সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রকে অপহরণের অভিযোগে জেল হাজতে রয়েছেন অন্য এক কিশোরের বাবা। ইতিমধ্যে বাড়ি ফিরে এল ‘অপহৃত’ কিশোর। সোমবার তাকে বর্ধমানের কাটোয়া আদালতে পাঠিয়ে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে গোপন জবানবন্দি দিইয়েছে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, যাকে অপহরণ করা হয়েছিল বলে অভিযোগ, তার নাম উত্তম চৌধুরী। বাড়ি কাটোয়ার কাছে নদিয়ার কালীগঞ্জ থানা এলাকার নয়াচর গ্রামে। তবে কাটোয়া শহরে অনাদিবাবুর বাগান এলাকার কাছেই থাকত সে। গত ১৬ মার্চ থেকে তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। পরের দিন তার মা সুমিত্রা চৌধুরী কাটোয়া থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন। ২১ মার্চ তিনি অপহরণের অভিযোগ দায়ের করেন। তার ভিত্তিতে পুলিশ নয়াচর গ্রামের ভাদু ঘোষ ও তাঁর ছেলে রবিকে গ্রেফতার করে। |
রবি নাবালক। সে কারণে কিছু দিন ‘জুভেনাইল হোমে’ থাকার পরে সে বর্ধমান আদালত থেকে জামিনে ছাড়া পায়। কিন্তু ভাদুবাবু ছাড়া পাননি। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রবিবার কাটোয়ার পানুহাট বাজার এলাকায় উত্তমকে দেখতে পেয়ে পাকড়াও করে রবি। খবর পেয়ে পুলিশ তাকে ‘উদ্ধার’ করে। কাটোয়া থানার ওসি সনৎ দাস জানান, উত্তমের বাবা গোপাল চৌধুরী অসুস্থ। মা পানুহাটের বাজারে সব্জি বিক্রি করেন। বিভিন্ন কাজে মাকে সাহায্য করতে হত তাকে। উত্তম জেরায় জানিয়েছে, কাজ করার ভয়ে সে নিজেই বাড়ি থেকে চলে গিয়েছিল। ওসি বলেন, “এর আগেও কয়েক বার সে বাড়ি থেকে পালিয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি।”
উত্তম পুলিশকে জানিয়েছে, বাড়ি থেকে পালিয়ে প্রথমে সে কাটোয়া থেকে ট্রেন ধরে শিয়ালদহ স্টেশনে গিয়েছিল। সেখানে রাত কাটিয়ে হেঁটে হাওড়া স্টেশনে যায়। এক ক্যান্টিনে কাজও জুটিয়ে নেয়। পুলিশের দাবি, উত্তম জেরায় জানিয়েছে যে, তিন দিন ক্যান্টিন বন্ধ থাকবে জানিয়ে সেটির মালিক তাকে বাড়ি ঘুরে আসতে বলেছিলেন। এর পরেই সে ট্রেন ধরে কাটোয়ায় ফেরে। উত্তম অবশ্য দাবি করেছে, “নিখোঁজ পোস্টারে ছবি দেখে ক্যান্টিনের মালিক আমায় টাকা দিয়ে কাটোয়ার ট্রেনে তুলে দেয়। আমি বাড়ি চলে আসি।”
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, পানুহাট বাজারে উত্তমকে দেখতে পেয়ে রবি তাকে ধরে বলে, বাড়ি ফিরে সবাইকে সত্যি কথা বলতে হবে। পুলিশ এসে তাকে নিয়ে যায়। সুমিত্রাদেবী অবশ্য দাবি করেন, “পানুহাট বাজারে চা-বিস্কুট খাইয়ে রবি আমার ছেলেকে বেহুঁশ করে দেয়। তার পর রবি ও তার বাবা তাকে অপহরণ করে। এখন বাবা জেল খাটছে দেখে রবি আমার ছেলেকে ফেরত নিয়ে এসেছে।” যদিও রবি বা তার বাবা কেন উত্তমকে অপহরণ করতে যাবে, তার সদুত্তর পাওয়া যায়নি। |