জেলার ভার জীবেশকে
নেতৃত্বে কেন উত্তরবঙ্গ নেই, প্রশ্ন বিমানকে
রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীতে উত্তরবঙ্গের কোনও প্রতিনিধি না-থাকা নিয়ে এ বার দলের দার্জিলিং জেলা কমিটির বৈঠকেই প্রশ্নের মুখে পড়লেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বিমান বসু। দলীয় সূত্রের খবর, সোমবার শিলিগুড়িতে দার্জিলিং জেলা কমিটির বৈঠকে তিন জন সরাসরি প্রশ্ন তোলেন, উত্তরবঙ্গের ছয় জেলায় বহু ‘অভিজ্ঞ’ নেতা থাকা সত্ত্বেও কাউকে কেন রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীতে সামিল করা হয়নি? তবে প্রশ্ন শুনলেও রাজ্য সম্পাদক এই নিয়ে কোনও ব্যাখ্যা দেননি বলেই সিপিএম সূত্রের খবর।
নবগঠিত রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীতে উত্তরবঙ্গের প্রতিনিধি না-থাকায় প্রকাশ্যেই মুখ খুলেছিলেন প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য। জেলা কমিটির বৈঠকে এ দিন অবশ্য অশোকবাবু ওই ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করেননি বলে সিপিএম সূত্রের খবর। এমনকী, বৈঠকের পরে সংবাদমাধ্যমের সামনে কোনও কথাও বলতে রাজি হননি অশোকবাবু। তবে জেলা সিপিএম সূত্রের ইঙ্গিত, আজ, মঙ্গলবার নবগঠিত জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠকেও বিষয়টি আলোচনায় উঠতে পারে।
পাশাপাশি: শিলিগুড়িতে দলীয় কার্যালয়ে জেলার ভারপ্রাপ্ত
সম্পাদক জীবেশ সরকার এবং বিমান বসু। সোমবার।
সিপিএমের দার্জিলিং জেলার নতুন সম্পাদকমণ্ডলী গঠিত হয়েছে এ দিনই। বর্তমান জেলা সম্পাদক সাঙ্গপাল লেপচার আর্জি মেনে তাঁকে অনির্দিষ্ট কালের ‘ছুটি’তে থাকার অনুমতি দিয়েছে জেলা কমিটি। জীবেশ সরকার দলের ভারপ্রাপ্ত জেলা সম্পাদক হিসেবে কাজ চালাবেন বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। বৈঠকের পরে বিমানবাবু বলেন, “সাঙ্গপাল লেপচা শারীরিক ভাবে সুস্থ নন। উনি নিজেই ছুটি চেয়ে ১ মে আমার কাছে লিখিত আবেদন করেন। কত দিন ছুটিতে থাকবেন, সেই সময়সীমা এখনও নেই। সর্বসম্মতিক্রমে জীবেশ সরকারকে ভারপ্রাপ্ত জেলা সম্পাদক করা হয়েছে।” তবে ছুটিতে যাওয়ার সঙ্গে পদত্যাগের কোনও সম্পর্ক নেই বলে বিমানবাবু স্পষ্ট করে দিয়েছেন। তাঁর কথায়, “এর আগে রতনলাল ব্রাহ্মণের আমলে একই ভাবে জেলা সম্পাদকের দায়িত্ব সামলেছেন আনন্দ পাঠক। এটা নতুন কিছু নয়।” জেলা সম্পাদকমণ্ডলী ১৭ থেকে কমে হয়েছে ১৪ সদস্যের। বাদ গিয়েছেন প্রাক্তন সভাধিপতি তথা স্কুল শিক্ষিকা মণি থাপা, চা-বাগানের চিকিৎসক তথা সিটু নেতা প্রাণতোষ রায় ও পরিবহণ ব্যবসায়ী রবি চম্পটি। সিপিএম সূত্রের বক্তব্য, পূর্ণ সময়ের সদস্য ছাড়া জেলা সম্পাদকমণ্ডলীতে কাউকে রাখা হবে না। ওই তিন জন পেশাগত কারণে পুরো সময় দলের জন্য দিতে পারেন না বলে তাঁদের সরানো হয়েছে। তবে জেলা কমিটিতে থাকছেন।
যে তিন জনকে সরানো হল, তাঁদের মধ্যে মণিদেবী পাঁচ বছর শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের সভাধিপতি ছিলেন। কিন্তু তাঁর আমলের নানা প্রকল্প ও নিয়োগের ব্যাপারে দলের মধ্যেই প্রশ্ন আছে। প্রাণতোষবাবু সিটু নেতা হলেও ‘প্রাইভেট প্র্যাকটিস’ ও চাকরি নিয়ে ব্যস্ততার কারণে দলের মধ্যেই নানা সময়ে সমালোচিত হয়েছেন। রবিবাবুর পরিবহণের ব্যবসা ক্রমশ বিস্তারে দলীয় পদমর্যাদা ব্যবহার হচ্ছে কি না, তা নিয়েও দলের একাংশের প্রশ্ন রয়েছে। জেলা সিপিএমের একটি সূত্রের মতে, দলের ‘ভাবমূর্তি’ ঠিক রেখে সংগঠন জোরদার করতে যে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, তা ওই তিন জনকে সরানোর মাধ্যমেই স্পষ্ট করে দিয়েছেন বিমানবাবুরা।
বস্তুত, ৮৫ বছরের এস পি লেপচাকে যে দায়িত্ব থেকে ‘অব্যাহতি’ দেওয়া হবে, তা ডিসেম্বরের জেলা সম্মেলনের পরেই বুঝিয়ে দেন জেলা নেতৃত্ব। জেলা সম্পাদক থেকে গেলেও লেপচা দলকে জানান, তিনি শারীরিক অসুস্থতার কারণে কাজ করতে পারছেন না। দলীয় সূত্রের খবর, ওই সময় থেকেই অশোকবাবুর উদ্যোগে ‘অলিখিত ভাবে’ দলের জেলা সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছিলেন জীবেশবাবু। তাঁকে ভারপ্রাপ্ত জেলা সম্পাদক করা নিয়ে কোনও সমালোচনা এখনও প্রকাশ্যে না-এলেও জেলা সম্পাদকমণ্ডলীতে ৮০ ছুঁইছুইঁ নেতাদের রেখে দেওয়ায় বিতর্ক দানা বেঁধেছে। জেলা স্তরের কিছু নেতার বক্তব্য, এক দিন বাদেই লেপচা ৮৫ বছরে পা দেবেন। জন্মদিনের ২৪ ঘণ্টা আগে শারীরিক কারণে তাঁকে ‘অব্যাহতি’ দেওয়াটা ভাল ব্যাপার। কিন্তু সত্তরোর্ধ্ব আনন্দ পাঠক, বীরেন বসু, অজিত সরকার, অনিল সাহা এবং অচিন্ত্য ঘটককে কেন বয়সের কথা চিন্তা করে বিশ্রাম দেওয়া হল না, সেই প্রশ্ন তুলেছেন ওই ‘ক্ষুব্ধ’ নেতারা।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.