|
|
|
|
আমন্ত্রণ নিয়ে তর্ক |
ষাটের সংসদে ছবিতে গরহাজির প্রণব |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
মন্ত্রী-সাংসদদের সংসদের ষাট বছর পূর্তিতে গ্রুপ ফটো তোলা হবে! অথচ সংসদ ভবনের চত্বরে আজ সকালে সরকারি ফটোগ্রাফার যখন ক্যামেরা নিয়ে তৈরি, দেখা গেল লোকসভার নেতা প্রণব মুখোপাধ্যায়ই অনুপস্থিত। অবশেষে তাঁকে বাদ দিয়েই ‘ঐতিহাসিক মুহূর্ত’ ধরে রাখা হল ক্যামেরায়। অবশ্য প্রণব একা নন, দুই সভা মিলিয়ে বহু সাংসদ এমনকী বেশ কয়েক জন মন্ত্রীও থেকে গেলেন ফ্রেমের বাইরে। এঁদের মধ্যে রয়েছেন মায়াবতী, দেবগৌড়া, রেলমন্ত্রী মুকুল রায়, পেট্রোলিয়াম প্রতিমন্ত্রী আর পি এন সিংহ।
কিন্তু প্রণববাবু কেন নেই? সেই ব্যাখ্যা লোকসভার নেতার কাছ থেকে শোনার আগেই আজ সংসদের অলিন্দ থেকে বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলে জল্পনা শুরু হয়ে যায়। এমনকী কেউ কেউ এ ব্যাখ্যা-ও করতে থাকেন প্রণব মুখোপাধ্যায় কংগ্রেস নেতৃত্বের ওপর অসন্তুষ্ট। প্রণবের অনুপস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন শরিক ও বিরোধী দলের সাংসদরাও।
জল্পনা মাত্রা ছাড়ানোয় শেষ পর্যন্ত মুখ খোলেন প্রণববাবু। বলেন, “ভুল বোঝাবুঝির কারণে এটা হয়েছে। আমি আমন্ত্রণপত্র পাইনি বলে আসিনি। এর আর কোনও ব্যাখ্যা করা নিষ্প্রয়োজন।” লোকসভার সচিবালয় সূত্রে বলা হয়, গত পাঁচ দিন ধরে লোকসভার বুলেটিনে গ্রুপ ফটো তোলার দিনক্ষণ জানানো হয়েছে। কাউকে ফোন করা বা আমন্ত্রণ পত্র পাঠানো হয়নি। ওই বুলেটিন দেখে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীকে বিষয়টি জানানোর দায়িত্ব তাঁর মন্ত্রকের অফিসারদের। তাঁরাই ভুল করেছেন। আবার অর্থ মন্ত্রকের অফিসারদের কথায়, এটা ঠিকই লোকসভার তরফে বুলেটিন পাঠানো হয়। কিন্তু সৌজন্যের খাতিরে লোকসভার নেতাকে আলাদা করে আমন্ত্রণ জানানো উচিত ছিল।
তবে প্রণববাবুর মতোই কংগ্রেস পরিবারে তাঁর ঘনিষ্ঠরা এই ঘটনাকে নিছকই ভুল বোঝাবুঝি বলে অ্যাখ্যা দিতে চেয়েছেন। কংগ্রেসের এক নেতার কথায়, প্রণববাবু রাগ করে আসেননি এই কথা তাঁকে যাঁরা চেনেন, তাঁরা কেউই বিশ্বাস করবেন না। সংসদের ব্যাপারে উনি হলেন ‘কপি বুক’ রাজনীতিক। গ্রুপ ফটো তোলা থেকে শুরু সংসদের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে থাকার ব্যাপারে তিনি খুবই ‘পার্টিকুলার’। সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী পবন বনশল পরে বলেন, “প্রণববাবু নেই দেখে যোগাযোগ করতে যাচ্ছিলাম। কিন্তু ততক্ষণে রাষ্ট্রপতি এসে গিয়েছেন। তাই প্রণববাবুকে আর ডাকা যায়নি।” রেলমন্ত্রীর দফতর থেকে জানানো হয়, বিমান দেরিতে আসায় তিনি যেতে পারেননি।
গ্রুপ ফটো তোলা নিয়ে বিতর্ক অবশ্য আজ এখানেই থেমে ছিল না। সাংসদদের অনেকেই অভিযোগ করেন, এ ব্যাপারে লোকসভার সচিবালয়ের ত্রুটি ছিল। এমনকী রাজ্যসভার সাংসদদের পিছনের সারিতে স্থান দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন এডিএমকে-র রাজ্যসভার নেতা মৈত্রেয়ন।
লোকসভা সচিবালয়ের বুলেটিনে বলা হয়েছিল, প্রথম সারিতে বসবেন দুই সভার নেতা, বিরোধী দলনেতা, ইউপিএ সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী, লালকৃষ্ণ আডবাণী, লোকসভার স্পিকার মীরা কুমার, রাজ্যসভার চেয়ারপার্সন হামিদ আনসারি এবং পূর্ণ মন্ত্রীরা। দ্বিতীয় সারিতে বসবেন বাকি মন্ত্রী ও মহিলা সাংসদরা। পিছনে থাকবেন বাকি সাংসদরা। সেই নিয়ম বজায় থাকেনি। বরং যাঁরা আগে এসেছিলেন, তাঁরা আগের সারিতে বসে পড়েন। এমনকী পবন বনশল দেরিতে পৌঁছে দেখেন, তাঁর আসনে অন্য এক সাংসদ! তিনি গিয়ে বসেন দেবগৌড়ার জন্য নির্ধারিত আসনে । এই পরিস্থিতিতে আরও একবার গ্রুপ ফটো তোলার দাবি সাংসদদের তরফে উঠতে শুরু করেছে। সরকারি সূত্রে বলা হচ্ছে, বিভিন্ন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে লোকসভার সচিবালয় সেই দাবি বিবেচনা করে দেখছে। |
|
|
|
|
|