সমন্বয় নেই পঞ্চায়েতের কাজে
তিন বছর হয়েছে ইন্দিরা আবাস প্রকল্পের প্রাপকের তালিকা গ্রাম পঞ্চায়েত দফতর থেকে পাঠানো হচ্ছে না। একশো দিনের কাজের প্রকল্পে গত বছর মাত্র ৮টি প্রকল্পের কাজ হয়েছে। বার্ধক্য ভাতা ও বিধবা ভাতার কাজ চলছে বিডিও অফিস থেকে। সমন্বয়ের অভাবে জলপাইগুড়ি শহর লাগোয়া পাহাড়পুর গ্রাম পঞ্চায়েতে এ ভাবেই বিভিন্ন প্রকল্পের কাজে বিঘ্ন ঘটছে বলে অভিযোগ। যদিও পঞ্চায়েত প্রধান বিশ্বজিৎ সরকার ওই সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “সিপিএমের সঙ্গে কংগ্রেস ও তৃণমূলের একাংশ চক্রান্তে লিপ্ত হয়েছে। প্রশাসনের একটি মহল থেকেও তাঁদের ইন্ধন দেওয়া হচ্ছে। ইন্দিরা আবাস যোজনায় সম্প্রতি ১৭৫ জন ঘর পেয়েছেন। পাহাড়পুরে একশো দিনের কাজ ভাল ভাবেই চলছে। যে সমস্ত অভিযোগ তোলা হচ্ছে সবই ভিত্তিহীন।”
২০০৮ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনে ওই গ্রাম পঞ্চায়েত সিপিএমের দখল থেকে ছিনিয়ে নেয় কংগ্রেস ও তৃণমূল জোট। কংগ্রেসের বিশ্বজিৎ সরকার প্রধান নির্বাচিত হন। এরপরে তৃণমূল ও কংগ্রেসের একাংশ পঞ্চায়েত সদস্য অনাস্থা প্রস্তাব এনে বিশ্বজিৎবাবুকে প্রধানের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়। অনাস্থা প্রক্রিয়া অবৈধ দাবি করে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন বিশ্বজিৎবাবু। আদালতের অন্তর্বর্তী নির্দেশে ফের তাঁকে প্রধান পদে বহাল করা হয়।
গত এক বছরে পাহাড়পুর গ্রাম পঞ্চায়েতে গ্রাম সংসদ এবং গ্রাম সভার বৈঠক প্রধান করতে দেননি বলে অভিযোগ। এমনকি পঞ্চায়েত সদস্যদের নিয়ে যে সাধারণ সভা হওয়ার কথা সেটাও এক বছরের বেশি সময় ধরে হয় না। খোদ তৃণমূল ও কংগ্রেসের একাংশ পঞ্চায়েত সদস্য বিডিও অফিসে চিঠি দিয়ে সাধারণ সভা হয় না বলে অভিযোগ জানান। এর পরে সদর ব্লকের বিডিও দ্রুত সাধারণ সভা ডাকার নির্দেশ দিলেও সেই নির্দেশ মানা হয়নি বলে অভিযোগ। যদিও পঞ্চায়েত প্রধান বিশ্বজিৎবাবুর দাবি, “সাধারণ সভা হয় না বলে যে অভিযোগ উঠেছে সেটা ভিত্তিহীন। গত বছর অক্টোবর মাসে সভা হয়েছে।” প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, একশো দিনের কাজের প্রকল্পে ২০১১-২০১২ সালে পাহাড়পুর গ্রাম পঞ্চায়েতে মাত্র ৮টি কাজ হয়েছে। যেখানে সদর ব্লকের মন্ডলঘাট গ্রাম পঞ্চায়েতে ১১০টি এবং নন্দনপুরে ৭৬টি কাজ হয়েছে। গত আর্থিক বছরের শুরুতে পাহাড়পুর গ্রাম পঞ্চায়েত একশো দিনের কাজে প্রায় ১ কোটি ১৪ লক্ষ টাকা খরচ করা হবে বলে লক্ষ্যমাত্রা ঠিক হয়। কিন্তু কাজ হয়েছে মাত্র ২৬ লক্ষ টাকার। দারিদ্র সীমার নীচে বসবাসকারী বাসিন্দাদের ইন্দিরা আবাস যোজনায় ঘর তৈরির প্রকল্পে ২০০৯ সাল থেকে পাহাড়পুর গ্রাম পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ তালিকা পাঠায়নি। প্রশাসনের হিসেবে এর ফলে এলাকার অন্তত ৪০০ গরিব মানুষ ঘর তৈরির সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছে। গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে তালিকা না পেয়ে বিডিও অফিস থেকে পাহাড়পুরে বিধবা এবং বার্ধক্য ভাতা দেওয়ার কাজ চলছে।
ব্লক প্রশাসনের এক আধিকারিকের কথায়, “যে কাজ গ্রাম পঞ্চায়েতের করার কথা সেটা বাধ্য হয়ে বিডিও অফিসকে করতে হচ্ছে।” গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরোধী দলনেতা সিপিএমের কৃষ্ণকান্ত সরকার বলেন, “প্রধান সাহেব তাঁর ঘনিষ্টদের জন্য কাজ করেন। এক বছর ধরে কোনও সভা হয় না। তাই উন্নয়নও স্তব্ধ। কিছু বলতে গেলে উনি হাইকোর্টে যাওয়ার হুমকি দেন।” জোট ক্ষমতায় থাকলেও তৃণমূল নেতা সুরজিত দাস বলেন, “উন্নয়নের দাবিতে ২০০৮ সালে জোটকে ক্ষমতায় আনে সাধারণ মানুষ। অথচ পাহাড়পুরে বর্তমানে উন্নয়ণ শব্দটি হিমঘরে ঢুকে পড়েছে। সাধারণ মানুষ সরকারি সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। আস্থা কমতে শুরু করেছে। বিষয়টি আমরা দলীয় নেতৃত্বকে জানিয়েছি।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.