মশার উপদ্রবে নাভিশ্বাস উঠেছে শিলিগুড়ি পুর এলাকার বাসিন্দাদের। বিভিন্ন ওয়ার্ডে এই সমস্যা নিয়ে পুরসভার সংশ্লিষ্ট বিভাগকে বলা হলেও ওষুধের অভাবে মশা ঠেকাতে প্রয়োজনীয় ‘স্প্রে’ ঠিক মতো করা সম্ভব হচ্ছে না বলে অভিযোগ তুলেছেন বিরোধীরাও। তা ছাড়া অনেক ক্ষেত্রেই নিকাশির বেহাল পরিস্থিতিতে নর্দমার জমা জল মশার আঁতুড়ঘরে পরিণত হয়েছে। সন্ধ্যার পর তো বটেই দিনের বেলাতেও মশার উপদ্রবে ঘরে টেকা দায় হয়ে পড়েছে বলে বাসিন্দারা অভিযোগ তুলেছেন। এক তলা বাড়িই হোক অথবা ৫/৬ তলা, মশার উপস্থিতি সর্বত্রই। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুরসভার তরফে মশা মারার ২ টি কামান কেনার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। শীঘ্রই তা কেনার সিদ্ধান্তও হয়েছে। ওয়ার্ডগুলিতেও একটি করে অতিরিক্ত ‘স্প্রে’ মেশিন সরবরাহ করা হয়েছে। তাতে অবশ্য সমস্যা মেটেনি। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্তমানে মশার উপদ্রব ঠেকাতে যে ‘স্প্রে’ করা হয়ে থাকে তা লার্ভা নাশক। মশা মারতে তা কার্যকর নয়। সে কারণে নর্দমা বা যেখানে জমা জল রয়েছে সব জায়গায় এই স্প্রে করা হয়ে থাকে। বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ পুর কর্মীরা বাড়ির সামনে নর্দমার একাংশে দায়সারা ভাবে স্প্রে করে চলে যাচ্ছেন। বাড়ির অনাচে কানাচে স্প্রে করা হচ্ছে না। সে কারণে কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। বিরোধী দলের কাউন্সিলরদের একাংশের বক্তব্য, লার্ভা মারার তেল কম দেওয়ায় ঠিক মতো স্প্রে করা যাচ্ছে না। তবে মশা কমাতে স্প্রের তেল কম দেওয়া হচ্ছে বলে বিরোধীরা যে অভিযোগ তুলছেন তা মানতে নারাজ পুরসভার সাফাই বিভাগের মেয়র পারিষদ দুলাল দত্ত। তিনি বলেন, “ওয়ার্ডগুলিতে পর্যাপ্ত তেল সরবরাহ করা হচ্ছে। সমস্ত ওয়ার্ডে ১ টি করে স্প্রে মেশিন ছিল। আরও একটি করে দেওয়া হয়েছে। ঠিক মতো স্প্রে করা হচ্ছে না বলে বাসিন্দারা অভিযোগ তুললে তা নিশ্চিয়ই দেখা হবে। পাশাপাশি ওয়ার্ড কমিটিগুলিকে এ ব্যাপারে ভাল ভাবে তদারকি করতে বলা হবে।” পুরসভারই একটি সূত্র জানিয়েছে, আগে মশা মারতে যে তেল সরবরাহ করা হত তা বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার তরফে নিষিদ্ধ করা হয়। এর পর অন্য এক কোম্পানির তেল নেওয়া হলেও তাতে কাজ হচ্ছে না দেখে ফের তা বদলে অন্য কোম্পানির কাছ থেকে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বাসিন্দাদের একাংশের বক্তব্য, মাঝে মধ্যে শহরে কামান দেগে মশা তাড়াতে দেখা যায় বটে তবে নিয়মিত ওই কাজ হয় না। বহুতলগুলিতেও মশার উপদ্রব বেড়েছে। পুর কর্তৃপক্ষ অবশ্য দাবি করেছেন, মশা মারতে প্রতিটি বরোতে ১ টি করে মোট ৫টি কামান এবং পুরসভার সদর দফতরে একটি কামান রয়েছে। তা দিয়ে মশা মারতে নিয়মিত ধোঁয়া ছড়ানো হয়। বিরোধী দলনেতা মুন্সি নুরুল ইসলাম বলেন, “পর্যাপ্ত তেল দেওয়া হচ্ছে বললেই তো হল না। ওয়ার্ডে নিয়মিত স্প্রে করতে কী পরিমাণ তেল দরকার তা যাচাই করে সেই মতো তেল দেওয়া দরকার। তেলের অভাবে ঠিক মতো স্প্রে করা সম্ভব হচ্ছে না। তা ছাড়া প্রাক বর্ষার মরসুমে নিকাশি নালাগুলি সাফ করা হয়। এখনও সে কাজ না হওয়ায় নিকাশিগুলি বেহাল হয়ে পড়েছে। নালাগুলিতে জমা জলে মশা জন্মাচ্ছে।” |