গোর্খাল্যান্ড, তেলেঙ্গানার মত আলাদা রাজ্যের দাবিগুলিকে সহনুভূতির সঙ্গে দেখার জন্য দ্বিতীয় রাজ্য পুনর্গঠন কমিশন গড়ার দাবি তুলল দেশের পাঁচটি বামপন্থী দলের যৌথ মঞ্চ। বামফ্রন্টের বাইরের দলগুলিকে নিয়ে ‘বিকল্প বামপন্থা’র ভাবনাকে সামনে রেখে অল ইন্ডিয়া লেফট কো-অর্ডিনেশন কমিটি গড়ে তোলা হয়েছে। সম্প্রতি দার্জিলিঙে কমিটির ডাকে একটি সেমিনার হয়েছে। সেখানে সিপিআরএম, সিপিআই (এমএল) লিবারেশন, সিপিএম (পঞ্জাব), মহারাষ্ট্রের লাল নিশান পার্টি এবং কেরলের লেফট কো-অর্ডিনেশনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। পাশাপাশি, মে দিবস উপলক্ষে দার্জিলিং চকবাজারে সিপিআরএম একটি জনসভা করেছে। সেখানে মঞ্চের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। সেমিনারে বিভিন্ন আন্দোলন কর্মসূচির পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে রাজ্য পুনর্গঠন কমিটি গড়ার দাবি জানানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। মঞ্চের সদস্য তথা সিপিআই (এমএল) লিবারেশনের সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য বলেন, “মানুষের সমস্যা-দাবি দেওয়াকে সামনে রেখেই মঞ্চ আন্দোলন করছে। পাহাড়ে মানুষের দাবিদাওয়া পূরণ হচ্ছে না। অনুন্নয়নে ঢেকে যাচ্ছে পাহাড়। দেশের অন্য কয়েকটি প্রান্তে একই অবস্থা রয়েছে। তাই আমাদের দাবি দ্বিতীয় রাজ্য পুনর্গঠন কমিশন গঠন করা হোক।” গত মার্চ মাসে কমিশন গঠনের দাবি মঞ্চের তরফে রাষ্ট্রপতি জানানো হয়েছে। ২০১০ সালের অগস্ট মাসে দিল্লিতে বামপন্থীদের এই মঞ্চটি তৈরি হয়। মূলত পঞ্জাব, কেরলে সিপিএম থেকে বার হওয়া আসা দলগুলি এতে যোগদান করে। পরবর্তীতে এই রাজ্যে পাহাড়ে সিপিএম ভেঙে তৈরি সিপিআরএমও মঞ্চের সদস্য হয়। মঞ্চের নেতারা জানান, গোর্খাল্যান্ড নিয়ে কেবল পশ্চিমবঙ্গে বা তেলেঙ্গনা নিয়ে অন্ধ্রপ্রদেশে লড়াই করে লাভ হবে না। দেশ জুড়ে তার প্রচার, আন্দোলন দরকার। পাশাপাশি, বামফ্রন্ট কেবলমাত্র সরকার কেন্দ্রীক হয়ে উঠেছে। তার বাইরে বামপন্থার প্রচার, সংগ্রামের কথা মাথায় রেখে মঞ্চটি তৈরি হয়েছে। সিপিআরএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অরুণ ঘাটানি বলেন, “এই নিয়ে তিন দশকে দার্জিলিং পাহাড়ে দুটি চুক্তি হল। গোর্খা পার্বত্য পরিষদ এবং গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (জিটিএ)। একটি দুই দশক চলেছে। আরেকটি আইন হয়েই পড়ে রয়েছে। কী হবে তা কারও কাছে পরিষ্কার নয়। পাহাড়ের মানুষ বঞ্চিতই থেকে গিয়েছে। তাই আলাদা রাজ্যের বিষয়টি কেন্দ্রীয় সরকারের দেখা উচিত। সেমিনারে তাই রাজ্য পুনর্গঠন কমিশন গড়ার দাবি তোলা হয়েছে।” চকবাজারের জনসভা থেকে মঞ্চের দাবিদাওয়া, সিদ্ধান্তের প্রচার শুরু হবে বলে অরুণবাবু জানিয়েছেন। সেমিনারে রাজ্যে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় আন্দোলনে নামার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। |