে গেল, কিছুই বুঝতে পারছি না।” তদন্তের গতিপ্রকৃতিতে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে স্থানীয় মানুষজনের মধ্যেও। তাঁদের বক্তব্য, বছর তেরোর এক ছাত্র ঘরের মধ্যেই খুন হয়ে গেল। ভরদুপুরে ঘটনা ঘটিয়ে পালিয়ে গেল খুনি। অথচ পুলিশ এখনও কাউকে গ্রেফতার করতেই পারল না! গত শুক্রবার দুপুরে বাড়ির একটি ঘরে ঘুমোচ্ছিল অভিষেক। বিকেলে ওই ঘর থেকেই তার ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার হয়। মেদিনীপুর শহরের বরিশাল কলোনিতে বাড়ি অভিষেকদের। যৌথ পরিবার। আশপাশে বেশ কয়েকটি বাড়ি রয়েছে। স্থানীয়দের দাবি মেনে ওই দিন রাতেই ঘটনাস্থলে পুলিশ-কুকুর এনে তদন্ত চালানো হয়। কুকুরটি বাড়ির পিছন দিকে পুকুর পাড় হয়ে কিছুদূর গিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ে। পুলিশের ধারণা, কুকুরের দেখানো পথেই পালিয়েছিল খুনি। সেই সঙ্গে খুনে ব্যবহৃত অস্ত্র পুকুরে ফেলা থাকতে পারে বলেও মনে করেছিল পুলিশ। এই ধারণা থেকেই মঙ্গলবার দুপুরে পুকুরে চুম্বক ফেলে তল্লাশি চালানো হয়। তবে তল্লাশি শেষে কিছুই মেলেনি। মৃত ছাত্রের দেহে অজস্র আঘাতের চিহ্ন ছিল। এ ক্ষেত্রে ছুরি বা চপার জাতীয় কিছু দিয়েই আঘাত করা হয় বলে পুলিশের অনুমান।
জিজ্ঞাসাবাদ-পর্ব চলছেই। বুধবারও কয়েক জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরিবারের লোকজন ও অভিষেকের বন্ধু ও পরিচিতদের কাছ থেকে বেশ কিছু তথ্য জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। ইতিমধ্যে প্রবীরবাবু-সহ পরিবারের লোকজনও কয়েক বার থানায় এসেছেন। তদন্তকারী অফিসার যা যা জানতে চেয়েছেন, তা জানিয়েছেন। কিন্তু কেন এখনও ঘটনার কিনারা করা সম্ভব হল না? জেলা পুলিশের এক অফিসার বলেন, “এ ধরনের ঘটনা খুব কমই ঘটে। তদন্তের শুরুতে কিছু সূত্র উঠে এসেছিল। সেই সব সূত্র খতিয়ে দেখার সময়ে আরও কিছু সূত্র উঠে আসে। কেন অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্র এ ভাবে নৃশংসতার শিকার হবে, তা-ও নিজের ঘরে, সেই বিষয়টি আমাদের ভাবাচ্ছে।” পুলিশের বক্তব্য, অভিযুক্তদের চিহ্নিত করার সব রকম চেষ্টাই চলছে। আপাতত, পুলিশের এই আশ্বাসই ভরসা ‘শোকগ্রস্ত’ পরিবারটির। ভরসা রাখতে হচ্ছে শহরের নাগরিকদেরও। |
|
|
|
|
|