ব্যয়সঙ্কোচকে ঘিরেই সঙ্কট গ্রিসে
দুর্দশার জন্য বিরোধীরা দায়ী করছে সরকারকেই
র্থিক সঙ্কট মোকাবিলায় ব্যয়সঙ্কোচের দাওয়াই দিয়েছেন ভারতের অর্থমন্ত্রী। ঘটনাচক্রে এই সঙ্কটের উৎস যে গ্রিস, সেই দেশে কিন্তু অনিশ্চয়তার সূত্রপাত এই ব্যয়সঙ্কোচকে কেন্দ্র করেই।
গ্রিসকে অর্থসঙ্কট থেকে বার করে আনতে বিশাল অঙ্কের আর্থিক সাহায্যের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। কিন্তু শর্ত একটাই। বেতন, পেনশন ও সরকারি খরচ কমাতে হবে। আর এই শর্তগুলি নিয়েই কার্যত দ্বিধাবিভক্ত এখন গ্রিসের রাজনীতি। এক দল আর্থিক সঙ্কট থেকে বেরিয়ে আসতে ইইউ-এর শর্ত মানতে প্রস্তুত। বামপন্থীরা-সহ অন্য শিবির চাইছে, শর্ত খারিজ করে ইইউ ভেঙে বেরিয়ে আসুক গ্রিস। কয়েক মাসের মধ্যেই ফের নির্বাচন হতে চলেছে। প্রাথমিক সমীক্ষা বলছে, শর্ত মানার বিরোধী বামপন্থীরাই ক্ষমতায় আসতে চলেছে। শেষ পর্যন্ত ইইউ থেকে গ্রিস বেরিয়ে গেলে অর্থাৎ ‘গ্রিকজিট’ (গ্রিস ও এগজিট মিলিয়ে, নতুন একটা শব্দই তৈরি হয়ে গিয়েছে চলতি বিতর্কের সূত্রে) ঘটলে, গোটা ইউরোপের মন্দামুক্তি নিয়েই প্রশ্ন দেখা দেবে।
প্রশ্ন হল, গ্রিসের সঙ্কটে ভারত কেন এতটাই টালামাটাল? বিরোধীরা দুষছে মনমোহন সরকারকেই। বিজেপি নেতা যশবন্ত সিন্হার অভিযোগ, সরকার সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছে। ফলে ভারতের শিল্পপতিরাই এ দেশের থেকে আমেরিকা বা লাতিন আমেরিকায় বিনিয়োগ করতে অনেক বেশি স্বচ্ছন্দ বোধ করছেন। কর্পোরেট সংস্থার সিইও-দের মধ্যে একটি ইংরেজি দৈনিকের সমীক্ষাতেও দেখা গিয়েছে, অর্ধেক সিইও ভারতে বিনিয়োগ করতে চান না। প্রণববাবু বলেন, “এটা শুনে আমার খারাপ লেগেছে। কিন্তু বাকি অর্ধেক এ দেশে বিনিয়োগ করতে চান, এটাও সত্যি।”
কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “অনিশ্চয়তা এখন আর শুধু গ্রিসে আটকে নেই, গোটা এশিয়ার বাজারই আজ ধাক্কা খেয়েছে।” উদাহরণ হিসেবে তিনি নিজেই তাইওয়ান, ইন্দোনেশিয়া, কোরিয়া ও হংকংয়ের শেয়ার বাজারে পতনের কথা উল্লেখ করেন। অর্থ মন্ত্রকের কর্তারা বলছেন, ইউরো-সঙ্কটের কারণে লগ্নিকারীরা ডলারকেই নিরাপদ মুদ্রা বলে মনে করছেন। ফলে ডলারের চাহিদা বেড়েছে। শেয়ার বাজার থেকেও মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন বিদেশি লগ্নিকারীরা। যার প্রভাব পড়েছে বিদেশি মুদ্রার বাজারেও। ডলারের চাহিদা বেড়েছে ব্যাঙ্ক এবং আমদানিকারীদের তরফেও। তবে পরিস্থিতির উপর রিজার্ভ ব্যাঙ্ক নজর রাখছে বলেই জানিয়েছে অর্থ মন্ত্রক।
পরিস্থিতি ততটা খারাপ নয় বলে প্রণববাবু আশ্বাস দিলেও মনমোহন সরকারের একাংশও কিন্তু মনে করছে, শুধু বিদেশের নয়, মনমোহন সরকারের নিজের ঘরের ছবিটাও খুব উজ্জ্বল নয়। অর্থাৎ গ্রিস বা ইউরোপীয় সঙ্কটই টাকার মূল্য বা শেয়ার সূচকের পতনের একমাত্র কারণ নয়। এর পিছনে রয়েছে ‘কারেন্ট অ্যাকাউন্ট’ ও রাজকোষের ঘাটতি। প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক উপদেষ্টা পরিষদের চেয়ারম্যান সি রঙ্গরাজনের মতে, টাকার দাম পড়ে যাওয়ার প্রধান কারণ হল ‘কারেন্ট অ্যাকাউন্ট’-এর ঘাটতি। রফতানির তুলনায় আমদানি বেশি হয়ে যাওয়াতেই এই সমস্যা তৈরি হয়েছে। গত বছরের ডিসেম্বরের হিসেব অনুযায়ী, ‘কারেন্ট অ্যাকাউন্ট’-এর ঘাটতির হার ৪%-এ গিয়ে পৌঁছেছে। রাজকোষ ঘাটতি মেটাতে কড়া সিদ্ধান্তও নেওয়া যায়নি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.