সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে মেডিক্যালে ভর্তির জন্য চলতি বছর থেকেই সারা দেশে অভিন্ন প্রবেশিকা পরীক্ষা চালু করতে উদ্যোগী হয়েছিল মেডিক্যাল কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া (এমসিআই)। কিন্তু কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক সোমবার জানিয়েছে, অভিন্ন ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হবে আগামী বছর থেকে।
পশ্চিমবঙ্গ-সহ বেশ কয়েকটি রাজ্য অভিন্ন প্রবেশিকা পরীক্ষার ব্যাপারে বিরোধিতা করায় এত দিনে ওই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়নি। সংসদের স্বাস্থ্য বিষয়ক পরামর্শদাতা কমিটির সদস্যের কাছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের অফিসারেরা অবশেষে জানিয়েছেন, ২০১৩-’১৪ আর্থিক বছর থেকে সারা দেশে ওই প্রবেশিকা পরীক্ষা চালু হবে। শুধু তা-ই নয়, আগামী ১০ বছরের মধ্যে দেশে চিকিৎসকের সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ করার পরিকল্পনা করছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। এ দিন সংসদীয় পরামর্শদাতা কমিটির বৈঠকে এই বিষয়েও আলোচনা হয়। সারা দেশের মেডিক্যাল শিক্ষার পরিকাঠামো নিয়ে আলোচনার জন্য ওই বৈঠক ডাকা হয়েছিল। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী গুলাম নবি আজাদ বৈঠকে ছিলেন।
বৈঠকের পরে স্বাস্থ্য মন্ত্রকের এক কর্তা জানান, ২০২১ সালের মধ্যে দেশে এমবিবিএস-এ ৮০ হাজার এবং স্নাতকোত্তর মেডিক্যালে ৪৫ হাজার আসনের ব্যবস্থা করা হবে বলে প্রাথমিক ভাবে স্থির হয়েছে। এখন দেশের ৩৩৫টি মেডিক্যাল কলেজ মিলিয়ে ওই আসন-সংখ্যা যথাক্রমে ৪১,৫৬৯ এবং ২২,১৯৪। আসন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হলেও পড়ানোর জন্য শিক্ষক-চিকিৎসকের সংখ্যা কী ভাবে বাড়বে, সেই বিষয়ে অবশ্য এ দিন কিছু জানানো হয়নি।
স্বাস্থ্য মন্ত্রকের সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান বলছে, এখন দেশে যে-৩৩৫টি মেডিক্যাল কলেজ রয়েছে, তার অধিকাংশই দক্ষিণ ও পশ্চিম ভারতে। পূর্বাঞ্চলে মেডিক্যাল কলেজের সংখ্যা অনেক কম। মোট মেডিক্যাল কলেজের মাত্র ১০ শতাংশ। এই ‘বৈষম্য’ মেটানোর জন্যও আসন-সংখ্যা বাড়ানো জরুরি বলে মনে করছেন স্বাস্থ্যকর্তারা।
মেডিক্যালে আসন-সংখ্যা বাড়ার সম্ভাবনায় খুশি এ রাজ্যের স্বাস্থ্যকর্তারাও। স্বাস্থ্য (শিক্ষা) অধিকর্তা সুশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এ রাজ্যে মেডিক্যাল কলেজের সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে। চালু মেডিক্যাল কলেজগুলিতেও আসন-সংখ্যা ধাপে ধাপে বাড়ছে। চিকিৎসকের সংখ্যা না-বাড়লে যথাযথ পরিষেবা দেওয়া সম্ভব নয় বুঝে গোড়া থেকেই আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক সহায়তা করলে লক্ষ্যে পৌঁছতে সুবিধা হবে।”
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক সূত্রের খবর, লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হলে দেশে প্রতি এক হাজার জনসংখ্যা-পিছু এক জন করে চিকিৎসক থাকবেন। এখন ২০০০ জনসংখ্যায় এক জন চিকিৎসক রয়েছেন। |