নীতিগত ভাবে এ বার জলপাইগুড়ি জেলা ভাগের প্রস্তাবকে সমর্থনের কথা জানাল সিপিএম-ও। রবিবার ধূপগুড়িতে এক সাংবাদিক বৈঠকে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বিমান বসু বলেন, “জলপাইগুড়ি জেলা ভাগ হোক, তা নীতিগত ভাবে আমরা সমর্থন করি।” ঘটনা হল, দীর্ঘ দিন ধরে আলিপুরদুয়ারকে পৃথক জেলা ঘোষণার দাবি করে এসেছে ফ্রন্টের শরিক আরএসপি। কংগ্রেস ও তৃণমূলও একই দাবি তোলে। ওই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করায় অভিযুক্ত ছিল সিপিএম। রাজ্যে ক্ষমতা হারানোর পরে জেলা ভাগের বিরোধিতা করে জন-সমর্থন হারানোর আশঙ্কাতেই সিপিএম তাদের এত দিনের অবস্থান ‘বদল’ করল বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা।
ক্ষমতায় এসে রাজ্যের কয়েকটি জেলা ভাগ করার কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মহাকরণ সূত্রের খবর, প্রথম পর্যায়ে পশ্চিম মেদিনীপুর ও জলপাইগুড়ি জেলা ভাগের প্রক্রিয়া চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে। গত সপ্তাহে বিষয়টি নিয়ে মহাকরণে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকও হয়েছে। আজ, সোমবারও মহাকরণে বৈঠক হওয়ার কথা। সরকারের এই তৎপরতার খবর পৌঁছেছে সব দলের কাছে। সিপিএমের অবস্থান বদলের সেটাও অন্যতম কারণ বলে মনে করা হচ্ছে। |
এ দিন ধূপগুড়ি পুর-নির্বাচনে বামফ্রন্টের কর্মিসভায় যোগ দিতে যান বিমানবাবু। সেখানেই তিনি জলপাইগুড়ি জেলা ভাগকে সমর্থন করার কথা জানান। বস্তুত, জেলা ভাগ করে যে ছ’টি ব্লক নিয়ে পৃথক আলিপুরদুয়ার জেলা হওয়ার কথা, সেই ব্লকগুলির মধ্যে কেবলমাত্র ফালাকাটায় সিপিএমের প্রভাব রয়েছে। বাদবাকি এলাকায় আরএসপি-র সংগঠন মজবুত। মূলত, সে কারণে একটি গোটা জেলায় আরএসপি ‘ছড়ি ঘোরাবে’ দেখে সিপিএম জেলা ভাগের বিষয়ে বিরোধিতা করে আসছিল বলে আরএসপি নেতাদের বড় অংশ অভিযোগ করতেন।
পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে মানুষের সমর্থন অর্জন করতেই বিমানবাবু দলীয় অবস্থান থেকে ঘুরেছেন বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা। এত দিন পরে তাঁরা কেন নিজেদের অবস্থান পাল্টালেন, সে প্রশ্নের উত্তরে বিমানবাবু অবশ্য বলেন, “আগে বলা হয়েছে কি না জানি না। এখন আমরা নীতিগত ভাবে জেলা ভাগ সমর্থন করছি। কোন
কোন এলাকা সেখানে পড়ছে, তা দেখতে হবে।” আরএসপি-র প্রাক্তন বিধায়ক নির্মল দাস বলেন, “বহু বছর ধরে আমরা আন্দোলন করছি। জলপাইগুড়ি জেলার সিপিএম নেতারা আলিপুরদুয়ার পৃথক জেলা হোক, তা চাননি। তবে বাম আমলে পরিকাঠামো তৈরি হয়েছে। জেলা তৈরির জন্য আলাদা কমিটিও গঠন করা হয়েছে।” |