বিয়ের প্রস্তুতি শেষ। কনের বাড়িতে হাজির বর। এমন সময় হাজির পুলিশ। বিয়ের আসরে গুঞ্জন। আমন্ত্রিতদের মধ্যে ফিসফিসানি।
শনিবার রাতে তালড্যাংরা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ওই বিয়ের আসরে পুলিশ অবশ্য এমনি এমনি যায়নি। খোদ বাঁকুড়ার পুলিশ সুপারের নির্দেশেই পুলিশ সেখানে যায়। কারণ, পুলিশ সুপার জানতে পেরেছিলেন বিয়ে দেওয়া হচ্ছে এক নাবালিকার। পুলিশ গিয়ে বর-কনে, দু’পক্ষের লোকেদের থানায় ডেকে নিয়ে যায়। বোঝানোর পরে দু’পক্ষই বিয়ে আটকানোর পক্ষে মত দেন। তালড্যাংরার বিডিও সুমন দাসগুপ্ত বলেন, “শুক্রবার পুলিশ সুপারের কাছে এক ব্যক্তি লিখিত ভাবে নাবালিকার বিবাহ দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ জানান। পুলিশ সুপার স্থানীয় থানাকে এই বিয়ে বন্ধ করার নির্দেশ দেন। থানা থেকে আমিও ঘটনার খবর পাই। বিয়ে বন্ধ করা হয়।” পাত্র অবশ্য পাত্রীর প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে রাজি।
স্থানীয় ও প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, তালড্যাংরা বাসস্ট্যান্ড এলাকার বাসিন্দা, ১৬ বছরের পূজা মণ্ডল তালড্যাংরা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী। পূজার সঙ্গে ওই থানারই খাটবাঁধা গ্রামের যুবক, পেশায় একটি স্কুলের নৈশরক্ষী নিমাইচন্দ্র পালের বিয়ে ঠিক হয়েছিল। শনিবার ছিল বিয়ের দিন। ঘটনার খবর পেয়ে রাতেই তালড্যাংরার ওসি সন্দীপন চট্টোপাধ্যায় এবং বিডিও পাত্র ও কনে, উভয় পক্ষকে নিয়ে আলোচনায় বসেন। পূজার মা অলকলতা মণ্ডলের কথায়, “আমার স্বামী আমাকে ছেড়ে দিয়েছে। বাবা, দাদাদের সাহাযেয্যে কোনও রকমে দিন চলে। পূজা আমার একমাত্র মেয়ে। অনেক কষ্টে একটি পাত্র জোগাড় করেছিলাম।” আর পূজা বলছে, “সংসারের এই পরিস্থিতির জন্য মায়ের মুখ চেয়েই বিয়েতে মত দিয়েছিলাম। তবে আরও পড়াশোনা করার ইচ্ছে রয়েছে।” নিমাই বলেন, “আমি পূজাকেই বিয়ে করতে চাই। তাই ওর জন্য অপেক্ষা করব।” বিডিও জানান, পূজার ১৮ বছর পূর্ণ হলেই এই বিয়ে হবে বলে দু’পক্ষই প্রশাসনকে লিখিত ভাবে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। |