চিত্তরঞ্জনের রেল ইঞ্জিন কারখানার কস্তুরবা গাঁধী হাসপাতালে আগুন লাগার কারণ অনুসন্ধান করতে তিন সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। দু’এক দিনের মধ্যেই তাঁরা আগুন লাগার কারণ জানাতে পারবেন বলে জানিয়েছেন। এই ঘটনার পরে হাসপাতালে আরও বেশি নিরাপত্তা দেওয়ার দাবি তুলেছে শ্রমিক সংগঠনগুলি। কর্তৃপক্ষের আশ্বাস, উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
হাসপাতালের ‘আইসোলেশন ওয়ার্ডে’র স্টোর রুমে আগুন লাগে শনিবার ভোরে। আগুন খুব দ্রুত আশপাশে ছড়িয়ে পড়ে। কারখানার একটি দমকলের ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে। পরে আসানসোল থেকে রাজ্য দমকলের আরও একটি ইঞ্জিন যায়। অল্প সময়ের মধ্যে আগুন পুরোপুরি আয়ত্তে চলে আসে। কিন্তু আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে পুরো হাসপাতাল চত্বরে। শ্রমিক মহলে ক্ষোভ-বিক্ষোভও শুরু হয়। তাঁরা আরও নিরাপত্তার দাবি তোলেন কর্তৃপক্ষের কাছে।
কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা গিয়েছে, আগুন লাগার এই ঘটনাটিকে তাঁরাও ছোট করে দেখছেন না। এই নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেছেন কর্তৃপক্ষ। আগুন লাগার কারণ অনুসন্ধান করার জন্য তিন জনের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। চিত্তরঞ্জন রেল ইঞ্জিন কারখানার জন সংযোগ আধিকারিক মন্তার সিংহ এ দিন জানিয়েছেন, কমিটিতে আছেন চিফ মেডিকেল সুপারিন্টেন্ডেন্ট, চিফ পার্সোনেল অফিসার এবং ডেপুটি মেডিকেল অফিসার। দু’এক দিনের মধ্যে তাঁরা আগুন লাগার কারণ জানাতে পারবেন বলে মনে করা হচ্ছে। |
কী ভাবে লাগল আগুন? জনসংযোগ আধিকারিক মন্তার সিংহ জানিয়েছেন, প্রাথমিক তদন্তে দমকলের অনুমান, আগুন লাগে শর্ট সার্কিট থেকে। ওই স্টোর রুমে ফিনাইল, ব্লিচিং পাউডার, মেঝে পরিষ্কার করার এক রকম তরল ও তুলো-ব্যান্ডেজ ইত্যাদি রাখা ছিল। এ গুলি সহজদাহ্য হওয়ায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। স্টোর রুমে অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র ছিল। কিন্তু অনেক ভোরে আগুন লাগায় ওই যন্ত্র তখনই ব্যবহার করার লোক পাওয়া যায়নি। আগুন লাগার কারণ হিসেবে কর্তৃপক্ষের একাংশ অন্তর্ঘাতের সম্ভাবনাকেও উড়িয়ে দিচ্ছেন না। তাঁদের দাবি, স্টোরে রাখা জিনিসপত্রের হিসাবে সম্প্রতি কিছু গরমিল পাওয়া গিয়েছিল। সেই গরমিল ধামাচাপা দিতেই আগুন লাগিয়ে দেওয়া হতে পারে বলে কর্তৃপক্ষের একাংশের ধারণা।
আগুন লাগার কারণ যাই হোক না কেন হাসপাতালে আরও বেশি নিরাপত্তা দেওয়ার দাবি তুলেছে কারখানার অনুমোদিত শ্রমিক সংগঠন ‘লেবার ইউনিয়ন’। সংগঠনের সম্পাদক অলোক ঘোষের অভিযোগ, “কর্তৃপক্ষ নিয়মিত হাসপাতালের দেখভাল করেন না। তাই এই অবস্থা তৈরি হয়েছে।” হাসপাতালের জন্য তাঁরা সর্বক্ষণের একটি দমকলের ইঞ্জিন রাখার দাবি তুলেছেন। হাসপাতালের নিরাপত্তায় গাফিলতির অভিযোগ তুলেছে রেলওয়ে এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন। সংগঠনের সম্পাদক প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, হাসপাতালটি ঝোপঝাড় আবর্জনায় ভরে গিয়েছে। বিশেষ করে আইসোলেশন ওয়ার্ডটির অবস্থা খুবই সঙ্গীন। তাঁরা হাসপাতালের আপাদমস্তক সংস্কারের দাবি তুলেছেন। |