কোলিয়ারির মাল পরিবহণে জমিহারাদের যানবাহন ব্যবহার এবং কোলিয়ারির ৫০০ মিটারের মধ্যে বসবাসকারী পরিবারগুলিকে অবিলম্বে পুনর্বাসন দেওয়ার দাবিতে বাঁকুড়ার বড়জোড়ার নির্মীয়মাণ ‘ট্রান্স দামোদর কোল মাইন প্রজেক্ট’-এর মূল দরজায় বিক্ষোভ দেখালেন জমিদাতা কয়েকশো বাসিন্দা। সোমবার সকালে বেশ কয়েক ঘণ্টা এই বিক্ষোভ চলে। বিক্ষোভকারীর একাংশ জেলাশাসকের কাছে দাবি লিখিত জানান। জেলাশাসক মহম্মদ গুলাম আলি আনসারি জানান, এ বিষয়ে কোলিয়ারি কর্তৃপক্ষই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন। |
গত ১৩ এপ্রিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই কোলিয়ারির উদ্বোধন করেছিলেন। সে দিনও জমিহারাদের সংগঠনের তরফে মুখ্যমন্ত্রীকে দাবি নিয়ে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। বিক্ষোভকারীদের তরফে বিশ্বজিৎ পাল, অশোক বন্দ্যোপাধ্যায়দের অভিযোগ, “জমিহারাদের যানবাহনই কোলিয়ারির মাল পরিবহণের কাজে লাগানো হবে বলে আমাদের আশ্বাস দিয়েছিলেন কোলিয়ারি কর্তৃপক্ষ। বাস্তবে আমাদের যানবাহনের পাশাপাশি বাইরের কিছু ট্রাক-লরি লরি নিয়ে এসেও মাল পরিবহণ করানো হচ্ছে।” তাঁদের আরও ক্ষোভ, “কথা ছিল কোলিয়ারি থেকে কয়েকশো মিটারের মধ্যে বসবাসকারী জমাদার গ্রামের ১৭টি পরিবারকে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করানোর পরে বিস্ফোরণ ঘটানো হবে। এ ক্ষেত্রেও কথা রাখা হয়নি।”
এলাকাবাসীর দাবি, অবিলম্বে ওই পরিবারগুলিকে পুনর্বাসন দিতে হবে। জয়দেব পাল, মানিক ঘোষরা বলেন, “কোলিয়ারির পাশেই আমাদের জমি রয়েছে। কোলিয়ারির গর্তের জমা জল আমাদের জমিতে এসে পড়ায় ধান নষ্ট হচ্ছে। আমাদের দাবি, নিকাশি ব্যবস্থা পরিবর্তন করা হোক এবং ধান নষ্টের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হোক।”
কোলিয়ারি সূত্রে জানা গিয়েছে, মোট ৬৯৪ একর জমি অধিগ্রহণ করা হবে। এখনও পর্যন্ত প্রায় ৩০০ একর অধিগৃহীত হয়েছে। কোলিয়ারির প্রশাসনিক আধিকারিক পতিতপাবন মিশ্র বলেন, “কোলিয়ারির জলের ফলে যতটা জমির ফসল নষ্ট হয়েছে, তার একটি রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে আলোচনায় বসে আমরা ক্ষতিপূরণ দেব। পুনর্বাসনের জায়গাও চিহ্নিত হয়েছে। দ্রুত পুনর্বাসনের ব্যবস্থা হচ্ছে।” তবে কোলিয়ারির পরিবহণ-সংক্রান্ত যে অভিযোগ তুলেছেন জমিহারারা, সে বিষয়ে পতিতপাবনবাবুর বক্তব্য, “যে পরিবহণ সংস্থা এই দায়িত্বে রয়েছে, তারাই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে।” |