এক কিশোরকে অপহরণ করার অভিযোগে জেলে থাকা অপর এক কিশোরের বাবা ভাদু ঘোষকে বুধবার জামিন দিলেন কাটোয়া আদালতের অতিরিক্ত জেলা বিচারক অতনু রায়।
গত ১৬ মার্চ নিখোঁজ হয়ে যায় নদিয়ার কালীগঞ্জ থানার নয়াচর গ্রামের কিশোর উত্তম চৌধুরী। ১৭ মার্চ কাটোয়া থানায় প্রথমে নিখোঁজ ডায়েরি করেন উত্তমের মা সুমিত্রাদেবী। এর পরে ২১ মার্চ কাটোয়া থানায় নয়াচর গ্রামের ভাদু ঘোষ ও তাঁর ছেলে রবির বিরুদ্ধে অপহরণের অভিযোগ দায়ের করেন তিনি।
রবি নাবালক। কিছু দিন ‘জুভেনাইল হোমে’ থাকার পরে বর্ধমান আদালত থেকে সে জামিনে ছাড়া পায়। কিন্তু ভাদুবাবু এত দিন ছাড়া পাননি।
ঘটনাচক্রে নিখোঁজ হওয়ার দিন বিকেলেই উত্তম চৌধুরীর সঙ্গে অভিযুক্তদের দেখা হয়েছিল। প্রায় এক মাস পরে নিজেই বাড়ি ফিরে আসে ‘অপহৃত’ উত্তম। পানুহাট বাজার এলাকায় তাকে দেখতে পেয়ে পাকড়াও করে রবি। খবর পেয়ে পুলিশ তাকে ‘উদ্ধার’ করে। কাটোয়া থানা সূত্রে জানা গিয়েছে, উত্তমের বাবা গোপাল চৌধুরী অসুস্থ। মা পানুহাটের বাজারে সব্জি বিক্রি করেন। বিভিন্ন কাজে মাকে সাহায্য করতে হত তাকে। পুলিশের দাবি, সপ্তম শ্রেণির ওই ছাত্র জেরায় পুলিশের কাছে জানায়, কাজ করার ভয়ে সে নিজেই বাড়ি থেকে চলে গিয়েছিল। বাড়ি থেকে পালিয়ে প্রথমে সে কাটোয়া থেকে ট্রেন ধরে শিয়ালদহ স্টেশনে যায়। সেখানে রাত কাটিয়ে হেঁটে যায় হাওড়া স্টেশনে। একটি ক্যান্টিনে কাজও জুটিয়ে নেয়।
সোমবার কাটোয়া এসিজেএম আদালতের বিচারক ইডেন লামসার কাছে গোপন জবানবন্দী দেয় উত্তম। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বিচারকের কাছে আবার উত্তম জানায়, কাটোয়ার পানুহাট বাজারে রবির সঙ্গে চা-বিস্কুট খাওয়ার পরে সে বেহুঁশ হয়ে পড়ে। জ্ঞান ফিরলে দেখে, সে হাওড়া স্টেশনে। এর পরে একটি ক্যান্টিনে সে রুটি তৈরির কাজ করছিল। ক্যান্টিন তিন দিন বন্ধ থাকবে বলে ক্যান্টিনের মালিক তাকে কাটোয়া ঘুরে আসতে বলেছিলেন।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই জবানবন্দীর রিপোর্ট এবং পুলিশের বয়ান হাতে পাওয়ার পরেই ভাদু ঘোষকে জামিন দেন বিচারক। |