একটি স্কুলের নৈশপ্রহরীর অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে নদিয়া হরিণঘাটার দিঘল গ্রামে। পুলিশ জানিয়েছে, ওই ব্যক্তির নাম অখিল দত্ত (৪২)। রবিবার সকালে দিঘল গ্রাম নেতাজি বিদ্যামন্দিরের উল্টো দিকে একটি কাঠের দোকানের মাটির বারান্দায় তাঁর দেহ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পুলিশ তাঁর দেহ কল্যাণী জওহরলাল নেহরু মেমোরিয়াল হাসপাতালে ময়নাতদন্ত করতে পাঠিয়েছে। জেলার পুলিশ সুপার সব্যসাচী রমণ মিশ্র বলেন, “প্রাথমিক ভাবে দেখা গিয়েছে, ওই ব্যক্তির দেহে কোনও আঘাতের চিহ্ন নেই। কী করে ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে, তা পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে না। তাঁর দেহ ময়নাতদন্ত করতে পাঠানো হয়েছে। তাঁর মৃত্যু নিয়ে কেউ কোনও অভিযোগ করেননি।” অখিলবাবুর ভাই জয়প্রকাশ দত্ত বলেন, “দাদা অনেক দিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন। তাঁর সুগার ও উচ্চরক্তচাপ জনিত রোগ ছিল। তাই তাঁকে আমরা কোনও ভারি কাজ করতে দিতাম না।” জয়প্রকাশবাবুর বক্তব্য, “দাদার কোনও শত্রুও ছিল বলে আমাদের জানা নেই।” পুলিশের একাংশের ধারণা, অখিলবাবু আত্মহত্যা করেছেন বলেও প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে না। পুলিশ ও অখিলবাবুর পরিবারের ধারণা, সেই রাতে তিনি কোনওভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। কিন্তু অত রাতে সাহায্যের জন্য কাউকে হাতের কাছে পাননি। জেলা পরিষদের বিরোধী দলনেতা তৃণমূলের চঞ্চল দেবনাথ বলেন, “অখিলবাবু আমাদের দলের কর্মী ছিলেন। অনেকদিন ধরেই চিনি তাঁকে। তাঁর মৃত্যু খুন বা আত্মহত্যার ঘটনা বলে আমার মনে হচ্ছে না।”
ওই স্কুলের প্রধানশিক্ষক শান্তনু মণ্ডল বলেন, “রাতে একাই প্রহরার কাজ করতেন অখিলবাবু। মাস চারেক ধরে তিনি নৈশরক্ষীর কাজ করছেন।” স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ওই এলাকায় স্কুলের সামনে কয়েকটি দোকান ও বাড়ি ঘরদোর থাকলেও রাত দশটার পর থেকে সে ভাবে রাস্তায় আর লোকজন দেখা যায় না। অখিলবাবু সাধারণত সন্ধ্যা সাতটা থেকে ভোর ছ’টা পর্যন্ত নৈশরক্ষীর কাজ করতেন। এই দিন সকালে স্থানীয় বাসিন্দারাই তাঁর দেহ দেখতে পান। সকালে বাড়ি না ফেরায় তাঁর বড় দাদা সুনীল দত্ত খোঁজ করতে এসে জানতে পারেন, ভাই মারা গিয়েছেন।
ওই মাধ্যমিক স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা ১২০০। স্কুলে সিসিটিভি রয়েছে। রয়েছে প্রজেক্টর ব্যবহার করে পড়ানোর ব্যবস্থাও। শান্তনুবাবু বলেন, “আমাদের স্কুলে অনেক দামি যন্ত্রপাতি রয়েছে। তাই নৈশরক্ষী নিয়োগ করা হয়েছিল। অখিলবাবু খুব সজ্জন ব্যক্তিও ছিলেন। তাঁর মৃত্যু খুবই দুঃখজনক ঘটনা।” |