ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো ঘিরে ফের জটিলতা |
৫৩টি পরিবারকে নিয়েই নতুন জট দেখা দিয়েছে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্পে। বিভিন্ন কারণে এমনিতেই প্রস্তাবিত এই মেট্রো-প্রকল্পের কাজ প্রায় তিন বছর পিছিয়ে গিয়েছে। বোঝার উপরে শাকের আঁটি হয়ে দেখা দিয়েছে বিধাননগরের দত্তাবাদ এলাকা। সেখানে বেশ কিছু পরিবারের বাধায় প্রস্তাবিত রেল-প্রকল্পের স্তম্ভ করা যাচ্ছে না। মুশকিল আসানের লক্ষে মহাকরণে সম্প্রতি একপ্রস্থ বৈঠক করেন রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।
২০০৮-০৯ আর্থিক বছরে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্প কেন্দ্রীয় সরকারের ছাড়পত্র পায়। হাওড়া ময়দান থেকে সল্টলেক সেক্টর ফাইভ পর্যন্ত এই প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছিল ৪৮৭৫ কোটি ৫৮ লক্ষ টাকা। প্রকল্প রূপায়ণের জন্য তৈরি হয় কলকাতা মেট্রো রেলওয়ে নিগম (কেএমআরসি)। ১৪.৬৭ কিলোমিটার অংশের মধ্যে ৮.৯ কিলোমিটার থাকবে ভূগর্ভে। মোট ১২টি স্টেশনের ৬টি থাকবে উপরে, বাকি সব মাটির নীচে। কথা ছিল, প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ে ট্রেন চলবে ২০১৩ সালের শেষ দিকে। গত ২৪ মার্চ দিল্লিতে কেএমআরসি-র পরিচালনমণ্ডলীর বৈঠকের পরে সরকারি ভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়, প্রকল্পের কাজ ২০১৬-র জুলাই মাসের আগে শেষ করা যাবে না। বকেয়া কাজ দ্রুত রূপায়ণের উপরেও ওই বৈঠকে জোর দেওয়া হয়।
কিন্তু এ বার সমস্যা দেখা দিয়েছে দত্তাবাদের বস্তি নিয়ে। ওই অংশে ৬টি স্তম্ভ তৈরি করতে হবে। তার জন্য সরাতে হবে বস্তির একাংশ। বাম আমলে প্রশাসন এই কাজে সফল হয়নি। গত কয়েক মাসে বস্তিবাসীদের সরাতে একাধিক বৈঠক হয়েছে। বস্তি না সরিয়ে গতিপথ সামান্য বদলে প্রকল্প করার সম্ভাবনার বিষয়টিও ইতিমধ্যে খতিয়ে দেখা হয়। কিন্তু তাতে লাভ হয়নি। তৃণমূল নেতৃবৃন্দ কেএমআরসি-র ইঞ্জিনিয়ারদের বলেছেন, অন্তত তিনটি স্তম্ভ বস্তি সরানোর আগে গড়ার চেষ্টা করতে। কিন্তু ইঞ্জিনিয়ারদের বক্তব্য, বস্তি পুরোটা না সরালে কাজ করা মুশকিল হবে। ঠিক হয়েছে, অন্য বাড়ি তৈরি করে বস্তিবাসীদের সরিয়ে তবেই রেলের কাজ হবে। কিন্তু সে কাজ কবে হবে, তার উত্তর মেলেনি। তাই জটও পুরো কাটেনি। পুরমন্ত্রী এবং পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র জট কাটানোর দায়িত্ব দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক সুজিত বসুর উপরে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চান না জোর করে বস্তিবাসীদের উৎখাৎ করা হোক। এ কথা জানিয়ে সুজিতবাবু বলেন, “৫৩টি পরিবারকে দত্তাবাদ থেকে সরানো দরকার। কাছেই নগরোন্নয়ন দফতরের জমিতে তাদের ঘর দেওয়া হবে। চেষ্টা হবে কয়েক মাসের মধ্যে এই পরিবর্ত প্রকল্পের কাজ শেষ করতে।” |