বাম সরকারের আমলে ২০০৪-২০০৫ সাল থেকে শুরু হওয়া বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ চলতি বছরের ৩১ মে’র মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দিলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। রবিবার মালদহ জেলাশাসকের কনফারেন্স হলে মালদহ ও দুই দিনজপুরের জেলাশাসক, সভাধিপতি, মহকুমাশাসক, বিডিও,পুরসভার চেয়ারম্যান, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিদের নিয়ে বৈঠক করেন তিনি। বৈঠকে তিন জেলার মন্ত্রী আব্দুল করিম চৌধুরি, সাবিত্রী মিত্র, শংকর চক্রবর্তী, আবুনাসের খান চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। এদিন বৈঠকের পর ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা দেখতে তিনি চাঁচলের সোদপুর ও করণদিঘি যান। বৈঠকের শেষে সাংবাদিক বৈঠকে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী বলেন, “২০০৪-০৫ সাল থেকে প্রায় ৪৪৪ টি প্রকল্পের কাজ চলছিল। আমরা ক্ষমতায় আসার পর অধিকাংশ কাজ শেষ করা হয়েছে। বর্তমানে ৬০টি প্রকল্পের কাজ চলছে। তা চলতি মে মাসের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তা শেষ হলেও ওই প্রকল্পগুলির দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজের জন্য টাকা বরাদ্দ করা হবে।” |
তিনি অভিযোগ করেন, বাম আমলে প্রচুর প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। যেগুলির কাজ এখনও শুরু হয়নি। অথচ সেই প্রকল্পের প্রায় ২৬ কোটি টাকা বছরের পর বছর বিভিন্ন জেলায় পড়ে রয়েছে। তিনি বলেন, “যে সমস্ত প্রকল্পের কাজ শুরু হয়নি তার টাকা ফেরত দিতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি বিভিন্ন জেলাশাসকের পিএল অ্যাকাউন্টে দীঘদিন ধরে যে ৪৮.৬ কোটি পড়ে রয়েছে সেটাও তুলে নেওয়া হচ্ছে।” এদিন বৈঠকের শেষে মন্ত্রী গৌতম দেব জানান, উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন পর্ষদের বৈঠক কেবলমাত্র শিলিগুড়িতে সীমাবদ্ধ করে রাখা হবে না। উত্তরবঙ্গের সমস্ত জেলায় ছড়িয়ে দেওয়া হবে। এদিন মালদহে ব্যাপক জলাভূমি ভরাটের কথা শুনে মন্ত্রী বলেন, “জলাভূমি আমাদের সংরক্ষণ করতে হবে। কোথাও যদি জলাভূমি ভরাট করে কেউ যদি সবুজকে নষ্ট করে তবে আমি তার বিরুদ্ধে নামব। জেলাশাসকের কাছে জলা ভরাটের রিপোর্ট নিয়ে যা ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” চাঁচলের সদরপুরে বাজ পড়ে মৃত মহিলার পরিবারকে দু’লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্য দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী। এদিন বিকালে সদরপুরে গিয়ে মৃতার পরিবারকে সমবেদনা জানান তিনি। রাজ্য সরকারের তরফে ওই আর্থিক সাহায্য করা হবে বলে তিনি জানান। তাঁর সঙ্গে ছিলেন তৃণমূলের রাজ্য যুগ্ম সম্পাদক বাবলা সরকার। গত শুক্রবার সকালে ঝড়-বৃষ্টির সময় মাঠ থেকে গবাদি পশু নিয়ে আসার সময় বাজ পড়ে মারা যান দুলালি দাস (৩৫)। বিবাহিত দুই মেয়ে ছাড়াও আরও দুই মেয়ে এবং এক ছেলে রয়েছে তাঁর। স্বামী বলরাম দাস দিনমজুরি করে সংসার চালান। অভাবের সংসারে ছেলেকে পড়াতে পারলেও দুই মেয়ের পড়াশুনা হয়নি। দুলালি দেবীর মৃত্যুতে পরিবারটি আরও অসহায় হয়ে পড়েছে। শুক্রবার করণদিঘির সিনানদিঘিতে বাজ পড়ে ৭ জনের মৃত্যু হয়। একই পরিবারের ৩ জন রয়েছে। পরিবার পিছু ২ লক্ষ টাকা সাহায্য দেওয়া হবে বলে মন্ত্রী জানান। |