খোদ মুখ্যমন্ত্রী গ্রেফতার করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। তা সত্ত্বেও তাঁকে গ্রেফতার তো করতে পারলই না পুলিশ, উল্টে মঙ্গলবার আলিপুর আদালত থেকে আগাম জামিন পেয়ে গেলেন কলকাতা পুলিশের কনস্টেবল এবং তৃণমূলকর্মী তারক দাস।
গত ২৬ এপ্রিল বাঘা যতীন স্টেশনের কাছে এক তৃণমূলকর্মীকে বাঁশ দিয়ে পিটিয়ে খুনের চেষ্টার অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছিল পাটুলি থানার পুলিশ। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩২৬ এবং ৩০৭ ধারায় মামলা দায়ের করা হয় তাঁর বিরুদ্ধে। দু’টি ধারাই জামিন-অযোগ্য। তার পরেও গত ১৮ দিনের মধ্যে পুলিশ তারক দাসকে ধরে আদালতে হাজির করাতে পারেনি।
|
তারক দাস |
এর আগে শিল্প-ধর্মঘটের দিন সাংবাদিকদের মারধর ও সিপিএমের পার্টি অফিস ভাঙচুরের অভিযোগে তাঁকে সাসপেন্ড করেছিল পুলিশ। ২৬ এপ্রিলই ওই ‘সাসপেনশন অর্ডার’ তুলে নেওয়া হয়। অভিযোগ, ওই দিন মুচিপাড়া থানায় কাজে যোগ দিয়েই রাতে ‘সিন্ডিকেট’ সংক্রান্ত গোলমালে জড়িয়ে পড়েন তারক। পুলিশের অভিযোগ, ওই রাতেই প্রদীপ ঘোষ নামে এক তৃণমূলকর্মীকে বাঁশ দিয়ে বেধড়ক মারধর করেন ওই কনস্টেবল। গুরুতর আহত অবস্থায় প্রদীপবাবুকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তার পর থেকেই ফেরার হয়ে যান তারক। স্থানীয় মানুষ অবশ্য অভিযোগ করেছিলেন, তারক এলাকাতেই রয়েছেন। পুলিশ ইচ্ছে করেই তাঁকে গ্রেফতার করছে না।
এ দিন আলিপুর আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক সুদেব মিত্রের এজলাসে তারকবাবুর আগাম জামিনের আবেদন নিয়ে শুনানি হয়। সেই শুনানির সময়ে সরকারের তরফে স্বীকার করে নেওয়া হয় যে, ঘটনার সময়ে আহত অভিযোগকারী প্রদীপ মদ্যপান করেছিলেন। তিনি হাসপাতালে ভর্তি থাকার সময়ে চিকিৎসকের লেখা ব্যবস্থাপত্রেও ওই কথার উল্লেখ করা হয়েছে। শুনানির সময়ে মামলার তদন্তকারী অফিসার কেস ডায়েরি নিয়ে হাজির ছিলেন। এ দিন ওই কেস-ডায়েরি এবং প্রদীপবাবুর মেডিক্যাল রিপোর্ট আদালতে পেশ করা হয়েছে।
তারক দাসের তরফে আদালতে বলা হয়, তিনি কোনও ভাবেই এই মামলায় জড়িত নন। অথচ, পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করার জন্য প্রায়ই বাড়িতে হানা দিচ্ছে। বিচারক কেস-ডায়েরি এবং অভিযোগকারীর মেডিক্যাল রিপোর্ট খতিয়ে দেখে অভিযুক্তের আগাম জামিন মঞ্জুর করে দেন। সরকার পক্ষের আইনজীবী তারকবাবুর আগাম জামিনের আবেদনের বিরোধিতা করেছিলেন কি না, তা অবশ্য আদালতের রেকর্ডে উল্লেখ করা হয়নি। |