নিজস্ব সংবাদদাতা • বোলপুর ও সদাইপুর |
বালিখাদের দখল নেওয়াকে কেন্দ্র করে দু’টি গোষ্ঠীর মধ্যে বোমাবাজি ও সংঘর্ষের ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে উঠল বোলপুরের বড়শিমুলিয়া। মঙ্গলবার রাত থেকে বোমাবাজি চলে বুধবার সকাল পর্যন্ত। এই ঘটনায় দু’পক্ষের অন্তত ৬ জন জখম হয়েছেন বলে দাবি। পুলিশ সুপার হৃষিকেশ মিনা বলেন, “দু’টি গোষ্ঠীর মধ্যে বোমাবাজি হয়। পুলিশ এ দিন সকালে গিয়ে ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে। উদ্ধার করা হয়েছে ২৫টি তাজা বোমা।” সিপিএমের অভিযোগ, তৃণমূলের দু’টি গোষ্ঠীর মধ্যে অবৈধ বালিখাদের দখল নেওয়াকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। যদিও তৃণমূল নেতৃত্ব তা মানতে চাননি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত কয়েকদিন ধরেই অজয় নদ থেকে বালি তোলা নিয়ে এলাকা উত্তপ্ত হয়ে ছিল। মঙ্গলবার রাতে তা তা সংঘর্ষের চেহারা নেয়। সারা রাত ধরে বোমাবাজি চলে। আহত দের স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসা করানো হয়। এ দিন সকালে গ্রামে পুলিশ বাহিনী যাওয়ার পরে সংঘর্ষ বন্ধ হয়। তবে উত্তেজনা ছিল। স্থানীয় বাসিন্দারাও জানিয়েছেন, তৃণমূলের দু’টি গোষ্ঠীর লোকেদের মধ্যে গণ্ডগোল বাধে। তবে তৃণমূলের বোলপুর ব্লক সভাপতি চিত্ত রক্ষিতের দাবি, “সিপিএমের দুষ্কৃতীরা এলাকায় সন্ত্রাস ছড়ানোর জন্য বোমাবাজি করে। এতে সাধারণ বাসিন্দাদের সঙ্গে আমাদের দলীয় কিছু সমর্থকও জখম হয়েছেন। আমাদের দলের কেউ বোমাবাজির ঘটনায় যুক্ত নয়।” সিপিএমের বোলপুর জোনাল কমিটির সম্পাদক উৎপল রুদ্রের দাবি, “অজয় নদের বালি খাদের দখল নেওয়ার জন্য কয়েক দিন ধরেই তৃণমূলের দু’টি গোষ্ঠীর মধ্যে গোলমাল চলছিল। তারাই বোমাবাজি করে এলাকার শান্তি বিঘ্নিত করছে।” বাসিন্দাদেরও একাংশের দাবি, অবৈধ বালিখাদ বন্ধে প্রশাসন কঠোর পদক্ষেপ করুক। তা নাহলে ভবিষ্যতে এলাকার আইনশৃঙ্খলা ভেঙে পড়বে।
অন্য দিকে, সদাইপুর থানার লালমোহনপুরে তৃণমূলের ভূরকুনা পঞ্চায়েত সদস্যের বাড়িতে বোমাবাজি করার অভিযোগ উঠল দলেরই অন্য গোষ্ঠীর লোকেদের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় পুলিশ দু’পক্ষের দু’জনকে গ্রেফতার করেছে। শেখ আনারুল নামে ওই পঞ্চায়েত সদস্যের দাবি, “আমি তৃণমূলের ব্লক সভাপতি স্বর্ণ সিংহের বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর। পিডিসিআই-এর টিকিটে পঞ্চায়েত নির্বাচন জয়ী হলেও পরে আমি তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলাম।” তাঁর অভিযোগ, “দলের ব্লক সভাপতি স্বর্ণ সিংহের নেতৃত্বাধীন কিছু লোকজন এ দিন ভোরে আমার বাড়িতে হামলা চালায়। ওরা ৫-৬টি বোমা ফাটায়।” পুলিশ জানিয়েছে, দু’পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। যদিও তৃণমূলের সিউড়ি ১ ব্লক সভাপতি স্বর্ণ সিংহের দাবি, “১০০ দিনের প্রকল্পে এলাকায় একটি পুকুরে মাটি কেটে মজুরি না পাওয়ায় কিছু মানুষ ওই পঞ্চায়েত সদস্যের বাড়িতে বোমাবাজি করে বলে শুনেছি। এই ঘটনায় আমাদের দলের কেউ যুক্ত নয়।” |