|
|
|
|
মাওবাদী বনধে খনি অঞ্চলে ব্যাপক সাড়া |
নিজস্ব প্রতিবেদন |
মাওবাদীদের ডাকা ২৪ ঘণ্টার ভারত বন্ধ ঘিরে পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলিতে বড়সড় কোনও হিংসাত্মক ঘটনার খবর নেই। বুধবার মাওবাদীরা এই বন্ধ ডেকেছিল মূলত ‘অপারেশন গ্রিন হান্ট’ এবং প্রস্তাবিত এনসিটিসি গঠনের বিরোধিতায়। ওড়িশার আদিবাসী অধ্যুষিত জেলাগুলিতে এবং ঝাড়খণ্ডে খনি এলাকা-সহ গ্রামাঞ্চলে এই বন্ধের ভালই প্রভাব অনুভূত হয়েছে। ওড়িশাতে আন্তঃ-রাজ্য বাস পরিষেবা বহুলাংশেই বন্ধ ছিল। রৌরকেলা বাসস্ট্যান্ডে দিনভর পড়ে ছিল যাত্রীশূন্য বাসগুলি। ঝাড়খণ্ডে রাজধানী রাঁচি-সহ গোটা রাজ্যের দূরপাল্লার সড়ক পরিবহণের যাত্রী এবং পণ্য পরিষেবা থমকে ছিল।
রাঁচিতে সরকারি সূত্রের খবর, বোকারো, রামগর, এবং রাঁচির কয়লা খনিগুলি থেকে একটি ট্রাকেও কয়লা ওঠানোর কাজ এ দিন হয়নি। একই ভাবে ট্রাকে মাল ওঠানোর কাজ থমকে ছিল লোহারডাগার বক্সাইট খনিতেও। তবে ইস্পাতনগরী জামশেদপুরের বিভিন্ন শিল্প সংস্থায় স্বাভাবিক কাজ হয়েছে। |
|
বনধে স্তব্ধ ওড়িশার রৌরকেলা বাস স্ট্যান্ড। ছবি: উত্তমকুমার পাল |
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, সব মিলিয়ে মাওবাদীদের ডাকা বন্ধে ঝাড়খণ্ডে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ কমপক্ষে দুশো কোটি টাকারও বেশি। বিগত আর পাঁচটা বন্ধের তুলনায় এ দিনের বন্ধের প্রভাবও ছিল অনেক ব্যাপক। তবে রাজধানী রাঁচি-সহ রাজ্যের শহরাঞ্চলের স্বাভাবিক জনজীবনে এ দিনও বন্ধের উল্লেখযোগ্য প্রভাব দেখা যায়নি বলে প্রশাসনের দাবি। শহরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, অফিস কাছারি এবং বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলিতে স্বাভাবিক কাজ হয়েছে। দোকানবাজার ছিল খোলা। রাজধানী-সহ রাজ্যের শহরগুলির সড়ক পরিবহণ ব্যবস্থাও এ দিন ছিল প্রায় স্বাভাবিক। ঝাড়খণ্ড পুলিশের মুখপাত্র রিচার্ড লাকড়া জানিয়েছেন, মাওবাদীদের ডাকা বন্ধের প্রেক্ষিতে রাজ্যের সর্বত্রই নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। নজরদারি বাড়ানো হয়েছে মাওবাদী প্রভাবিত এলাকায়। রাত পর্যন্ত বন্ধ ঘিরে অপ্রীতিকর ঘটনার খবর মেলেনি।
অন্য দিকে ওড়িশার মাওবাদী উপদ্রুত মালকানগিরি, কোরাপুট, রায়গড়া, কন্ধমাল, গজপতি, নওরঙ্গপুর ও গঞ্জাম জেলায় এ দিন নেওয়া হয়েছিল বিশেষ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি জেলায় এ দিন সরকারি বাস চলাচল বন্ধ রাখা হয়। রায়গড়া জোনে গুমুডা হয়ে যায় এমন পাঁচটি দূর পাল্লার বাস এ দিন চালানো হয়নি। দক্ষিণ ওড়িশায় এই বন্ধের প্রভাব মোটামুটি পড়লেও রাজ্যের বহুস্থানেই জীবনযাত্রা ছিল প্রায় স্বাভাবিক। ওড়িশার দক্ষিণ রেঞ্জের ডিআইজি আর কে শর্মা বলেন, “মাওবাদী উপদ্রুত অঞ্চলগুলিতে আমরা সতর্কতা জারি করেছি। জঙ্গিরা যাতে অবাঞ্ছিত কোনও ঘটনা ঘটাতে না পারে সে জন্য পুলিশ নিরন্তর নজর রাখছে।” কন্ধমালের এসপি জে এন পঙ্কজ জানান, গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলিতে বিশেষ প্রহরা থাকছে। গাড়িগুলিতে প্রয়োজনে তল্লাশিও চালানো হচ্ছে। এই বন্ধ ঘিরে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনার খবর নেই। মঙ্গলবার রোহতাস জেলায় পুলিশের সঙ্গে মাওবাদীদের গুলির লড়াই হয়। তারপরেই রাতে মাওবাদীদের এক এরিয়া কম্যান্ডারকে গ্রেফতার করা হয়। এসপি মনু মহারাজ বলেন, “সঞ্জয় শেরো নামে ওই এরিয়া কম্যান্ডারকে গ্রেফতারের সময় লুঠ হওয়া পাঁচটি পুলিশের রাইফেল, ২০০ কার্তুজ এবং একটি ক্যান বোমা উদ্ধার করা হয়েছে। |
|
|
|
|
|