|
|
|
|
১০০ দিনের প্রকল্প |
মজুরি না পেয়ে পঞ্চায়েতে তালা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • গোঘাট |
একশো দিনের কাজ প্রকল্পে কাজ করেও মজুরি মেলেনি, এই অভিযোগ তুলে পঞ্চায়েত প্রধান-সহ কর্মীদের অফিস থেকে বের করে তালা বন্ধ করে দিলেন গ্রামবাসীরা।
বুধবার গোঘাট-১ ব্লকের শ্যাওড়া পঞ্চায়েতের ঘটনা। অভিযোগ, গত আর্থিক বছরে মজুরি বাবদ মাথাপিছু গড়ে দেড় থেকে দু’হাজার টাকা বকেয়া রয়েছে। এপ্রিল মাস থেকে চলতি আর্থিক বছরের কাজ শুরু হয়েছে। আড়াই মাস হলেও কোনও মজুরি পাওয়া যায়নি। বাসিন্দাদের ক্ষোভ, ১৫ দিনের মধ্যে মজুরি মেটানোর আইন হলেও পঞ্চায়েতে গেলে ব্যাঙ্কে বা ডাকঘরে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। সেখান থেকে বলা হচ্ছে কোনও টাকা আসেনি অথবা দিতে দেরি হবে। এই টালবাহনায় সমস্যায় পড়েছেন শ্রমিকেরা। আর সে কারণে কর্মীদের বের করে তালা মেরে দেওয়া হয়েছে। শ্রমিকদের দাবি, ব্যাঙ্ক বা ডাকঘরে গিয়ে বিক্ষোভ দেখিয়ে সমস্যা মেটেনি। তাই যাঁরা কাজ দিয়েছে, সেই পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষকেই মজুরি দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
বুধবার বিকেল তিনটে পর্যন্ত পঞ্চায়েতে তালা মেরে শ্রমিকদের বিক্ষোভ চলে। গোঘাট ১ ব্লক প্রশাসনের কর্তারা এসে স্থানীয় ব্যাঙ্ক ও ডাকঘর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেন। তারপরে তাঁরা বাসিন্দাদের আশ্বাস দেন, আগামী দু’সপ্তাহের মধ্যে সমস্ত বকেয়া মিটিয়ে দেওয়া হবে। এরপরে তালা খুলে দেন বাসিন্দারা। পঞ্চায়েতের প্রধান সিপিএমের সন্তোষ পণ্ডিত ও নির্বাহী সহায়ক নির্দশন সাঁতরা জানিয়েছেন, পঞ্চায়েতের তরফে কোনও ত্রুটি নেই। শ্রমিকদের মজুরি সংক্রান্ত কাগজপত্র মার্চ মাসেই পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাঁদের গাফিলতির জন্যই শ্রমিকদের ক্ষোভ পঞ্চায়েতে পড়েছে। গোঘাট ১ বিডিও জয়ন্ত মণ্ডলের অভিযোগ, “ব্যাঙ্ক ও ডাকঘর কর্তৃপক্ষের অসহযোগিতা নিয়ে একাধিকবার উচ্চপর্যায়ের আলোচনা হয়েছে। কিন্তু পরিস্থিতি বদলায়নি।”
রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের স্থানীয় শাখা ম্যানেজার সুনীলকুমার সাহা অসহযোগিতার অভিযোগ মানেননি। তাঁর বক্তব্য, “আমাদের ছোট শাখা। ক্যাশিয়ার মাত্র ১ জন। মোট ৮৬টি মাস্টাররোল পাঠানো হয়েছে আমাকে। প্রতিটি মাস্টাররোলে কমকরে ২৫০ জনের শ্রমিকের তালিকা রয়েছে। পঞ্চায়েত ও শ্রমিকদের দাবি হল সব একসঙ্গে ও তৎক্ষণাৎ করতে হবে। কিন্তু এই পরিকাঠামোয় তা কার্যত সম্ভব নয়।” এ দিন আধিকারিকদের তিনি জানিয়েছেন, তিন সপ্তাহ সময়ের কমে কাজ সারা সম্ভব হবে না।
বালি দেওয়ানগঞ্জ উপ-ডাকঘরের পোস্টমাস্টার অজিত সরকার বলেন, “আমাদের তরফে কোনও বিলম্ব নেই। শ্রমিকদের চেক আমাদের কাছে পাঠানোর পরে আমরা তা আরামবাগ ডাকঘরে পাঠাই। সেখান থেকে ব্যাঙ্কে পাঠানো হয়। সেই টাকা প্রধান ডাকঘর হয়ে আমাদের কাছ আসবে। এখান থেকে শ্যাওড়া ডাকঘরে যাবে। তারপরে শ্রমিকদের টাকা দেওয়া হবে। ব্যাঙ্কের তৎপরতার উপরে শ্রমিকদের টাকা নির্ভর করছে।”
বিষয়টি নিয়ে মহকুমাশাসক অরিন্দম নিয়োগী বলেন, “শ্রমিকদের কাজের ১৫ দিনের মধ্যেই মজুরি পাওয়ার ক্ষেত্রে যে সমস্ত সমস্যা আছে তা নিয়ে জেলাস্তরে আলোচনা চলেছে। শীঘ্রই তার সমাধান হবে বলে আমরা আশা করছি।” |
|
|
|
|
|